ঢাকা , শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নায়ক হতে চাননি রিয়াজ

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বাংলা চলচ্চিত্রের সুপারস্টারদের অন্যতম নায়ক রিয়াজ। ১৯৯৬ সালে কোটি ভক্তের প্রাণের নায়ক সালমান শাহ প্রয়াত হলে তার ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হয় রিয়াজকে দিয়ে। স্বপ্নের নায়ক সালমানের মৃত্যুর বছরে তার সঙ্গে জুটি বেঁধে ‘প্রিয়জন নামের একটি ছবিতে অভিনয়ও করেছিলেন রিয়াজ।

আজ এই নায়কের জন্মদিন। ৪৫টি বসন্ত পেরিয়ে ৪৬ বছরে পা দিয়েছেন তিনি। ১৯৭২ সালের এই দিনে ফরিদপুরের কমলাপুরে জন্মগ্রহণ করেন রিয়াজ, যার পিুরো নাম রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ সিদ্দিক। ১৯৯৫ সালে চাচাতো বোন চিত্রনায়িকা ববিতার হাত ধরে চলচ্চিত্র জগতের পথ চেনা।

কিন্তু অভিনয়ে আসার কোনো ইচ্ছাই ছিল না হালের জনপ্রিয় এ নায়কের। ছোটবেলায় তার ইচ্ছা ছিল স্থপতি হবেন। কিন্তু পরে হয়ে যান বৈমানিক। পরিবারের বড়দের উৎসাহে যশোরে বিমানবাহিনীতে ভর্তি পরীক্ষা দেন রিয়াজ। দীর্ঘ প্রশিক্ষণ শেষে যোগদান করেন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে বিমানচালক হিসেবে। কিন্তু শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ১৯৯৩ সালে চাকরিচ্যুত হন তিনি।

চাকরি হারানোর পর বাড়ি ছেড়ে ঢাকা শহরে পাড়ি জমান রিয়াজ। চাচাতো বোন ববিতার সহায়তায় শুরু করেন চলচ্চিত্রে অভিনয়। ১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বাংলার নায়ক’ ছবির মাধ্যমে রুপালি পর্দায় অভিষেক হয় তার। তবে তিনি পরিচিতি পান ব্যবসাসফল ‘প্রাণের চেয়ে প্রিয়’ ছবির মাধ্যমে। এরপর ‘দুই দুয়ারী’ ‘শ্যামল ছায়া’ ‘হাজার বছর ধরে’, ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’, ‘প্রেমের তাজমহল’, ‘মনের মাঝে তুমি’, ‘হৃদয়ের কথা’, ‘দারুচিনি দ্বীপ’, ‘শিরি-ফরহাদ’সহ অনেক ব্যবসাসফল ছবিতে ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।

চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বহু নাটকেও অভিনয় করেছেন রিয়াজ। বিশেষ করে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের অনেক নাটকেই দেখা গেছে তাকে। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বর্তমানে নিয়মিতই তিনি অভিনয় করছেন ছোট পর্দায়। এ ছাড়া প্রযোজক হিসেবেও খ্যাতি আছে রিয়াজের। ২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তার ব্লকবাস্টার ‘হৃদয়ের কথা’ ছবিটি প্রযোজনা করেন তিনি।

চলচ্চিত্রের দুই জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূর ও পূর্ণিমার সঙ্গে তার জুটি দর্শকদের সবচেয়ে বেশি পছন্দের। সালমান শাহ মারা যাওয়ার পর রিয়াজ-শাবনূর ও রিয়াজ-পূর্ণিমা জুটিই চলচ্চিত্র মহলে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে। এ ছাড়া তিনি কাজ করেছেন নায়িকা পপি, শাওন এবং এ প্রজন্মের মম, তিশা, মাহিদের সঙ্গেও।

অভিনয় দক্ষতা দিয়ে তিনবার ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ এবং সাতবার ‘মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার’ ঘরে তুলেছেন রিয়াজ। অভিনয়ের ক্ষেত্রে প্রয়াত অ্যাকশন হিরো জসিমকে জীবনের প্রেরণা মনে করেন তিনি। কারণ, ১৯৯৪ সালে চাচাতো বোন ববিতার সঙ্গে এফডিসিতে এলে নায়ক জসিমই তাকে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং নতুন এ জগতে সাহস জুগিয়েছিলেন।

ব্যক্তিজীবনে ২০০৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর মডেল মুশফিকা তিনাকে বিয়ে করেন রিয়াজ। তিনা ছিলেন ২০০৪ সালের বিনোদন বিচিত্রার ফটো‍সুন্দরী বিজয়ী। বিয়ের প্রায় আট বছর পর ২০১৫ সালের ১ জুন কন্যাসন্তানের বাবা হন নায়ক। ১৩ বছর ধরে সুখেই সংসার করছেন রিয়াজ-তিনা দম্পতি।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

