বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, গ্রান্ট ফ্লাওয়ার, হিথ স্ট্রিকরা যার স্বাদ পাননি। সেটিই করে দেখালেন হালের গ্রায়েম ক্রেমার, শন অরভিন, সলোমন মিরে, সিকান্দার রাজারা। যে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের ‘শেষ’ দেখে ফেলেছিল অনেকে, তারাই এখন শ্রীলঙ্কা থেকে ওয়ানডে সিরিজ জয় করে নিল।
লঙ্কানদের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জয় করে নিয়েছে ক্রেমার বাহিনী।
হাম্বানটোটায় সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে প্রথমে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ হয় ৮ উইকেটে ২০৩ রানে। জিম্বাবুয়ের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ২০৪ রানের। ৩৮.১ ওভারেই ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌছে যায় জিম্বাবুয়ে। মাসাকাদজা ৭৩, মিরে ৪৩ ও মাসাকান্দা ৩৭ রান করেন। লঙ্কানদের হয়ে ধানাঞ্জায়া ৪টি ও মালিঙ্গা ২টি উইকেট পেয়েছেন।
ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন সিকান্দার রাজা ও প্লেয়ার অব দ্যা সিরিজ হয়েছেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা।
আইসিসির ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ডের পেছনে চলে যাওয়া জিম্বাবুয়ের জন্য এই জয় খুব বড় এক পাওয়া। ভবিষ্যতে জিম্বাবুয়ের জন্য ক্রিকেটের ঘুরে দাঁড়ানোর টনিক হিসেবেই কাজ করবে এই সিরিজ জয়। একসময়ের উদীয়মান শক্তি জিম্বাবুয়ে উন্নতির বদলে গত ১২ বছরে পরিণত হয়েছে ক্ষয়িষ্ণু এক শক্তিতে। রবার্ট মুগাবের স্বৈরাচারী শাসনে সংখ্যালঘু শ্বেতাঙ্গরা কোণঠাসা হয়ে পড়ার বড় প্রভাব পড়েছে ক্রিকেটের ওপর। অথচ নিজেদের ক্রিকেটীয় শক্তির প্রমাণ দিয়েই ১৯৯২ সালে নবম দেশ হিসেবে টেস্ট মর্যাদা পেয়েছিল তারা।
গোটা নব্বইয়ের দশকে ক্রিকেটের বড় শক্তিগুলোর পাশাপাশি জিম্বাবুয়ে রেখেছে নিজেদের উন্নতির প্রমাণ। কিন্তু ২০০৪ সালের পর জিম্বাবুয়ে সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে শ্বেতাঙ্গ অনেক ক্রিকেটার অকালে অবসর নিয়ে নেন। প্রতিবাদ জানিয়ে রোষের মুখে পড়ে দেশ ছাড়েন বেশ কজন কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটারও। এসবেরই পরিণতি র্যাঙ্কিংয়ের ১২ নম্বর স্থানটি। মাত্র কয়েক মাস আগে নিজেদের মাটিতে আফগানিস্তানের কাছে টানা সিরিজ হেরেছে তারা। জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের শেষকৃত্যটাই যেন বাকি ছিল। অথচ সেখান থেকে শ্রীলঙ্কায় কি দারুণভাবেই না ঘুরে দাঁড়াল ক্রেমার বাহিনী।