বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জমজমাট ইলিশের বাজার। শুক্রবার রাজধানীর বাজার ঘুরে ইলিশের প্রচুর সরবরাহ চোখে পড়ল। এই ভরা মৌসুমে সমুদ্র ও নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় দামও ছিল তুলনামূলক কম। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই বাজারে ক্রেতাদের উপচে পরা ভিড় ছিল। এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা বেড়ে গতকাল বিক্রি হয়েছে ১৩০-১৪০ টাকায়। গত সপ্তাহের মতো উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়েছে শীতের আগাম সবজি। তবে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, গরুর মাংসসহ বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নয়াবাজার ও শান্তিনগর কাঁচাবাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সকাল থেকেই ইলিশের বাজারে ব্যাপক ভিড় লক্ষ করা যায়। দাম হাতের নাগালে থাকায় ক্রেতারা হাসিমুখে ইলিশ কিনছেন বেশি বেশি করে। নির্ধারিত বাজার ছাড়াও রাজধানীর আবাসিক এলাকায়, পথে ঘাটে ফেরি করে ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে। কারওয়ান বাজারে এক কেজি ওজনের প্রতি পিস ইলিশ ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আট থেকে নয়শ’ গ্রাম ওজনের প্রতি পিস ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৫০০-৬০০ টাকায়। ছোট আকারের প্রতি পিস ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২০০-২৫০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারের মাছ বিক্রেতা ইকবাল সাংবাদিককে বলেন, পূর্ণিমার জো-তে সমুদ্র থেকে শুরু করে দেশের নদীগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। পরে এসব মাছ ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি ও খুচরা বাজারে। ফলে রাজধানীর বাজারগুলোতেও ইলিশের সরবরাহ তুলনামূলক বেশি। দামও কম, বিক্রিও ভালো হচ্ছে। কথা হয় ইলিশ কিনতে আসা সরকারি কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি সাংবাদিককে বলেন, অনেক দিন পর বাজারে এসে খুব ভালো লাগছে। ঢাকার বাজারে এত ইলিশ অনেক দিন পর দেখলাম। দামও ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে। অনেক দিন পর হাসিমুখে ইলিশ কিনে বাসায় যাচ্ছি। তিনি বলেন, পত্রিকায় পড়লাম আগামী ৭ অক্টোবর থেকে ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে। ইলিশ যাতে প্রতিবেশী দেশে পাচার করে দিতে না পারে সেদিকে তীক্ষ নজর রাখতে হবে।
মাছের বাজার স্বস্তিদায়ক হলেও সবজি বাজারের চিত্র ভিন্ন। শিমের দাম কমলেও গত সপ্তাহের মতো বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা যায় শীতের আগাম সবজি। বাজারভেদে পাকা টমেটো বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে গাজর। ফুলকপি গত সপ্তাহের মতো প্রতি পিস বিক্রি হয়েছে ৫৫-৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা। তবে কিছুটা দাম বেড়েছে শসার। গত সপ্তাহে ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শসা শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা। এ ছাড়া বেগুন বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকা কেজি, উস্তা ৪৫-৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, বরবটি ৫০-৬০ টাকা, চিচিংগা, পটল, ঝিঙা, ধুনদল, কাকরল বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪০ টাকা কেজি। পেঁপে প্রতি কেজি ২০-৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা কেজি। তবে মাসের বেশির ভাগ সময় ধরে ১০০ টাকার উপরে বিক্রি হওয়া শিম শুক্রবার বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬০-৭০ টাকা।
ইলিশের দাম কমায় অন্য মাছের বাজারেও স্বস্তি বিরাজ করছে। বাজারে রুই ও কাতলা বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২৩০-৩০০ টাকায়। বড় আকারের চিংড়ি প্রতি কেজি এক হাজার টাকা, মাঝারি আকারের ৭০০-৭৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ১২০-১৪০ টাকা, কই ১৪০-১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। পাঙ্গাশ ১০০-১২০, নলা ১২০-১৩০ টাকা এবং সরপুঁটি ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এ ছাড়া বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৩০-১৪০ টাকা। আর পাকিস্তানি কক ২৩০-২৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৪০০-৪৫০ টাকা। আর গরুর মাংস প্রতি কেজি ৪৫০-৫০০ টাকা, খাসির মাংস ৭৮০ টাকা, ছাগলের মাংস ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।