আওয়ামী লীগে একাধিক প্রার্থী বিএনপি বিভক্ত

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল। নিজেদের সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাই ও মাঠ জরিপও শুরু করেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এরই মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া, শুভেচ্ছা বিনিময়, কাপড় বিতরণ, বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ এবং সামাজিক অনুষ্ঠান

অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তাদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী জনসংযোগ ও পোস্টার ফেস্টুন লাগিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আর্কষণ করতে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন।

নেয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং সোনাইমুড়ি উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে নোয়াখালী-২ আসন গঠিত। এ আসনটি বিএনপির দুর্গ। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী বেঙ্গল গ্রুপ ও আরটিভির চেয়ারম্যান আলহাজ মোরশেদ আলম জয়ী হন।

এ আসনে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধও চলছে দীর্ঘদিন থেকে। অন্যদিকে এ আসন টানা ৫ বার বিএনপির দখলে থাকলেও এখানে বিএনপির মধ্যেও চলছে দুইটি ধারা। এ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী বর্তমান এমপি বেঙ্গল গ্রুপ ও আরটিভি’র চেয়ারম্যান আলহাজ মোরশেদ আলম, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সেক্রেটারি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ এফসিএ, সানজী গ্রুপের চেয়ারম্যান ও মেঘনা ব্যাংকের পরিচালক লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক, সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ জাফর আহম্মদ চৌধুরী, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও তমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক-এর নাম আলোচনায় রয়েছে।

বর্তমান এমপি সেনবাগ-সোনাইমুড়িতে দলীয় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন। তার আমলে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে। তবে সেনবাগের সঙ্গে উপজেলা সদরের সংযোগ স্থাপনকারী সেনবাগ-সোনাইমুড়ি সড়কটির উন্নয়ন না হওয়ায় তিনি কিছুটা বেকায়দায় রয়েছেন। তবে নেতা-কর্মীরা তার ওপর সন্তুষ্ট। অন্যদিকে ২০০৮ সালে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ এফসিএ।

এর পর থেকে তিনি সব সময় ব্যক্তিগত ভাবে নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা ও সেনবাগে স্কুল, কলেজ, মাদরাসায় বিনামূল্যে কম্পিউটার, প্রজেক্টর বিতরণ এবং বেকার শিক্ষিত যুবকদের চাকরির ব্যবস্থা করে প্রশংসিত হয়েছেন। অপরদিকে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শিল্পপতি লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে একটি সু-সম্পর্ক তৈরি করেছেন। তিনি এলাকায় গরিব ও অসহায় মানুষের মাঝে নিজ অর্থে বাড়ি-ঘর নির্মাণ ও আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা এবং মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।

এ ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ জাফর আহম্মদ চৌধুরীও এবার মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি শিক্ষা বিস্তারে স্কুল-কলেজ, শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে ও দান-অনুদান দিয়ে এলাকার লোকজনের পাশে রয়েছেন। অপরদিকে আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি তমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক। এলাকার দুস্থ, গরিব ও অসহায়দের মাঝে শাড়ি বিতরণ করে এবং সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন ইউনিয়নে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে আলোচিত হয়েছেন।

অপরদিকে, এখানে বিএনপিতেও দলীয় কোন্দল চলছে। এ আসন থেকে টানা ৫বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও বর্তমানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুকের সঙ্গে উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে ত্যাগী নেতাদের দ্বন্দ্ব চলছে। তিনি নিজ কন্যা এবং ভাতিজাকে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান দেয়ায় এ কোন্দল সৃষ্টি হয়। এ ছাড়াও সেনবাগ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ কাজী মফিজুর রহমান মনোনয়ন প্রত্যাশী।

এ ছাড়া বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, সংযুক্ত আরব আমিরাত স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন মানিকের নামও বিএনপির তালিকায় রয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইবেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান, জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও এস.এ গ্রুপের চেয়ারম্যান সালাহ্‌ উদ্দিন আহমেদ, জেলা জাতীয় পার্টির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সেনবাগ উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক হাসান মঞ্জুর। এখানে জাসদ (রব) থেকে নির্বাচন করবেন রফিকুল ইসলাম।

জাসদ (ইনু) থেকে জুয়েল আহমদ ও মনির আহম্মদ মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ আসনে জামায়াতে ইসালামীর ভোট ব্যাংক রয়েছে। নির্বাচনের আগে বিএনপির সঙ্গে কোন বুঝাপড়া না হলে তারাও স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করাবেন বলে জনশ্রুতি আছে। এ ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হচ্ছেন- কেন্দ্রীয় নেতা খলিলুর রহমান ও সেনবাগ উপজেলা সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ।

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর