নিখোঁজ সংবাদ পড়ে মুখ খুললেন ডা. তানিয়া তাজরিন লায়লা। পঞ্চগড়ের চিকিৎসক ডা. তানিয়া তাজরিন লায়লা ৬ বছর ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় নিখোঁজ সংবাদ প্রকাশিত হয়।
দীর্ঘ অনুপস্থিতি থাকার কারণে স্থানীয়দের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ জঙ্গি সংশ্লিষ্টতারও সন্দেহ করেছেন।
তবে তানিয়া নিখোঁজ নন। তিনি জঙ্গি দলেও যোগ দেননি। ৬ বছরের বিভ্রান্তির অবসান ঘটিয়ে মঙ্গলবার একটি গণমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছেন তিনি।
পঞ্চগড়ের কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও ডা. তানিয়া পরিবারের সঙ্গে রাজধানী ঢাকাতেই রয়েছেন। চাকরি করছেন বেসরকারি একটি হাসপাতালে।
মঙ্গলবার তানিয়া জানান, তিনি নিখোঁজ নন। তার একটু ভুলের কারণে এ বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ১ জুলাই মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগদান করেন ডা. তানিয়া তাজরিন লায়লা।
পরে তাকে উপজেলার ঝলইশালশিরি ইউনিয়ন
উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে বদলি করা হয়। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক বছর কর্মরত থাকার পর ২০১১ সালের ১০ জুলাই ছুটি না নিয়েই কর্মস্থল ত্যাগ করেন তিনি।
এরপর আর সেখানে ফিরে যাননি। ৬ বছরের অনুপস্থিতেতে বেতন-ভাতাও তোলেননি তিনি।
এর আগে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. এম.আর রেজা ডা. তানিয়া তাজরিন লায়লার অনুপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কর্মস্থলে এতদিন অনুপস্থিত থাকায় তাকে নিয়ে সন্দেহ ঘনীভূত হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগ থেকেও এ বিষয়ে কিছু তথ্য পাওয়া জায়নি।
ডা. তানিয়ার বাবা আবদুল লতিফ নিজেও একজন চিকিৎসক। তিনি সৌদি আরবে রয়েছেন। চার বোন, এক ভাইয়ের সংসারে তানিয়া সবার বড়।
তার স্বামী বেসরকারি একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা। তাহিয়াত নামে তিন বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে তাদের।
তানিয়ার মা মাকসুদা খাতুন বলেছেন, তানিয়া স্বামীর সঙ্গে ধানমণ্ডিতে থাকে। নাতনিকে প্রায়ই তার কাছে রেখে কাজে যায়। সে গ্রিনরোডের গ্রিনলাইফ হাসপাতালে কাজ করে।
তিনি বলেন, সে সংসার করছে, নিয়মিত হাসপাতালে যাচ্ছে ডিউটিতে। তাকে নিয়ে কী করে নিখোঁজ সংবাদ প্রকাশিত হতে পারে!
ডা. তানিয়া বলেন, মানুষ মাত্রই ভুল করে। আমিও মানুষ। আমার একটাই ভুল হয়েছে। আমি আমার পদত্যাগপত্র দেইনি। আমার রিজাইন লেটার (পদত্যাগপত্র) দেয়া উচিত ছিল। খুব শিগগিরই পদত্যাগপত্র পৌঁছে যাবে সংশ্লিষ্ট স্থানে।’
কয়েক দফা চিঠি দেয়ার প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি আসলে বুঝতে পারিনি। ভেবেছি, জবাব না দিলে এমনিতেই পদত্যাগের বিষয়টি সুরাহা হয়ে যাবে। আমার জায়গায় অন্য কেউ যোগদান করবে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ করে তানিয়া বলেন, যারা আমার নিখোঁজের সংবাদ ছেপেছেন, তারা তো আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতো। আমি একটি পরিবারে আছি। স্বামী-সন্তান রয়েছে। চাকরিও করছি। আমি নিখোঁজ নই, আমি দিব্যি আছি।