ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাবিতে পিটিয়ে হত্যায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জনকে থানায় সোপর্দ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ছাত্রলীগ নেতাসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আটককৃতদের শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আটককৃতরা হলেন-ছাত্রলীগের ফজলুল হক মুসলিম হল শাখার উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক থেকে পদত্যাগকৃত ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুমন। অন্যজনের নাম এখনো জানা যায়নি।

বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ওই হলে  তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা করেন শিক্ষার্থীরা। জানা গেছে, তোফাজ্জলকে আটকের পর গেস্টরুমে নিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। সেখানে তাকে রাত ১০টা পর্যন্ত দফায় দফায় মারধর করেন।

একপর্যায়ে তাকে ক্যান্টিনে বসিয়ে ভাতও খাওয়ানো হয়। এরপর পুনরায় মারধর করা হয়। রাত ১০টার দিকে হলের হাউস টিউটররা ঘটনাস্থলে গেলে রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করলে শিক্ষার্থীরা সেখানে রেখেই চলে আসেন।

এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মামলার এজাহারে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেট অ্যাডভাইজার আমানুল্লাহ উল্লেখ করেন, ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ৭টা ৪৫ মিনিটে একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে। তাকে প্রথমে হলের মূল ভবনের গেস্টরুমে নিয়ে সে মোবাইল চুরি করেছে বলে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুসি দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসা করলে তার নাম তোফাজ্জল বলে জানায়। পরে সে মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে হলের ক্যান্টিনে খাবার খাওয়ানো হয়। পরে হলের গেস্টরুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে পেছনে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে সে অচেতন হয়ে পড়ে। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানানো হলে তারা সহায়তা করে অচেতন যুবককে ঢামেকে নিয়ে যায়। পরে রাত ১২ টা ৪৫ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

এ ঘটনায় হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি ইতোমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে এই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাবিতে পিটিয়ে হত্যায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জনকে থানায় সোপর্দ

আপডেট টাইম : ১২:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ছাত্রলীগ নেতাসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আটককৃতদের শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আটককৃতরা হলেন-ছাত্রলীগের ফজলুল হক মুসলিম হল শাখার উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক থেকে পদত্যাগকৃত ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুমন। অন্যজনের নাম এখনো জানা যায়নি।

বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ওই হলে  তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা করেন শিক্ষার্থীরা। জানা গেছে, তোফাজ্জলকে আটকের পর গেস্টরুমে নিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। সেখানে তাকে রাত ১০টা পর্যন্ত দফায় দফায় মারধর করেন।

একপর্যায়ে তাকে ক্যান্টিনে বসিয়ে ভাতও খাওয়ানো হয়। এরপর পুনরায় মারধর করা হয়। রাত ১০টার দিকে হলের হাউস টিউটররা ঘটনাস্থলে গেলে রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করলে শিক্ষার্থীরা সেখানে রেখেই চলে আসেন।

এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মামলার এজাহারে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেট অ্যাডভাইজার আমানুল্লাহ উল্লেখ করেন, ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ৭টা ৪৫ মিনিটে একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে। তাকে প্রথমে হলের মূল ভবনের গেস্টরুমে নিয়ে সে মোবাইল চুরি করেছে বলে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুসি দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসা করলে তার নাম তোফাজ্জল বলে জানায়। পরে সে মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে হলের ক্যান্টিনে খাবার খাওয়ানো হয়। পরে হলের গেস্টরুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে পেছনে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে সে অচেতন হয়ে পড়ে। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানানো হলে তারা সহায়তা করে অচেতন যুবককে ঢামেকে নিয়ে যায়। পরে রাত ১২ টা ৪৫ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

এ ঘটনায় হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি ইতোমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে এই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।