নায়ক হতে চাননি রিয়াজ

আপডেট টাইম : ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বাংলা চলচ্চিত্রের সুপারস্টারদের অন্যতম নায়ক রিয়াজ। ১৯৯৬ সালে কোটি ভক্তের প্রাণের নায়ক সালমান শাহ প্রয়াত হলে তার ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হয় রিয়াজকে দিয়ে। স্বপ্নের নায়ক সালমানের মৃত্যুর বছরে তার সঙ্গে জুটি বেঁধে ‘প্রিয়জন নামের একটি ছবিতে অভিনয়ও করেছিলেন রিয়াজ।

আজ এই নায়কের জন্মদিন। ৪৫টি বসন্ত পেরিয়ে ৪৬ বছরে পা দিয়েছেন তিনি। ১৯৭২ সালের এই দিনে ফরিদপুরের কমলাপুরে জন্মগ্রহণ করেন রিয়াজ, যার পিুরো নাম রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ সিদ্দিক। ১৯৯৫ সালে চাচাতো বোন চিত্রনায়িকা ববিতার হাত ধরে চলচ্চিত্র জগতের পথ চেনা।

কিন্তু অভিনয়ে আসার কোনো ইচ্ছাই ছিল না হালের জনপ্রিয় এ নায়কের। ছোটবেলায় তার ইচ্ছা ছিল স্থপতি হবেন। কিন্তু পরে হয়ে যান বৈমানিক। পরিবারের বড়দের উৎসাহে যশোরে বিমানবাহিনীতে ভর্তি পরীক্ষা দেন রিয়াজ। দীর্ঘ প্রশিক্ষণ শেষে যোগদান করেন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে বিমানচালক হিসেবে। কিন্তু শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ১৯৯৩ সালে চাকরিচ্যুত হন তিনি।

চাকরি হারানোর পর বাড়ি ছেড়ে ঢাকা শহরে পাড়ি জমান রিয়াজ। চাচাতো বোন ববিতার সহায়তায় শুরু করেন চলচ্চিত্রে অভিনয়। ১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বাংলার নায়ক’ ছবির মাধ্যমে রুপালি পর্দায় অভিষেক হয় তার। তবে তিনি পরিচিতি পান ব্যবসাসফল ‘প্রাণের চেয়ে প্রিয়’ ছবির মাধ্যমে। এরপর ‘দুই দুয়ারী’ ‘শ্যামল ছায়া’ ‘হাজার বছর ধরে’, ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’, ‘প্রেমের তাজমহল’, ‘মনের মাঝে তুমি’, ‘হৃদয়ের কথা’, ‘দারুচিনি দ্বীপ’, ‘শিরি-ফরহাদ’সহ অনেক ব্যবসাসফল ছবিতে ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।

চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বহু নাটকেও অভিনয় করেছেন রিয়াজ। বিশেষ করে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের অনেক নাটকেই দেখা গেছে তাকে। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বর্তমানে নিয়মিতই তিনি অভিনয় করছেন ছোট পর্দায়। এ ছাড়া প্রযোজক হিসেবেও খ্যাতি আছে রিয়াজের। ২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তার ব্লকবাস্টার ‘হৃদয়ের কথা’ ছবিটি প্রযোজনা করেন তিনি।

চলচ্চিত্রের দুই জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূর ও পূর্ণিমার সঙ্গে তার জুটি দর্শকদের সবচেয়ে বেশি পছন্দের। সালমান শাহ মারা যাওয়ার পর রিয়াজ-শাবনূর ও রিয়াজ-পূর্ণিমা জুটিই চলচ্চিত্র মহলে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে। এ ছাড়া তিনি কাজ করেছেন নায়িকা পপি, শাওন এবং এ প্রজন্মের মম, তিশা, মাহিদের সঙ্গেও।

অভিনয় দক্ষতা দিয়ে তিনবার ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ এবং সাতবার ‘মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার’ ঘরে তুলেছেন রিয়াজ। অভিনয়ের ক্ষেত্রে প্রয়াত অ্যাকশন হিরো জসিমকে জীবনের প্রেরণা মনে করেন তিনি। কারণ, ১৯৯৪ সালে চাচাতো বোন ববিতার সঙ্গে এফডিসিতে এলে নায়ক জসিমই তাকে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং নতুন এ জগতে সাহস জুগিয়েছিলেন।

ব্যক্তিজীবনে ২০০৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর মডেল মুশফিকা তিনাকে বিয়ে করেন রিয়াজ। তিনা ছিলেন ২০০৪ সালের বিনোদন বিচিত্রার ফটো‍সুন্দরী বিজয়ী। বিয়ের প্রায় আট বছর পর ২০১৫ সালের ১ জুন কন্যাসন্তানের বাবা হন নায়ক। ১৩ বছর ধরে সুখেই সংসার করছেন রিয়াজ-তিনা দম্পতি।