খালেদাকে রাজনীতি থেকে সরাতে নীলনকশা করছে ক্ষমতাসীনরা

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‌‘আমাকে রাজনীতি থেকে সরাতে এবং নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে নীলনকশা করছে ক্ষমতাসীনরা। সরকারের উচ্চমহলের তৎপরতায় এটা প্রতীয়মান। আর এসব কারণে দেশবাসীর মনে গুরুতর সন্দেহ রয়েছে আমার বিরুদ্ধে মামলাগুলোর ন্যায় বিচার হবে কিনা।’

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) পুরান ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ৫নং বিশেষ জজ আখতারুজ্জামানের আদালত হাজির হয়ে তিনি অসমাপ্ত বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এদিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে দেওয়া বক্তব্যের দিন ধার্য ছিল।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘শেখ হাসিনার হাতে জাদুর কাঠি আছে। সেই কাঠির মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল মামলা সরকারে আসার পর খারিজ হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে জাদুর কাঠি নেই। তাই আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা রকেটের গতিতে চলছে। যেন পিছন দিক থেকে কেউ তাড়া করছে।’

বিএনপি প্রধান বলেন, দেশকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করার নিরলস প্রয়াসে কখনো বিরতি দেইনি।…জনগণের মৌলিক মানবিক অধিকার, বিচার বিভাগ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করেছি।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আত্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে আমি এসব কথা বলছি না। আমার এই অবস্থান, ভূমিকা ও অবসানের বিনিময়ে বাড়তি কোন সুবিধা বা মর্যাদা দাবি করার কোন অভিপ্রায়ও আমার নেই।’

আদালতে কাছে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘সকল প্রভাবের ঊর্ধে থেকে ন্যায় বিচার করবে।’ এর আগে খালেদা জিয়া দুই দফা আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন।

ওই দুই দুর্নীতি মামলায় অন্তর্বর্তীজামিনে থাকা খালেদা জিয়া তার আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে স্থায়ী জামিন প্রার্থনা করেন। খালেদা জিয়ার পক্ষে এ জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী জয়নাল আবেদীন।

দুর্নীতির এই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে ১৯ অক্টোবর আদালতে আত্মসমপর্ণ করে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান খালেদা জিয়া।

এর আগে বেলা ১১টা ২৮ মিনিটে আদালতে পৌঁছান খালেদা জিয়া। সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে তিনি গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে যাত্রা শুরু করেন আদালতের উদ্দেশ্যে।
গত ২৬ অক্টোবর পুরান ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ৫নং বিশেষ জজ আখতারুজ্জামানের আদালত হাজিরার এ দিন ধার্য করেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক।

২০১০ সালের ৫ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-আর রশিদ।

২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন— মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল (ইকোনো কামাল), ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর