ঢাকা , রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিতর্কের মুখে অবশেষে দেশে ফিরেছেন জনপ্রিয় নায়ক ফেরদৌস

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নিয়ে বিতর্কের মুখে অবশেষে দেশে ফিরেছেন জনপ্রিয় নায়ক ফেরদৌস আহমেদ। ইতোমধ্যে মডেল কোড অব কন্ডাক্ট ভাঙার অভিযোগে ভারতীয় ভিসা বাতিল হয়েছে তার।

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে একটি দলের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে অংশ নেওয়ায় ফেরদৌসের ভিসা বাতিল করে ভারত সরকার। এ জন্য দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। এরপরই মঙ্গলবার রাতে বিমানে ঢাকায় ফেরেন তিনি।

ফেরদৌস ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন রায়গঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী কানহাইয়ালাল আগরওয়ালের পক্ষে। তাতে আপত্তি জানায় ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। নির্বাচন কমিশনের কাছে তারা অভিযোগ জানায়। এরপরই ফেরদৌসের ভিসা বাতিল করে তাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়।

বিজেপি সরকার চেয়েছিল নায়ক ফেরদৌসকে গ্রেপ্তার করা হোক। কিন্তু বাংলাদেশ হাইকমিশনের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে। তার আগেই দেশে ফিরে এসেছেন ফেরদৌস।

কলকাতায় গিয়ে পয়লা বৈশাখের দিনে কানহাইয়ালালের সমর্থনে রোড শো এবং সভা করেন ফেরদৌস। তার জন্য ভোটও চান। এই প্রচার পর্বে তার সঙ্গে ছিলেন কলকাতার দুই তারকা অঙ্কুশ হাজরা ও পায়েল মুখার্জী। সোমবারও করণদিঘী থেকে বেঙ্গল টু বেঙ্গল রোড ধরে ইসলামপুর পর্যন্ত দাঁপিয়ে বেড়ান এই তিন তারকা।

তারপরই বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানায় বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতিমান প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতার কোটাতে ফেরদৌস তাদের দেশে ভোটের প্রচারে নেমেছেন বলে মন্তব্য করে গেরুয়া শিবির। এতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের। যদিও নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধিতে এমন কিছু আছে কি না সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

এছাড়া যে প্রার্থীর পক্ষে ফেরদৌস ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন, সেই কানাইয়ালাল আগরওয়াল নাকি জানেনই না যে বাংলাদেশ থেকে একজন নামকরা অভিনেতা এসে তার সমর্থনে এখানে ওখানে ছুটে বেড়াচ্ছেন, ভোট চাচ্ছেন। গণমাধ্যমের কাছে বিষয়টি তিনি পুরোপুরি অস্বীকার করেন।

অথচ রোববার তার নির্বাচনী এজেন্ট মোশারফ হোসেন বলেছিলেন, ‘কোনো তারকা প্রচারে আসবেন কী আসবেন না সেটা ঠিক হয় রাজ্য থেকে। ফেরদৌস বাংলাদেশের নায়ক হলেও কলকাতায়ও তিনি ভীষণ জনপ্রিয়। ভোটের প্রচারে একটা ভিন্ন স্বাদ দেয়ার জন্যই তাকে ডেকে আনা হয়েছে।’

ফেরদৌসের অংশগ্রহণের পর তীব্র প্রতিবাদ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘তৃণমূল তো বিদেশি তারকা এনে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছে। এ ধরনের ঘটনা এর আগে দেখিনি। কাল হয়তো ইমরান খানকে প্রচারে ডাকবে তৃণমূল।’

তিনি আরও প্রশ্ন তুলেন, ‘এভাবে ভারতের একটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচারে বিদেশি তারকা আসতে পারেন? তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আইন মানেন না। ভোট কম পড়লে রোহিঙ্গাদের ডেকে আনবেন। কাল হয়তো ইমরান খানকে তৃণমূলের প্রচারে ডাকবেন। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাই।’

তবে এর পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন তৃণমূলের নেতা মদন মিত্র। তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অকৃত্রিম বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। তাই এটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে হয়েছে। এর জন্য নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো প্রশ্ন নেই।’

উল্লেখ্য, কানাইয়ালাল আগরওয়ালের আসন রায়গঞ্জে ভোট হবে বৃহস্পতিবার। মঙ্গলবার বিকালে সেখানে শেষ হয়েছে প্রকাশ্য প্রচার।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

