আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম বলেছেন, জাতীয় সংসদে আমার চেয়েও খারাপ লোক আছে। তাই প্রতিবাদের মশাল হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি।
সোমবার (৫ জুন) নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ঢাকা-১৭ আসনে উপ-নির্বাচনের মনোনয়নপত্র তুলতে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
হিরো আলম বলেন, গত নির্বাচনে বগুড়ার জনগণ আমাকে কী রকম ভালোবেসেছিল এবং ভোট দিয়েছিল, আপনারা সবাই তা জানেন।
সারা বিশ্বই দেখেছে কাহালু-নন্দীগ্রাম আসনে কীভাবে আমাকে নয়-ছয় করে হারানো হয়েছিল। আমি জানি আমি নির্বাচনের যোগ্য নই। কিন্তু আমার চেয়েও অনেক খারাপ লোক দেখবেন সংসদে আছে। তাই আমি হিরো আলম প্রতিবাদের এক মশাল হয়ে আমি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি।
তিনি বলেন, হিরো আলম যদি মাঠে থাকে, সারা বাংলাদেশ চেয়ে থাকবে এই নির্বাচনে। কারণ মানুষের যে ভালবাসা দেখেছি, গত কয়েকদিন ধরে অনেকেই মনে মনে ভেবেছে হিরো আলম দাঁড়াতে পারে। আমি দেখেছি বস্তি এলাকাগুলোয় আমার বড় ভাই ফারুক (ঢাকা-১৭ আসনের প্রয়াত এমপি) ভাই অসুস্থতার কারণে কাজ করতে পারেননি।
তিনি আরও বলেন, আমি মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, মিডিয়াকে ভালবাসি। সেই ফারুক ভাইয়ের অসমাপ্ত একটি কাজ যদি করতে পারি, তাহলে মিডিয়ায় আমরা যারা আছি কিছুটা হলেও ধন্য হবো। সবকিছু মিলিয়ে ঢাকা-১৭ নির্বাচনে আসা। অনেকে আপনারা মনে করছেন, বগুড়ার পর আবার কেন এখানে নির্বাচনে এলেন!
বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়নি আস্থাহীনতার কারণে, আপনার কাছে কীভাবে আস্থা এলো, যেখানে বগুড়াতেও নয়-ছয় হয়েছে বলে মনে করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি একটু সাহস পেয়েছি গাজীপুর সিটি ভোটের পর যে, ঢাকা-১৭ আসনেও ভোট সুষ্ঠু হবে।
নিজেকে আলোচনায় রাখতেই ভোটে অংশ নেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি সবাইকে বলেছি প্রথমে মিডিয়াকেই বেছে নিতে চাই। দ্বিতীয়ত রাজনীতির মাঠে কাজ করতে চাই। এই আসনে আমি ঘুরে ঘুরে দেখেছি প্রচুর বাজে অবস্থা। একটু হলেও যদি ভাল কাজ করতে পারি, সময় খুব কম, পাঁচ মাস সময় পাওয়া যাবে। এই সময়েও যদি অল্প কাজ করতে পারি, আমি ধন্য হতে পারব। বস্তি এলাকার জন্য কাজ করতে চাই। মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। আমি ইউটিউব, ফেসবুকে কনটেন্ট বানিয়ে টাকা পাই। নির্বাচনে দাঁড়িয়ে টাকা কামাতে হবে, এজন্য দাঁড়াই না। এই ধারণাটা ভুল।
হিরো আলম বলেন, আমি কাজ করে মানুষের চোখ খুলে দিতে চাই। মানুষের বিবেকে নাড়া দিতে চাই। ঘুমন্ত মানুষকে জাগাতে চাই। আপনারা আসুন। আমি পারলে আপনারা কেন পারবেন না। ভাইরাল হওয়ার জন্য নির্বাচনে দাঁড়াতে চাই না।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা-১৭ আসনে এলিট শ্রেণি এক জায়গায় আছে। সেখানে বস্তিবাসীও আছে। সামাজিক কাজে, অন্যান্য কাজে আমি মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি। মানুষের পাশে থাকি। সেই সততা দেখেই মানুষ আমাকে ভোট দেবে। আমাকে আসার সুযোগ করে দিন। সময় খুব কম। চার বছর তো কোনো কাজই হয়নি। আমি যদি অল্প কাজ করতে পারি, এতে ধন্য হবো।
চিত্রনায়ক ফেরদৌস, অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমানসহ অনেকে অংশ নিতে চান এই উপ-নির্বাচনে। তাদের বিষয়ে তিনি বলেন, যারা অংশ নিতে চান, সবাই অযোগ্য। কেউ আগে নির্বাচন করেননি। এ ছাড়া যোগ্য-অযোগ্য বিবেচনা করবে জনগণ। আমাদের চাইতে অযোগ্য লোক সংসদে আছে। আমি কোনোদিন ব্যাংক ডাকাতি করিনি। বিদেশে টাকা পাচার করিনি। উপ-নির্বাচন ঢাকা-১৭ আসনে করছি। আর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বগুড়া সদর ও কাহালু-নন্দীগ্রামে করব।
মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম আরও বলেন, অনলাইনে ফরম নিতে বলেছে। যদি আজকের মধ্যে যদি না নেওয়া যায়, কাল হার্ডকপি দেবে।
একাধিক বিয়ের কথা বললে তিনি চটে যান। বলেন, চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন না। নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করুন।
তফসিল অনুযায়ী, ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৫ জুন, মনোনয়নপত্র বাছাই ১৮ জুন, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ জুন। আর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৭ জুলাই।