বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ এক বছরের ছেলেটা নিজের জন্মদিনে কেকের বায়না ধরেছিল। কেক কিনতেই বেরিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরের নাসিম আহমেদ। তবে কল্পনাও বোধহয় করেননি যে এটাই তার জীবনের শেষ সাক্ষাৎ হবে তার পরিবারের সঙ্গে।
সোমবার সন্ধ্যা। শুধু কেক নয়, ছেলের জন্মদিনের যাবতীয় কেনাকাটা করে পরিবারকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলেন তেইশ বছরের নাসির। বাড়ি ফেরার পথে তাকে ঘিরে ধরে চারজন যুবক। নিজের গ্রামের রাস্তাতেই হকি স্টিক দিয়ে রীতিমতো পেটানো হয় তাকে। আর তারপর খুব কাছ থেকে পেটে আর মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায় তারা।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে নাসির আহমেদের শ্বশুরবাড়ির সদস্যরাই আছে এই খুনের পিছনে। বছর দুয়েক আগে গ্রামেরই মেয়ে পিঙ্কি কুমারীকে বিয়ে করে নাসির। অপরাধ বোধহয় সেটাই ছিল। এই বিয়ে মেনে নেননি পিঙ্কির বাড়ির লোকজন। এক হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করার মাশুল তাই নাসিরকে দিতে হল নিজের প্রাণ দিয়ে। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন পিঙ্কি। যে অভিযোগে নাম রয়েছে তারই বাবা ও বড় ভাইয়ের। তবে দু’জনেই পলাতক বলে জানাচ্ছে পুলিশ।
গোটা ঘটনায় যাতে কোনওভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত না হয়, তার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। সেই চেষ্টা রয়েছে গ্রামবাসীদের মধ্যেও। চলছে গ্রামে গ্রামে পুলিশি টহলদারি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ মঙ্গলবার কয়েকজন বহিরাগত গ্রামে বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা ধরে ফেলতেই তারা পালিয়ে যায়। তবে এই ঘটনা অশান্তি ছড়ানোর জন্য নয় বলে মনে করছে পুলিশ।
পারিবারিক শত্রুতার জন্যই এই খুন বলে অনুমান তাদের। ১৩,০০০ গ্রামবাসীর মধ্যে ওই গ্রামে ৩,০০০ মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষের বাস। ২০১৩ সালের মুজফফরনগর দাঙ্গার সময়ে এই গ্রাম থেকে অশান্তির খবর আসেনি। তবে এই ঘটনায় থমথমে হয়ে আছে গোটা গ্রাম।