বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ মানুষের জীবনে যে ঘটনা সুনিশ্চিত ঘটবে, তাহলো ‘মৃত্যু’। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের একাধিক আয়াতে বিষয়টি এভাবে নিশ্চিত করেছেন যে, ‘প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে’।
তবে মৃত্যুর আগে যে বিষয়টি মানুষের জন্য আবশ্যক। যে বিষয়ে মহান আল্লাহ বান্দাকে গুরুত্বের সঙ্গে সতর্ক করেছেন, তাহলো-
‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১০২)
অতপর নির্ধারিত সময়ে মানুষের মৃত্যুর পর জীবিতদের উপর বেশ কিছু কাজ আবশ্যক হয়ে পড়ে। যা পালন করা জরুরি। মৃত্যু পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ করণীয় বিষয়গুলো হলো-
– মৃত্যুর সংবাদ শোনার সঙ্গে সঙ্গে বিপদেও মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে এ দোয়া পড়া এবং ধৈর্যধারণ করা-
إِنَّا لِلّهِ وَإِنَّـا إِلَيْهِ رَاجِعونَ
অর্থ : ‘ইন্না ল্লিাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।’ অর্থাৎ নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই কাছে ফিরে যাবো।
– দেরি না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মৃতব্যক্তির গোসল, কাফন, জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করা।
– মৃতব্যক্তির জন্য দোয়া করা।
– মৃতব্যক্তির জন্য দান-সাদকা করা।
– মৃতব্যক্তি সামথ্যবান হলে আর জীবিত অবস্থায় হজ বা ওমরাহ পালন না করলে তার পক্ষ থেকে বদলি হজ বা ওমরাহ সম্পন্ন করা।
– মৃতব্যক্তির ঋণ, ওসিয়ত, মানত বা কসমের কাফফারা ইত্যাদি বাকি থাকলে তা পূরণ করা।
– মৃতব্যক্তির মানতের কোনো রোজা থেকে থাকলে তা পূরণ করা। আর যদি ফরজ রোজা বাকি থাকে তবে প্রত্যেক রোজার বিনিময়ে একজন মিসকিনকে খাদ্য দেয়া।
– মৃতব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পদ ইসলামি শরিয়তের আলোকে উত্তরাধিকার নারী-পুরুষের মাঝে বণ্টন করা।
– নারীর জন্য স্বামী বা নিকটাত্মীয়দের মৃত্যুতে শোক পালন করা।
বিশেষে করে
প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের উচিত, নিজেদের মৃত্যুর প্রস্তুতি গ্রহণ করা। কুরআনের সে নির্দেশনার প্রতি গভীর মনোনিবেশ করা জরুরি। আল্লাহ তাআলা বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلاَ تَمُوتُنَّ إِلاَّ وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ
‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১০২)
মুমিন মুসলমানের জন্য মুক্তি ধর্ম ইসলাম। ইসলামের উপর থাকার এবং মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করার বিষয়ে প্রায় সব নবি-রাসুলগণই তাদের সন্তানদের নসিহত করেছেন। অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা এ বিষয়টি তুলে ধরেন এভাবে-
وَوَصَّى بِهَا إِبْرَاهِيمُ بَنِيهِ وَيَعْقُوبُ يَا بَنِيَّ إِنَّ اللّهَ اصْطَفَى لَكُمُ الدِّينَ فَلاَ تَمُوتُنَّ إَلاَّ وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ
‘এরই অসিয়ত করেছেন ইবরাহিম তার সন্তানদের এবং ইয়াকুবও যে- হে আমার সন্তানগণ! নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের জন্য এ ধর্মকে (ইসলাম) মনোনীত করেছেন। কাজেই তোমরা মুসলমান না হয়ে কখনও মৃত্যুবরণ করো না।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৩২)
মুমিন মুসলমানে উচিত, আল্লাহর নির্দেশাবলী মেনে মুসলমান হয়ে মৃত্যুবরণ করা। কুরআনের নির্দেশ পালনে মুসলমান হতে পারলেই পরকালের মুক্তি সম্ভব। আর মৃত্যুর পরপর উল্লেখিত বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্বারোপ করা জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সে সব জীবিত মানুষকে তাদের মৃত নিকটাত্মীয়দের প্রতি করণীয়গুলো যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।