ঢাকা , সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমিই টার্গেট ছিলাম: ফরিদউদ্দিন মাসউদ

প্রতিবারের দেশেরে সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। ১৮২৮ সালে প্রথম জামাতের পর এবারেরটি ১৮৯তম ঈদ জামাত। ১০ বছর ধরে মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ এই ঈদের জামাতে ইমামতি করছেন। অন্যান্য বছরের মত এবছরও শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে নামাজ পড়াতে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ স্টেডিয়ামে পৌঁছান ইমাম ফরিদউদ্দিন মাসউদ।

কিন্তু তিনি ঈদগাহ মাঠে পৌঁছানোর আগেই ঘটে বর্বর ঘটনা। সকাল ৯টার দিকে কিশোরগঞ্জের শোল‍াকিয়া ঈদগাহ ময়দানের কাছে টহলরত পুলিশের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পুলিশের দুই সদস্য, এক হামলাকারী ও ঝর্ণা রানী নামে স্থানীয় এক নারী নিহত হন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।

পুলিশের ওপর হামলার এ ঘটনায় শোলাকিয়া মাঠের জামাতে অংশ নিতে জড়ো হওয়া লাখো মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হলেও যথা সময়ে দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। হামলার ঘটনায় পুলিশের অনুরোধে কিশোরগঞ্জ সার্কিট হাউস থেকে তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন। শোলাকিয়ায় এবার ইমামতি করেন বড় বাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. শোয়েব।

বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ বলেন, শোলাকিয়ায় হামলার টার্গেট সম্ভবত তিনিই ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকেই হুমকিধামকি দেওয়া হচ্ছে। আমি সবসময়ই জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং আমার পুরো ইমেজটাকেই আমি শান্তির জন্য ব্যয় করছি। তাই এটা অসম্ভব নয় যে আমাকে তারা টার্গেট করবে বা করছে। এটা শুনছি যে যারা ধরা পড়েছে একথাটাও তারা উল্লেখ করেছে যে আমি তাদের টার্গেট ছিলাম- আছি।’

মাওলানা মাসউদ জানান, সময় বাঁচাতে প্রতিবছরের মত এবারেও ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে কিশোরগঞ্জ গিয়েছিলেন তিনি। হেলিকপ্টার থেকে কিশোরগঞ্জ স্টেডিয়ামে নামার সময় তিনি একটা আওয়াজ শুনতে পান, যেটাকে তিনি প্রথমে তেমন আমলে নেন নি। সঙ্গে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা তখন তাকে জানিয়েছিলেন সেখানে বোমা নিক্ষেপের একটা ঘটনা ঘটেছে। পরে তাকে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জেলার সার্কিট হাউসে চলে যায়। সার্কিট হাউসে যাওয়ার পর তিনি জানতে পারেন পুলিশের টহল বাহিনীর ওপর হামলা হয়েছে এবং পুলিশ মারা গেছে। এরপর নিরাপত্তা কর্মীরা শোলাকিয়ার জামাতে তাকে না যাওয়ার পরামর্শ দেন ।

মাওলানা মাসউদ বলেন, ‘ওরা জনমনে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চায়। ওরা বিলক্ষণ জানে, এভাবে সরকার বা সমাজ পরিবর্তন হবে না। তাদের আতঙ্ক সৃষ্টির এই কৌশল নেওয়ার কারণ হল জনগণ যখন আতঙ্কিত হয়ে যায়, তখন আতঙ্কিত মানুষের প্রতিরোধ শক্তি কমে যায়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

আমিই টার্গেট ছিলাম: ফরিদউদ্দিন মাসউদ

আপডেট টাইম : ১২:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ জুলাই ২০১৬

প্রতিবারের দেশেরে সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। ১৮২৮ সালে প্রথম জামাতের পর এবারেরটি ১৮৯তম ঈদ জামাত। ১০ বছর ধরে মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ এই ঈদের জামাতে ইমামতি করছেন। অন্যান্য বছরের মত এবছরও শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে নামাজ পড়াতে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ স্টেডিয়ামে পৌঁছান ইমাম ফরিদউদ্দিন মাসউদ।

কিন্তু তিনি ঈদগাহ মাঠে পৌঁছানোর আগেই ঘটে বর্বর ঘটনা। সকাল ৯টার দিকে কিশোরগঞ্জের শোল‍াকিয়া ঈদগাহ ময়দানের কাছে টহলরত পুলিশের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পুলিশের দুই সদস্য, এক হামলাকারী ও ঝর্ণা রানী নামে স্থানীয় এক নারী নিহত হন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।

পুলিশের ওপর হামলার এ ঘটনায় শোলাকিয়া মাঠের জামাতে অংশ নিতে জড়ো হওয়া লাখো মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হলেও যথা সময়ে দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। হামলার ঘটনায় পুলিশের অনুরোধে কিশোরগঞ্জ সার্কিট হাউস থেকে তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন। শোলাকিয়ায় এবার ইমামতি করেন বড় বাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. শোয়েব।

বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ বলেন, শোলাকিয়ায় হামলার টার্গেট সম্ভবত তিনিই ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকেই হুমকিধামকি দেওয়া হচ্ছে। আমি সবসময়ই জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং আমার পুরো ইমেজটাকেই আমি শান্তির জন্য ব্যয় করছি। তাই এটা অসম্ভব নয় যে আমাকে তারা টার্গেট করবে বা করছে। এটা শুনছি যে যারা ধরা পড়েছে একথাটাও তারা উল্লেখ করেছে যে আমি তাদের টার্গেট ছিলাম- আছি।’

মাওলানা মাসউদ জানান, সময় বাঁচাতে প্রতিবছরের মত এবারেও ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে কিশোরগঞ্জ গিয়েছিলেন তিনি। হেলিকপ্টার থেকে কিশোরগঞ্জ স্টেডিয়ামে নামার সময় তিনি একটা আওয়াজ শুনতে পান, যেটাকে তিনি প্রথমে তেমন আমলে নেন নি। সঙ্গে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা তখন তাকে জানিয়েছিলেন সেখানে বোমা নিক্ষেপের একটা ঘটনা ঘটেছে। পরে তাকে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জেলার সার্কিট হাউসে চলে যায়। সার্কিট হাউসে যাওয়ার পর তিনি জানতে পারেন পুলিশের টহল বাহিনীর ওপর হামলা হয়েছে এবং পুলিশ মারা গেছে। এরপর নিরাপত্তা কর্মীরা শোলাকিয়ার জামাতে তাকে না যাওয়ার পরামর্শ দেন ।

মাওলানা মাসউদ বলেন, ‘ওরা জনমনে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চায়। ওরা বিলক্ষণ জানে, এভাবে সরকার বা সমাজ পরিবর্তন হবে না। তাদের আতঙ্ক সৃষ্টির এই কৌশল নেওয়ার কারণ হল জনগণ যখন আতঙ্কিত হয়ে যায়, তখন আতঙ্কিত মানুষের প্রতিরোধ শক্তি কমে যায়।