ঢাকা , রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ষ্টি ও পাহাড়ি ঢল ময়মনসিংহের দুই উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী দুই উপজেলা হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। দুইদিন যাবৎ টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নতুন করে আরো বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব গ্রামের শত শত পরিবার। ডুবে গেছে ফসলের মাঠ, মাছের ঘেরসহ হাজারো বাড়িঘর।

হালুয়াঘাট উপজেলার ভূবনকুড়া, গাজিরভিটা, ধুরাইল ও সদর ইউনিয়নসহ পৌর এলাকায় পানি বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে ধোবাউড়া উপজেলার নেতাই নদীর বাঁধ ভেঙে উপজেলা সদরসহ ৪০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে

ক্রমাগত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এই দুই উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ। প্রয়োজনীয় কাপড়-চোপড় ও গবাদি পশু নিয়ে অনেকেই ছুটছেন আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে।

হঠাৎ বৃষ্টিতে ও পাহাড়ি ঢলে বাড়ি ঘরে পানি উঠেছে, প্লাবিত হয়েছে কয়েক হাজার একর ফসলি জমি।

দুদিন আগেও গ্রামীণ জনপদে ছিল দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ। মাঠে মাঠে সোনালি ধানের সমারোহ। বাতাসে দোল খাচ্ছিল কৃষকের স্বপ্ন। কেউ আবার আগাম ধান ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। শুক্রবারের বৃষ্টিতে কৃষকের স্বপ্ন যেন ভেস্তে গেলো। বুকফাটা কান্না আর আর্তনাদ ছাড়া যেন কিছুই রইল না তাদের। হালুয়াঘাট ধোবাউড়া সীমান্তের মাঠগুলোতে এখন পানি আর বালু দিয়ে ভরপুর। দুই উপজেলার মানুষের আহাজারি যেন থামছেই না।

এদিকে বন্যা মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।

ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত শারমিন বলেন, উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ও ঘোষগাঁও সদর ইউনিয়নের প্রায় সব এলাকা ও আরও বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে গেছে। নেতাই নদীর বাঁধ কিছু কিছু পয়েন্টে ভেঙে গেছে। আমরা প্রাথমিকভাবে সকল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের বলেছি জানমালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে। যদি কেউ পানিবন্দি হয়ে থাকে। তাহলে তাকে সাথে সাথে উদ্ধার করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন প্রাণহানির কোন ঘটনা ঘটেনি।

হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবিদুর রহমান বলেন, এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। যেসব এলাকায় পানি আটকে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে সেখান থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ, সাবরেজিস্টার অফিস ও খাদ্যগুদামের সামনে পানি জমে আছে। এছাড়া উপজেলার বেশ কিছু গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

ষ্টি ও পাহাড়ি ঢল ময়মনসিংহের দুই উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

আপডেট টাইম : ০৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪

ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী দুই উপজেলা হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। দুইদিন যাবৎ টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নতুন করে আরো বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব গ্রামের শত শত পরিবার। ডুবে গেছে ফসলের মাঠ, মাছের ঘেরসহ হাজারো বাড়িঘর।

হালুয়াঘাট উপজেলার ভূবনকুড়া, গাজিরভিটা, ধুরাইল ও সদর ইউনিয়নসহ পৌর এলাকায় পানি বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে ধোবাউড়া উপজেলার নেতাই নদীর বাঁধ ভেঙে উপজেলা সদরসহ ৪০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে

ক্রমাগত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এই দুই উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ। প্রয়োজনীয় কাপড়-চোপড় ও গবাদি পশু নিয়ে অনেকেই ছুটছেন আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে।

হঠাৎ বৃষ্টিতে ও পাহাড়ি ঢলে বাড়ি ঘরে পানি উঠেছে, প্লাবিত হয়েছে কয়েক হাজার একর ফসলি জমি।

দুদিন আগেও গ্রামীণ জনপদে ছিল দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ। মাঠে মাঠে সোনালি ধানের সমারোহ। বাতাসে দোল খাচ্ছিল কৃষকের স্বপ্ন। কেউ আবার আগাম ধান ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। শুক্রবারের বৃষ্টিতে কৃষকের স্বপ্ন যেন ভেস্তে গেলো। বুকফাটা কান্না আর আর্তনাদ ছাড়া যেন কিছুই রইল না তাদের। হালুয়াঘাট ধোবাউড়া সীমান্তের মাঠগুলোতে এখন পানি আর বালু দিয়ে ভরপুর। দুই উপজেলার মানুষের আহাজারি যেন থামছেই না।

এদিকে বন্যা মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।

ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত শারমিন বলেন, উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ও ঘোষগাঁও সদর ইউনিয়নের প্রায় সব এলাকা ও আরও বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে গেছে। নেতাই নদীর বাঁধ কিছু কিছু পয়েন্টে ভেঙে গেছে। আমরা প্রাথমিকভাবে সকল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের বলেছি জানমালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে। যদি কেউ পানিবন্দি হয়ে থাকে। তাহলে তাকে সাথে সাথে উদ্ধার করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন প্রাণহানির কোন ঘটনা ঘটেনি।

হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবিদুর রহমান বলেন, এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। যেসব এলাকায় পানি আটকে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে সেখান থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ, সাবরেজিস্টার অফিস ও খাদ্যগুদামের সামনে পানি জমে আছে। এছাড়া উপজেলার বেশ কিছু গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।