চাহিদা বাড়ায় ও দাম ভালো পাওয়ায় যশোরের শার্শা উপজেলায় সরিষার আবাদ বেড়েছে। সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে মাঠের পর মাঠ। ভালো ফলনেরও আশা করছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, শার্শা উপজেলায় গতবছর চার হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছিল। এবছর সাত হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উচ্চ ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। গতবছর স্থানীয় বাজারে সরিষার ভালো দাম পাওয়ায় এবার উপজেলার ৯০০ কৃষক সরিষা চাষ করেছেন।
কৃষকরা বলছেন, ভোজ্যতেল হিসেবে সরিষার তেলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য সরিষা আবাদে ঝুঁকছেন তারা।
উপজেলার বিভিন্ন সরিষাক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, মাঠে যেন কেউ সবুজের গায়ে হলুদের আল্পনা দিয়ে রাঙিয়ে দিয়েছে। হলুদ ফুলে ভরে গেছে পুরো মাঠ। দিগন্তজুড়ে শুধু হলুদের সমারোহ। ফুলে ফুলে মধু আহরণে ব্যস্ত মৌমাছিরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শার্শা, বেনাপোল, পুটখালি, বাহাদুরপুর, নিজামপুর, ডিহি, লক্ষণপুরসহ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের কৃষকরা পাঁচ থেকে ছয় বিঘা করে অধিক ফলনশীল জাতের সরিষা চাষ করেছেন।
এবছর দুই বিঘা জমিতে বারি-১৪ ও বিনা-৯/১০ জাতের সরিষা চাষ করেছেন উপজেলার শ্যামলাগাছী গ্রামের কৃষক হোসেন আলী।
তিনি বলেন, প্রতি বিঘা সরিষা চাষে খরচ হয়েছে প্রায় চার হাজার টাকা। বাজারেও চাহিদা ভালো থাকে এবং দাম ভালো পাওয়া যায়। আশা করছি, এবার বাম্পার ফলন হবে।
বালুন্ডা গ্রামের কৃষক আবু তাহের বলেন, সরিষার চাহিদা রয়েছে। চাষে ক্ষতির সম্ভাবনাও কম। এজন্য প্রতিবছর সরিষার আবাদ করি। এবারও দাম ভালো পাওয়া যাবে আশা করছি। উপযুক্ত দাম পেলে আগামী বছরও সরিষা চাষ করবো।
বেনাপোলের নারায়ণপুর এলাকার কৃষক জাবির হোসেন বলেন, বারি-১৪ জাতের সরিষার গাছ লম্বা হওয়ায় এর পাতা মাটিতে ঝরে পড়ে জৈবসারের কাজ করে। এ জাতের সরিষা আবাদের পর একই জমিতে বোরো আবাদে সারের পরিমাণও কম লাগে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে এবার দুই বিঘা জমিতে উন্নত জাতের সরিষার আবাদ করেছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ কুমার মন্ডল বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় সাড়ে চার হাজার কৃষককে সরিষা চাষে সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। ভোজ্যতেলের আমদানি কমাতে সরকার তিন বছর মেয়াদি একটি মহাপরিকল্পনা নিয়েছে। এতে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে সরকারি প্রণোদনা দিয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।