হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্য স্থাপন করা উচিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনায়ও বসবেন বলে জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাতে গণভবনে আল্লামা সফির নেতৃত্বে আলেমদের সাথে এক সভায় প্রধানমন্ত্রী এই কথা বলেন। কওমি মাদ্রাসা সনদের স্বীকৃতি ঘোষণার উদ্দেশ্যে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এসময় গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরানোর ব্যাপারে আলেমদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী তার ওপর ভরসা রাখতে তাদের প্রতি আহ্বান জানান। এই ইস্যুতে মাঠ গরম না করার জন্য তিনি আলেমদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু সেটা নির্মাণ করা হয়ে গেছে, আপনারা ধৈর্য ধরুন, আমরা এটা সরানোর ব্যবস্থা করবো।
এর আগে সভায় আলেমদের যেসব প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন তারা সবাই আদালত প্রাঙ্গণ থেকে থেমিসের ভাস্কর্য সরানোর দাবি জানান। তারা বলেন, এটা আমাদের বাংলাদেশি সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন।
প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে একটি দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়। সুপ্রিম কোর্টে মূলভবনের সামনে ফোয়ারার মধ্যে এটি স্থাপন করা হয়। ভাস্কর্যটির নির্মাতা ভাস্কর মৃণাল হক।
ভাস্কর্যটি একজন দণ্ডায়মান নারীর। যার ডান হাতে তলোয়ার, বাম হাতে দাঁড়িপাল্লা। তলোয়ারটি নিচের দিকে নামানো। দাঁড়িপাল্লা উপর দিক থেকে ধরে থাকা।
ভাস্কর মৃণাল হকে মতে, সারা বিশ্বেই এটি বিচার বিভাগের প্রতীক। তবে অন্যান্য দেশে স্থাপিত ভাস্কর্যর সাথে আমাদের দেশের ভাস্কর্যের একটু পার্থক্য রয়েছে। অন্যান্য দেশে ভাস্কর্যের গায়ে স্কার্ফ পরা থাকলেও এখানে শাড়ি পরানো হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য দেশে পায়ের নিচে সাপ থাকলেও এখানে এটি বাদ দেয়া হয়েছে।
থেমিসের এই ভাস্কর্যটি স্থাপনের পর থেকেই এটাকে ‘মূর্তি’ আখ্যায়িত করে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলো। তাদের দাবি, ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে গ্রিক দেবীর মূর্তি কখনো ন্যায়বিচারের প্রতীক হতে পারে না। তারা এর প্রতিস্থাপন করে কোরআনের ভাস্কর্য বসানোর দাবি জানান।