ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন মাথায় রেখে দল গোছাতে তৎপর বিএনপি

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে বিএনপি। সম্প্রতি এ বিষয়ে নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বক্তব্য দিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি। সেজন্য রাজনৈতিক মিত্রদের ধরে রাখা, কূটনৈতিক সম্পর্কোন্নয়ন ও সংগঠন শক্তিশালী করার পাশাপাশি নেতাকর্মীদের আরও জনবান্ধব হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তারেক রহমান। এসব বিষয় সামনে রেখে নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছে বিএনপি। কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে সংগঠনকে গুছিয়ে আনার বিষয়টিও চলমান। বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে নতুনভাবে পুনর্গঠন করা হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর কিছু বিতর্কিত অসাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের কারণে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠনের একাধিক জেলা, উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। জানা গেছে, বিএনপির ৮১টি সাংগঠনিক জেলা ইউনিটের কমিটি হালনাগাদ কার্যক্রমও চলমান আছে।

দলটির নেতারা জানান, ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে বিএনপি ক্ষমতার বাইরে। দীর্ঘ এই সময়ে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় কারাবন্দি করা হয়। এর পরও যুক্তরাজ্যে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন তারেক রহমান। সর্বশেষ এ বছর ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ডামি আখ্যা দিয়ে বর্জন করে বিএনপিসহ দেশের প্রায় ৬৩টি রাজনৈতিক দল। এ সিদ্ধান্তকে তারেক রহমানের দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বের প্রতিফলন বলে মনে করেন তারা। তবে, প্রায় দেড় দশকের ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী আন্দোলনের কারণে দলকে ঠিকভাবে গোছাতে পারেনি বিএনপি। এখন নতুনভাবে সারা দেশে মূল দলের পাশাপাশি সহযোগী সংগঠনগুলো আরও গতিশীল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী রোববার থেকে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল সাম্যভিত্তিক ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণে দিকনির্দেশনামূলক যৌথ কর্মিসভা শুরু করবে। এ লক্ষ্যে সারা দেশে তিনটি সংগঠনের সমন্বয়ে দল গঠন করা হয়েছে। প্রতিদিন একটি বিভাগের একটি জেলার সব ইউনিটের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন দলনেতারা।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কালবেলাকে বলেন, তারা গত ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে আন্দোলন ও দল পুনর্গঠন একসঙ্গে করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলন জোরদার করতে গিয়ে দল পুনর্গঠন কিছুটা থমকে যায়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর আবারও বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের মাধ্যমে সংসদ নির্বাচন আদায় তাদের মূল চ্যালেঞ্জ বলে তিনি জানান। রাজনৈতিক সরকারের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে কঠিন ভাবছে বিএনপি

গত ৩০ আগস্ট রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোর নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় তারেক রহমান বলেন, আগামী নির্বাচন হবে একটি কঠিন পরীক্ষার নির্বাচন। নির্বাচনী ফলের জন্য বিএনপি সবসময়ই জনসমর্থনের ওপর নির্ভরশীল। ১৭ বছর ধরে নেতাকর্মীরা শত জুলুম-নির্যাতন সহ্য করে জনগণের আস্থা ধরে রেখেছেন। জনসম্পৃক্ত থেকে আস্থা অর্জন ও তা অক্ষুণ্ন রাখতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে সব প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ বিষয়ে বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহসম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল কালবেলাকে বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ডান-বাম ও ইসলামী দলগুলোকে নিয়ে প্রায় ১৬ বছর রাজপথে আন্দোলন করছেন তারা। এখন দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফেরানোর মূল দায়িত্ব বিএনপির কাঁধেই আসবে। গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় গিয়ে বিএনপি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের কাজ করবে। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমরানুল হক চাকলাদার কালবেলাকে বলেন, ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর বিএনপির বিরুদ্ধে এক ধরনের অপপ্রচার চলছে। ফলে সংগঠন গোছানো, রাজনৈতিক মিত্রদের পাশে রাখা এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে সঠিক পথেই এগোচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

নেতাকর্মীদের আরও জনবান্ধব হওয়ার নির্দেশ:

