বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদের কারণে গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি মারা গেছেন। পাঁচ দিন ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন নুসরাত। প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার নির্দেশ দিলেও শারীরিক অবস্থার কারণে তা সম্ভব হচ্ছিল না।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নুসরাতকে মৃত ঘোষণা করেন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন। ফেনীর সোনাগাজীর মেয়ে নুসরাত এ বছর আলিম পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী ছিলেন তিনি। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে ‘শ্লীলতাহানির’ অভিযোগ এনে গত মার্চে সোনাগাজী থানায় একটি মামলা করে নুসরাতের পরিবার।
সেই মামলা তুলে না নেওয়ায় অধ্যক্ষের অনুসারীরা গত শনিবার পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ। অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ফেনী সদর হাসাপাতালে এবং পরে শনিবার রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া নুসরাতের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় সোমবার তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সোমবারই তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকরা নুসরাতের শারীরিক অবস্থা নিয়ে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। বিভিন্ন মেডিকেল রিপোর্ট পাঠানোর পর ভিডিও কনফারেন্সে কথা হয় তাদের। এই অবস্থায় নুসরাতকে না পাঠানোর পক্ষে মত দেন সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা।
শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় দগ্ধ ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রীকে শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে আনা হয়।
দুপুরেও নুসরাতের শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে সামন্ত লাল সেন বলেছিলেন, “সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন ইউনিটের চিকিৎসকদের সাথে কথা হয়েছে আমাদের। রোগীর যে শারীরিক অবস্থা, তাতে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার জন্য ৫ ঘণ্টা এয়ার জার্নি করার মতো অবস্থা তার নাই।”নুসরাত ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে পুরো ঘটনা বর্ণনা করেছেন।