বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সৃষ্টিকর্তার সৃষ্ট লীলা খেলায় নিয়তির নির্মম পরিহাসে প্রায় ২০ বৎসর যাবত অসহায়ত্ব মানবেতর জীবন-যাপন করছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার শেরপুর গ্রামের মা-ছেলেরা। ৪ জন পঙ্গুত্ব জীবন নিয়ে বহু কষ্টে দিন কাটাচ্ছে তারা। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সহযোগীতা আহ্বান জানিয়েছেন এই পঙ্গুত্ব পরিবার।
শেরপুর গ্রামের আব্দুল বারিকের স্ত্রী সফুরা খাতুন (৫০) এবং তার তিন পুত্র আবু কালাম (৩৫), রবি ইসলাম (৩২) ও রতন মিয়া (২৬) হামাগুড়ি দিয়ে বাড়ির উঠান থেকে ঘর পর্যন্ত কোনরকম চলাফেরা করতে পারে। সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, চেহেরার রং কালচে বর্ণের, জীর্ণশীর্ণ ও কঙ্কালসার তাদের দেহ।
ঠিকমতো কথা বলতে পারেনা। তাদের একজন বাক শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। পুষ্টি জাতীয় খাবার তো দূরের কথা তিন বেলা দুমুঠো ভাতই জোটেনা ঠিকমত তাদের কপালে। স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের মতো চলাফেরা করার একান্ত ইচ্ছা থাকলেও নেই শাররীক ও অর্থের সামর্থ্য।
অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা করতে না পারার কারণে দিন-দিন দেহ নিস্তেজ ও হাড্ডিসার হয়ে যাচ্ছে। কিভাবে চলছে তাদের এই দুঃসহ জীবন তা জানাতে চাইলে ওই পরিবারের সদস্যরা বলেন, স্থানীয় এক ব্যাক্তির উদ্দ্যোগে বাড়িতে একটি টিনের ভাঙ্গা-ছোড়া দুচালা ঘরে কোনরকম দিন কাটাতো। একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ায় উক্ত ঘরটিতে তাদের ছোট বোন ও তার স্বামী পরিত্যক্ত আছমার ১ ছেলেকে নিয়ে তারা অবস্থান করছে।
আছমা অন্যের বাড়িতে কাজ করে ও পঙ্গুত্ব মা-ভাইদেরকে দেখাশুনা করে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনের ভরসা সফুরার স্বামী আব্দুল বারিক (৬৪)। তিনি দিন মজুরের কাজ করেন, আবার কাজ না পেলে পঙ্গু সন্তানকে নিয়ে ভিক্ষা করে খাবার যোগান।
স্থানীয় লোকজন ও আব্দুল বারিক জানান, তার সন্তানরা বাল্যকালে অন্যদের মতো ভালোই ছিলেন। প্রায় ২০ বৎসর পূর্বে মেঝো সন্তান রবি ইসলামের একধরনের জ্বর হয়েছিল, তখন থেকেই ধীরে ধীরে তার শরীর রুগ্ন ও পঙ্গু হয়ে যায়। সফুরা খাতুন জানান, কবিরাজি সহ বিভিন্ন চিকিৎসা করিয়েও ভালো হয়নি। একের পর এক তার পুত্র আবু কালাম ও রতন মিয়া সহ নিজেও একইভাবে আক্রান্ত হয়ে পঙ্গু হয়ে যান।
ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মহসিন আহম্মদ জানান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন ভুইয়া মিল্টন ও বর্তমান ইউপি সদস্য মাসুদ মিয়ার মাধ্যমে উক্ত পরিবার দুটি পঙ্গু ভাতা কার্ড পেয়েছেন।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আলী আজগর শাহরিয়াদ জানান, উক্ত পরিবারের জন্য একটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তবে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব উদ্দিন মণ্ডল বলেন, বিষয়টি তার নজরে আসেনি, কিন্তু সরকারের দৃষ্টি কামনা সহ সকলের সহযোগীতা পেলে হয়তো পরিবারের কষ্ট লাঘব হবে বলে তারা জানান।