ঢাকা , বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাত অঙ্গরাজ্যে নির্ধারণ হবে জয়-পরাজয়

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক সপ্তাহেরও কম সময় রয়েছে। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প দুজনই প্রচার পর্বের শেষ দিকে রয়েছেন। দুজনই আদাজল খেয়ে পড়ে রয়েছেন সাতটি দোদুল্যমান রাজ্যে। মার্কিন নির্বাচনে সাধারণত এই সাত রাজ্যই ফলাফল নির্ধারণ করে দেয়। খবর বিবিসি

যুক্তরাষ্ট্রে ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে অধিকাংশ রাজ্যের ভোটারের পছন্দ মোটামুটি ঠিকই থাকে। কোনো রাজ্য হয়তো ডেমোক্র্যাটদের দখলে, আবার কোনোটি রিপাবলিকানদের। কিন্তু সত্যিকারের নির্বাচনী যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত সাত রাজ্য হলো- উইসকিনসন, নেভাদা, পেনসিলভানিয়া, মিশিগান, নর্থ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া ও অ্যারিজোনা। জরিপের ফলগুলো বলছে, এই সাতটি রাজ্যে দুই প্রার্থী একেবারে হাড্ডাহাড্ডি অবস্থানে রয়েছেন।

সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এত নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অবস্থায় আর দেখা যায়নি। নর্থ ক্যারোলিনা, অ্যারিজোনা এবং জর্জিয়ায় সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। এ ছাড়া উইসকিনসন, নেভাদা, পেনসিলভানিয়া এবং মিশিগানে দুই প্রার্থী সমানে-সমান অবস্থানে রয়েছেন।

এক সময় পেনসিলভানিয়ার ওপর ডেমোক্র্যাটরা ভরসা করতেন, কিন্তু এবার এই রাজ্যের চেয়ে সমানে-সমান পরিস্থিতি আর কোথাও নেই। ১৯৯২ সালের পর জর্জিয়ায় আর কোনো ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জয়ী না হলেও ২০২০ সালে জো বাইডেন ঠিকই জিতেছিলেন। এবার সেখানে কমলা হ্যারিস ভালো করবেন বলে আশা করছেন ডেমোক্র্যাটরা। এ ছাড়া মিশিগান ছিল ডেমোক্র্যাটদের শক্তিশালী ঘাঁটি কিন্তু ২০১৬ সালে এ রাজ্যেই কুপোকাত হয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটন।

অন্যদিকে অ্যারিজোনায় ২০২০ সালে জো বাইডেন মাত্র ১০ হাজার ৪৫৭ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। এবার ট্রাম্প আশা করছেন, সীমান্তবর্তী হওয়ায় অভিবাসী ইস্যুতে এ রাজ্যে তার সমর্থন বাড়বে। উইসকনসিনের দিকে এবার বাড়তি নজর দিয়েছেন ট্রাম্প।

এবার নির্বাচনে অর্থনীতি, স্বাস্থ্যনীতি, অভিবাসী, গাজা ও ইউক্রেন যুদ্ধসহ আরও বেশ কিছু ইস্যু ভোটারের মনে প্রভাব ফেলছে। এসব ইস্যুতে একেক প্রার্থী নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। এবার যারা নতুন ভোট দেবেন, সেই তরুণ ভোটাদের কাছে টানতে চাইছেন ট্রাম্প। গত সোমবার জর্জিয়া প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ে তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সময় কাটান ট্রাম্প।

এদিকে প্রচার পর্বের শেষ দিকে এক প্রার্থী অপরকে আক্রমণ করছেন। গত সোমবার কমলা হ্যারিস ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ঘৃণা ও বিভেদের কারণে মানুষ তার প্রতি বিরক্ত। গত সোমবার সন্ধ্যায় মিশিগানের আন আরবারে এক সমাবেশে যোগ দেন কমলা। এ সময় তার রানিং মেট ও মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজ ছিলেন। ওই সমাবেশে সংগীতশিল্পী ও গীতিকার ম্যাগি রজারসেরও একটি পরিবেশনা ছিল। অন্যদিকে নিজে ‘নাৎসি’ নন বলে মন্তব্য করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাকে তার একজন সাবেক চিফ অব স্টাফের তরফে ফ্যাসিবাদী বলা ও প্রতিপক্ষ (কমলা হ্যারিস) শিবির থেকে স্বেচ্ছাচারী আখ্যা দেওয়ার অভিযোগ খণ্ডন করতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

উল্লেখ্য, ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ৪৮টির জন্য নিয়ম হলো- যিনি পপুলার ভোটে জিতবেন, তিনিই সে অঙ্গরাজ্যের সব কটি ইলেকটোরাল ভোট পাবেন। এই ক্ষেত্রে পপুলার ভোটের ব্যবধান যত কমই হোক না কেন। আর নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীকে জয়ী হওয়ার জন্য ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে ২৭০টি ভোট পেতে হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

