জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিজের কারাজীবনের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, ‘জীবনে ৪২দিন জেলখানায় ছিলাম। যে ওয়ার্ডটিতে ছিলাম তা হলো ‘মেন্টাল ওয়ার্ড’। সম্ভবত আগে পাগলদের এখানে রাখা হতো।’
মঙ্গলবার পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কে কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘সংগ্রামী জীবনগাঁথা’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা জানান অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন ‘আমাদের ধরে প্রথমে লালবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ হলের ছাত্র মাহবুব আহমদ, আব্দুল
আওয়াল, আমি ও ফজলুল হক হলের মনসুর আলী ছিলাম। আমাদের সঙ্গে জেল গেটে দেখা হয় নিরোজ নাগের। সঙ্গে ছিল নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমানের বাবা শামসুজ্জামান ও সেখানকার জামিল নামের একজন শ্রমিক নেতা।’
প্রথমে মেন্টাল ওয়ার্ডে লেখে ছিল জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মেন্টাল ওয়ার্ডে মোট ১২টি কামরা ছিল। আর আমরা সংখ্যায় ছিলাম ৭-৮জন। আমাদের বলা হল আপনারা যেকোনও কামরায় থাকতে পারবেন। তবে প্রতিটি কামরায় ৩ জনের কম থাকা যাবে না। আমাদের দিন কাটছিল।’
কারাগার জীবনের ১২ তম দিন ছিল ১৯৫৫ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি। এই দিনে কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ওইদিন অতিরিক্ত বন্দিদের জায়গা দিতে হিমশিম খাচ্ছিল কারা কর্তৃপক্ষ। তখনই আমাদের বলা হয় আমরা কি এখানেই থাকবো না ওদের সঙ্গে একসঙ্গে থাকবো। তখন আমরা সবাই একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম। এর মাধ্যমে মেন্টাল ওয়ার্ডে কারাভোগ শেষ হলো আমাদের। শুরু হলো নতুন অভিজ্ঞতা।’
কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিনের সভাপতিত্বে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্রসচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, রাজশাহীর সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জার্নির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, প্রদর্শনীর কিউরেটর ইমিরেটাস ড. এ কে আব্দুল মোমেনসহ প্রমূখ।