ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আইসিটি আইনের মামলায় কুষ্টিয়ার দুই সাংবাদিক কারাগারে

কুষ্টিয়ায় আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় দায়ের করা মামলায় দুই সাংবাদিকের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়ায় ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক এফ,এম মেজবাউল হক এ আদেশ দেন। কারাগারে পাঠানো দুই সাংবাদিক হলেন বাংলাভিশন, বিডিনিউজ২৪ ও বণিক বার্তার কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি এবং কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের নির্বাচিত দপ্তর সম্পাদক হাসান আলী ও স্থানীয় কুষ্টিয়া দর্পণ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সদস্য আসলাম আলী।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ৩০ মার্চ দুপুরে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের এসআই আব্দুল আজিজ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অফিসে কর্মরত অবস্থায় যমুনা টেলিভিশন ও দৈনিক মানবকন্ঠের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি মওদুদ রানা, বাংলা ভিশন-বণিক বার্তা ও বিডি নিউজ টয়েন্টি ফোর ডটকম’র কুষ্টিয়া প্রতিনিধি হাসান আলী এবং কুষ্টিয়া স্থানীয় দৈনিক কুষ্টিয়া দর্পণ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসলাম আলীকে থানায় নিয়ে এসে প্রায় দুই ঘন্টারও বেশি সময় আটক করে রাখে। পরবর্তীতে আটক তিন গণমাধ্যম কর্মীকে পুলিশ ছেড়ে দেয়। ছেড়ে দেওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা গ্রহণ করা হয়।

পুলিশের ভাষ্য, ফেসবুকে হাসিবুর রহমান রিজু নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য পোস্ট করা হয়। রিজুর দায়ের করা মামলায় গ্রেফতারকৃত চায়ের দোকানের কর্মচারী মিরাজুল ইসলাম মিরাজের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাংবাদিকদের এই মামলার আসামী করা হয়েছে।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২৯ মার্চ সুলতান ইসলাম নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে হাসিবুর রহমান রিজুর চরিত্রহরণসহ মানহানি ও আপত্তিকর কথা লিখে পোষ্ট করা হয়। ৩০ মার্চ দুপুরে মিরাজ আলী নামে এক ব্যক্তি তার আইডি থেকে ওই লেখাটি রিজুর আইডির সাথে ট্যাগ ও শেয়ার করে। ওইদিন দুপুরেই মিরাজকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায় সাংবাদিক হাসান আলী ও আসলাম তার কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে হাসান আলী তার ব্যবহৃত ফেসবুকের ফেক আইডি সুলতান ইসলামের পোষ্ট করা আপত্তিকর মিথ্যা এবং চরিত্রহরণ করা লেখাটি ট্যাগ করে।

কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মজিবুল শেখ জানান, মামলার বাদীর বিরুদ্ধে সুলতান ইসলাম নামের আইডি থেকে আপত্তিকর লেখা পোষ্ট করা হয়। ওই আইডির বিষয়ে তদন্ত না করেই প্রমাণ ছাড়াই গণমাধ্যম কর্মীদের স্পর্শকাতর এই মামলার আসামী করা হয়েছে। এ মামলায় গত ১১ এপ্রিল হাইকোর্ট থেকে সাংবাদিক হাসান আলী ও আসলাম আলী চার সপ্তাহের অন্ত:বর্তীকালীন জামিন নেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হলে মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিনের প্রার্থনা জানালে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক এফ,এম মেজবাউল হক জামিন না মঞ্জুর করে দুই সাংবাদিককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এদিকে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে অবিলম্বে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে তিন গণমাধ্যমকর্মীকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

আইসিটি আইনের মামলায় কুষ্টিয়ার দুই সাংবাদিক কারাগারে

আপডেট টাইম : ০১:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মে ২০১৭

কুষ্টিয়ায় আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় দায়ের করা মামলায় দুই সাংবাদিকের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়ায় ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক এফ,এম মেজবাউল হক এ আদেশ দেন। কারাগারে পাঠানো দুই সাংবাদিক হলেন বাংলাভিশন, বিডিনিউজ২৪ ও বণিক বার্তার কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি এবং কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের নির্বাচিত দপ্তর সম্পাদক হাসান আলী ও স্থানীয় কুষ্টিয়া দর্পণ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সদস্য আসলাম আলী।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ৩০ মার্চ দুপুরে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের এসআই আব্দুল আজিজ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অফিসে কর্মরত অবস্থায় যমুনা টেলিভিশন ও দৈনিক মানবকন্ঠের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি মওদুদ রানা, বাংলা ভিশন-বণিক বার্তা ও বিডি নিউজ টয়েন্টি ফোর ডটকম’র কুষ্টিয়া প্রতিনিধি হাসান আলী এবং কুষ্টিয়া স্থানীয় দৈনিক কুষ্টিয়া দর্পণ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসলাম আলীকে থানায় নিয়ে এসে প্রায় দুই ঘন্টারও বেশি সময় আটক করে রাখে। পরবর্তীতে আটক তিন গণমাধ্যম কর্মীকে পুলিশ ছেড়ে দেয়। ছেড়ে দেওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা গ্রহণ করা হয়।

পুলিশের ভাষ্য, ফেসবুকে হাসিবুর রহমান রিজু নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য পোস্ট করা হয়। রিজুর দায়ের করা মামলায় গ্রেফতারকৃত চায়ের দোকানের কর্মচারী মিরাজুল ইসলাম মিরাজের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাংবাদিকদের এই মামলার আসামী করা হয়েছে।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২৯ মার্চ সুলতান ইসলাম নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে হাসিবুর রহমান রিজুর চরিত্রহরণসহ মানহানি ও আপত্তিকর কথা লিখে পোষ্ট করা হয়। ৩০ মার্চ দুপুরে মিরাজ আলী নামে এক ব্যক্তি তার আইডি থেকে ওই লেখাটি রিজুর আইডির সাথে ট্যাগ ও শেয়ার করে। ওইদিন দুপুরেই মিরাজকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায় সাংবাদিক হাসান আলী ও আসলাম তার কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে হাসান আলী তার ব্যবহৃত ফেসবুকের ফেক আইডি সুলতান ইসলামের পোষ্ট করা আপত্তিকর মিথ্যা এবং চরিত্রহরণ করা লেখাটি ট্যাগ করে।

কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মজিবুল শেখ জানান, মামলার বাদীর বিরুদ্ধে সুলতান ইসলাম নামের আইডি থেকে আপত্তিকর লেখা পোষ্ট করা হয়। ওই আইডির বিষয়ে তদন্ত না করেই প্রমাণ ছাড়াই গণমাধ্যম কর্মীদের স্পর্শকাতর এই মামলার আসামী করা হয়েছে। এ মামলায় গত ১১ এপ্রিল হাইকোর্ট থেকে সাংবাদিক হাসান আলী ও আসলাম আলী চার সপ্তাহের অন্ত:বর্তীকালীন জামিন নেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হলে মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিনের প্রার্থনা জানালে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক এফ,এম মেজবাউল হক জামিন না মঞ্জুর করে দুই সাংবাদিককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এদিকে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে অবিলম্বে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে তিন গণমাধ্যমকর্মীকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।