বিতর্কের মুখে অবশেষে দেশে ফিরেছেন জনপ্রিয় নায়ক ফেরদৌস

আপডেট টাইম : ০৭:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নিয়ে বিতর্কের মুখে অবশেষে দেশে ফিরেছেন জনপ্রিয় নায়ক ফেরদৌস আহমেদ। ইতোমধ্যে মডেল কোড অব কন্ডাক্ট ভাঙার অভিযোগে ভারতীয় ভিসা বাতিল হয়েছে তার।

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে একটি দলের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে অংশ নেওয়ায় ফেরদৌসের ভিসা বাতিল করে ভারত সরকার। এ জন্য দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। এরপরই মঙ্গলবার রাতে বিমানে ঢাকায় ফেরেন তিনি।

ফেরদৌস ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন রায়গঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী কানহাইয়ালাল আগরওয়ালের পক্ষে। তাতে আপত্তি জানায় ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। নির্বাচন কমিশনের কাছে তারা অভিযোগ জানায়। এরপরই ফেরদৌসের ভিসা বাতিল করে তাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়।

বিজেপি সরকার চেয়েছিল নায়ক ফেরদৌসকে গ্রেপ্তার করা হোক। কিন্তু বাংলাদেশ হাইকমিশনের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে। তার আগেই দেশে ফিরে এসেছেন ফেরদৌস।

কলকাতায় গিয়ে পয়লা বৈশাখের দিনে কানহাইয়ালালের সমর্থনে রোড শো এবং সভা করেন ফেরদৌস। তার জন্য ভোটও চান। এই প্রচার পর্বে তার সঙ্গে ছিলেন কলকাতার দুই তারকা অঙ্কুশ হাজরা ও পায়েল মুখার্জী। সোমবারও করণদিঘী থেকে বেঙ্গল টু বেঙ্গল রোড ধরে ইসলামপুর পর্যন্ত দাঁপিয়ে বেড়ান এই তিন তারকা।

তারপরই বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানায় বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতিমান প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতার কোটাতে ফেরদৌস তাদের দেশে ভোটের প্রচারে নেমেছেন বলে মন্তব্য করে গেরুয়া শিবির। এতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের। যদিও নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধিতে এমন কিছু আছে কি না সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

এছাড়া যে প্রার্থীর পক্ষে ফেরদৌস ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন, সেই কানাইয়ালাল আগরওয়াল নাকি জানেনই না যে বাংলাদেশ থেকে একজন নামকরা অভিনেতা এসে তার সমর্থনে এখানে ওখানে ছুটে বেড়াচ্ছেন, ভোট চাচ্ছেন। গণমাধ্যমের কাছে বিষয়টি তিনি পুরোপুরি অস্বীকার করেন।

অথচ রোববার তার নির্বাচনী এজেন্ট মোশারফ হোসেন বলেছিলেন, ‘কোনো তারকা প্রচারে আসবেন কী আসবেন না সেটা ঠিক হয় রাজ্য থেকে। ফেরদৌস বাংলাদেশের নায়ক হলেও কলকাতায়ও তিনি ভীষণ জনপ্রিয়। ভোটের প্রচারে একটা ভিন্ন স্বাদ দেয়ার জন্যই তাকে ডেকে আনা হয়েছে।’

ফেরদৌসের অংশগ্রহণের পর তীব্র প্রতিবাদ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘তৃণমূল তো বিদেশি তারকা এনে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছে। এ ধরনের ঘটনা এর আগে দেখিনি। কাল হয়তো ইমরান খানকে প্রচারে ডাকবে তৃণমূল।’

তিনি আরও প্রশ্ন তুলেন, ‘এভাবে ভারতের একটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচারে বিদেশি তারকা আসতে পারেন? তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আইন মানেন না। ভোট কম পড়লে রোহিঙ্গাদের ডেকে আনবেন। কাল হয়তো ইমরান খানকে তৃণমূলের প্রচারে ডাকবেন। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাই।’

তবে এর পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন তৃণমূলের নেতা মদন মিত্র। তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অকৃত্রিম বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। তাই এটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে হয়েছে। এর জন্য নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো প্রশ্ন নেই।’

উল্লেখ্য, কানাইয়ালাল আগরওয়ালের আসন রায়গঞ্জে ভোট হবে বৃহস্পতিবার। মঙ্গলবার বিকালে সেখানে শেষ হয়েছে প্রকাশ্য প্রচার।