দেশের ব্যাংকগুলো কৃষি খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। আবার কৃষি খাতে ঋণ খেলাপি হওয়ার প্রবণতাও কম। এসব কারণে সামগ্রিকভাবে ঋণ বিতরণ বাড়ছে কৃষি খাতে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) কৃষি ঋণ বিতরণ হয়েছে ১৮ হাজার ৬৮৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
এটি পুরো অর্থবছরের মোট লক্ষ্যমাত্রার ৬০ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে (প্রথম সাত মাস) বিতরণ হয়েছিল ১৭ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে খেলাপি কৃষি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৯০৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা। যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৭ দশমিক ৬২ শতাংশ। আগের বছর একই সময়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৯৩৯ কোটি ৮১লাখ টাকা। যা বিতরণকৃত ঋণের ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অভ্যন্তরীণ খাদ্য নিরাপত্তা সৃষ্টিতে কৃষি খাতে প্রণোদনা বিতরণ ও নিয়মিত ঋণ বিতরণে তদারকির কারণে কৃষি ঋণ বিতরণ বেড়েছে। ফলে কৃষি খাতে একদিকে উৎপাদন বাড়ছে, কৃষক উৎপাদিত ফসলের দাম ভালো দাম পাচ্ছে এবং সময় মতো ফেরত দিতে পারছে। এ কারণে খেলাপি কৃষি ঋণ কমেছে। এটি লক্ষ্যমাত্রার ৬০ শতাংশ।
তথ্য বলছে চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সাত মাসে কৃষি ঋণ বিতরণের হারও বেড়েছে। কৃষি ঋণ বিতরণ পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে কৃষি ঋণ বিতরণ হয়েছে ১৮ হাজার ৬৮৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এটি পুরো অর্থবছরের মোট লক্ষ্যমাত্রার ৬০ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এ ঋণ তার আগের অর্থবছরের একই সময়ে বিতরণকৃত ঋণের চেয়ে প্রায় এক হাজার ৬২৯ কোটি টাকা বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে বিতরণ হয়েছিল ১৭ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার ৬০ শতাংশ।
বিতরণ করা এ ঋণের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত আট ব্যাংক বিতরণ করেছে ১১ হাজার ৭৫৮ কেটি টাকা। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১৮ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা এবং বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কৃষি ঋণ বিতরণ করেছ ৭৭১ কোটি টাকা।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মোট বিতরণ করা ঋণের ২ শতাংশ কৃষকদের বিতরণ করতে হয়। দুটি বিশেষায়িত ব্যাংকের বিতরণ করা মোট ঋণই কৃষকদের মাঝ বিতরণ করে। ফলে মোট ঋণ বিতরণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কৃষি ঋণ বাড়ছে।
তথ্যে দেখা যায়, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। সে সময়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ঋণ বিতরণ করা হয়। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত আছে ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বছর শেষে এবারও লক্ষ্য ছাড়িয়ে যাবে।