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সারা দেশে কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগসহ সভা-সমাবেশের মাধ্যমে বেশিরভাগ সময় কাটে তারেক রহমানের। দলীয় কর্মসূচি, জেলা পর্যায়ে কর্মসূচি বাস্তবায়নে নেতাদের ভূমিকা সরাসরি মনিটর করেন তিনি। দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে ভিডিওকলে সংযুক্ত হয়ে বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন নিয়মিত। আগামী নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে, সেটি সামনে রেখে নেতাকর্মীদের আরও জনবান্ধব হওয়ার নির্দেশনা দিচ্ছেন তারেক রহমান। দুর্নীতিবাজ ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না, এ বার্তা দিতে চান তিনি। দলটির নেতারা মনে করেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার নির্যাতন-নিপীড়ন ছাড়াও বিএনপি ভাঙতে নানামুখী তৎপরতা চালায়। বিদেশে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারাই তারেক রহমানের সবচেয়ে বড় সাফল্য।

বিএনপির চেয়ারপারসনস ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির বিশেষ সহকারী বদরুল আলম চৌধুরী শিপলু কালবেলাকে বলেন, মামলা-হামলা ও নির্যাতনে বিপর্যস্ত বিএনপি অনেকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছ থেকে গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচন আদায় করাটা তাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ। চূড়ান্ত সফলতার জন্য আরেকটি অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটাতে হবে। সেই কাজ করতে গেলে নানা বাধা আসবে, এটা মাথায় রেখেই দলের হাইকমান্ড নতুনভাবে পরিকল্পনা নিচ্ছেন।

যৌথভাবে মাঠে নামছে ৩ সংগঠন:

এদিকে,সাম্যভিত্তিক ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণে দিকনির্দেশনামূলক যৌথ কর্মিসভা নিয়ে মাঠে নামছে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, স্বাধীনতার মূল চেতনা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারভিত্তিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের নতুন পথযাত্রায় তারেক রহমানের নির্দেশনায় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে সারা দেশে জেলাভিত্তিক যৌথ কর্মিসভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, যা রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হবে। এজন্য তিন সংগঠনের সভাপতি, সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সমন্বয়ে তিনটি টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিমের নেতারা সবকটি বিভাগে কর্মিসভা করবেন। সবশেষে ঢাকা বিভাগে কর্মিসভার আয়োজন করা হবে। যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না কালবেলাকে বলেন, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে যৌথ কর্মিসভার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোথাও কেউ বিশৃঙ্খলা করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর বার্তা সারা দেশের নেতাকর্মীদের মাঝে পৌঁছে দিতে চাই। দ্রুততম সময়ের মধ্যে কর্মিসভা শেষে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

নির্বাচন মাথায় রেখে দল গোছাতে তৎপর বিএনপি

আপডেট টাইম : ৩৪ মিনিট আগে

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে বিএনপি। সম্প্রতি এ বিষয়ে নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বক্তব্য দিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি। সেজন্য রাজনৈতিক মিত্রদের ধরে রাখা, কূটনৈতিক সম্পর্কোন্নয়ন ও সংগঠন শক্তিশালী করার পাশাপাশি নেতাকর্মীদের আরও জনবান্ধব হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তারেক রহমান। এসব বিষয় সামনে রেখে নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছে বিএনপি। কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে সংগঠনকে গুছিয়ে আনার বিষয়টিও চলমান। বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে নতুনভাবে পুনর্গঠন করা হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর কিছু বিতর্কিত অসাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের কারণে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠনের একাধিক জেলা, উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। জানা গেছে, বিএনপির ৮১টি সাংগঠনিক জেলা ইউনিটের কমিটি হালনাগাদ কার্যক্রমও চলমান আছে।

দলটির নেতারা জানান, ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে বিএনপি ক্ষমতার বাইরে। দীর্ঘ এই সময়ে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় কারাবন্দি করা হয়। এর পরও যুক্তরাজ্যে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন তারেক রহমান। সর্বশেষ এ বছর ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ডামি আখ্যা দিয়ে বর্জন করে বিএনপিসহ দেশের প্রায় ৬৩টি রাজনৈতিক দল। এ সিদ্ধান্তকে তারেক রহমানের দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বের প্রতিফলন বলে মনে করেন তারা। তবে, প্রায় দেড় দশকের ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী আন্দোলনের কারণে দলকে ঠিকভাবে গোছাতে পারেনি বিএনপি। এখন নতুনভাবে সারা দেশে মূল দলের পাশাপাশি সহযোগী সংগঠনগুলো আরও গতিশীল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী রোববার থেকে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল সাম্যভিত্তিক ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণে দিকনির্দেশনামূলক যৌথ কর্মিসভা শুরু করবে। এ লক্ষ্যে সারা দেশে তিনটি সংগঠনের সমন্বয়ে দল গঠন করা হয়েছে। প্রতিদিন একটি বিভাগের একটি জেলার সব ইউনিটের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন দলনেতারা।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কালবেলাকে বলেন, তারা গত ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে আন্দোলন ও দল পুনর্গঠন একসঙ্গে করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলন জোরদার করতে গিয়ে দল পুনর্গঠন কিছুটা থমকে যায়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর আবারও বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের মাধ্যমে সংসদ নির্বাচন আদায় তাদের মূল চ্যালেঞ্জ বলে তিনি জানান। রাজনৈতিক সরকারের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে কঠিন ভাবছে বিএনপি

গত ৩০ আগস্ট রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোর নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় তারেক রহমান বলেন, আগামী নির্বাচন হবে একটি কঠিন পরীক্ষার নির্বাচন। নির্বাচনী ফলের জন্য বিএনপি সবসময়ই জনসমর্থনের ওপর নির্ভরশীল। ১৭ বছর ধরে নেতাকর্মীরা শত জুলুম-নির্যাতন সহ্য করে জনগণের আস্থা ধরে রেখেছেন। জনসম্পৃক্ত থেকে আস্থা অর্জন ও তা অক্ষুণ্ন রাখতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে সব প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ বিষয়ে বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহসম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল কালবেলাকে বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ডান-বাম ও ইসলামী দলগুলোকে নিয়ে প্রায় ১৬ বছর রাজপথে আন্দোলন করছেন তারা। এখন দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফেরানোর মূল দায়িত্ব বিএনপির কাঁধেই আসবে। গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় গিয়ে বিএনপি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের কাজ করবে। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমরানুল হক চাকলাদার কালবেলাকে বলেন, ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর বিএনপির বিরুদ্ধে এক ধরনের অপপ্রচার চলছে। ফলে সংগঠন গোছানো, রাজনৈতিক মিত্রদের পাশে রাখা এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে সঠিক পথেই এগোচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

নেতাকর্মীদের আরও জনবান্ধব হওয়ার নির্দেশ:

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সারা দেশে কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগসহ সভা-সমাবেশের মাধ্যমে বেশিরভাগ সময় কাটে তারেক রহমানের। দলীয় কর্মসূচি, জেলা পর্যায়ে কর্মসূচি বাস্তবায়নে নেতাদের ভূমিকা সরাসরি মনিটর করেন তিনি। দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে ভিডিওকলে সংযুক্ত হয়ে বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন নিয়মিত। আগামী নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে, সেটি সামনে রেখে নেতাকর্মীদের আরও জনবান্ধব হওয়ার নির্দেশনা দিচ্ছেন তারেক রহমান। দুর্নীতিবাজ ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না, এ বার্তা দিতে চান তিনি। দলটির নেতারা মনে করেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার নির্যাতন-নিপীড়ন ছাড়াও বিএনপি ভাঙতে নানামুখী তৎপরতা চালায়। বিদেশে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারাই তারেক রহমানের সবচেয়ে বড় সাফল্য।

বিএনপির চেয়ারপারসনস ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির বিশেষ সহকারী বদরুল আলম চৌধুরী শিপলু কালবেলাকে বলেন, মামলা-হামলা ও নির্যাতনে বিপর্যস্ত বিএনপি অনেকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছ থেকে গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচন আদায় করাটা তাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ। চূড়ান্ত সফলতার জন্য আরেকটি অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটাতে হবে। সেই কাজ করতে গেলে নানা বাধা আসবে, এটা মাথায় রেখেই দলের হাইকমান্ড নতুনভাবে পরিকল্পনা নিচ্ছেন।

যৌথভাবে মাঠে নামছে ৩ সংগঠন:

এদিকে,সাম্যভিত্তিক ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণে দিকনির্দেশনামূলক যৌথ কর্মিসভা নিয়ে মাঠে নামছে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, স্বাধীনতার মূল চেতনা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারভিত্তিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের নতুন পথযাত্রায় তারেক রহমানের নির্দেশনায় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে সারা দেশে জেলাভিত্তিক যৌথ কর্মিসভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, যা রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হবে। এজন্য তিন সংগঠনের সভাপতি, সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সমন্বয়ে তিনটি টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিমের নেতারা সবকটি বিভাগে কর্মিসভা করবেন। সবশেষে ঢাকা বিভাগে কর্মিসভার আয়োজন করা হবে। যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না কালবেলাকে বলেন, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে যৌথ কর্মিসভার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোথাও কেউ বিশৃঙ্খলা করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর বার্তা সারা দেশের নেতাকর্মীদের মাঝে পৌঁছে দিতে চাই। দ্রুততম সময়ের মধ্যে কর্মিসভা শেষে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।