সাত অঙ্গরাজ্যে নির্ধারণ হবে জয়-পরাজয়

আপডেট টাইম : ১২ ঘন্টা আগে

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক সপ্তাহেরও কম সময় রয়েছে। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প দুজনই প্রচার পর্বের শেষ দিকে রয়েছেন। দুজনই আদাজল খেয়ে পড়ে রয়েছেন সাতটি দোদুল্যমান রাজ্যে। মার্কিন নির্বাচনে সাধারণত এই সাত রাজ্যই ফলাফল নির্ধারণ করে দেয়। খবর বিবিসি

যুক্তরাষ্ট্রে ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে অধিকাংশ রাজ্যের ভোটারের পছন্দ মোটামুটি ঠিকই থাকে। কোনো রাজ্য হয়তো ডেমোক্র্যাটদের দখলে, আবার কোনোটি রিপাবলিকানদের। কিন্তু সত্যিকারের নির্বাচনী যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত সাত রাজ্য হলো- উইসকিনসন, নেভাদা, পেনসিলভানিয়া, মিশিগান, নর্থ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া ও অ্যারিজোনা। জরিপের ফলগুলো বলছে, এই সাতটি রাজ্যে দুই প্রার্থী একেবারে হাড্ডাহাড্ডি অবস্থানে রয়েছেন।

সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এত নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অবস্থায় আর দেখা যায়নি। নর্থ ক্যারোলিনা, অ্যারিজোনা এবং জর্জিয়ায় সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। এ ছাড়া উইসকিনসন, নেভাদা, পেনসিলভানিয়া এবং মিশিগানে দুই প্রার্থী সমানে-সমান অবস্থানে রয়েছেন।

এক সময় পেনসিলভানিয়ার ওপর ডেমোক্র্যাটরা ভরসা করতেন, কিন্তু এবার এই রাজ্যের চেয়ে সমানে-সমান পরিস্থিতি আর কোথাও নেই। ১৯৯২ সালের পর জর্জিয়ায় আর কোনো ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জয়ী না হলেও ২০২০ সালে জো বাইডেন ঠিকই জিতেছিলেন। এবার সেখানে কমলা হ্যারিস ভালো করবেন বলে আশা করছেন ডেমোক্র্যাটরা। এ ছাড়া মিশিগান ছিল ডেমোক্র্যাটদের শক্তিশালী ঘাঁটি কিন্তু ২০১৬ সালে এ রাজ্যেই কুপোকাত হয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটন।

অন্যদিকে অ্যারিজোনায় ২০২০ সালে জো বাইডেন মাত্র ১০ হাজার ৪৫৭ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। এবার ট্রাম্প আশা করছেন, সীমান্তবর্তী হওয়ায় অভিবাসী ইস্যুতে এ রাজ্যে তার সমর্থন বাড়বে। উইসকনসিনের দিকে এবার বাড়তি নজর দিয়েছেন ট্রাম্প।

এবার নির্বাচনে অর্থনীতি, স্বাস্থ্যনীতি, অভিবাসী, গাজা ও ইউক্রেন যুদ্ধসহ আরও বেশ কিছু ইস্যু ভোটারের মনে প্রভাব ফেলছে। এসব ইস্যুতে একেক প্রার্থী নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। এবার যারা নতুন ভোট দেবেন, সেই তরুণ ভোটাদের কাছে টানতে চাইছেন ট্রাম্প। গত সোমবার জর্জিয়া প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ে তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সময় কাটান ট্রাম্প।

এদিকে প্রচার পর্বের শেষ দিকে এক প্রার্থী অপরকে আক্রমণ করছেন। গত সোমবার কমলা হ্যারিস ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ঘৃণা ও বিভেদের কারণে মানুষ তার প্রতি বিরক্ত। গত সোমবার সন্ধ্যায় মিশিগানের আন আরবারে এক সমাবেশে যোগ দেন কমলা। এ সময় তার রানিং মেট ও মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজ ছিলেন। ওই সমাবেশে সংগীতশিল্পী ও গীতিকার ম্যাগি রজারসেরও একটি পরিবেশনা ছিল। অন্যদিকে নিজে ‘নাৎসি’ নন বলে মন্তব্য করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাকে তার একজন সাবেক চিফ অব স্টাফের তরফে ফ্যাসিবাদী বলা ও প্রতিপক্ষ (কমলা হ্যারিস) শিবির থেকে স্বেচ্ছাচারী আখ্যা দেওয়ার অভিযোগ খণ্ডন করতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

উল্লেখ্য, ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ৪৮টির জন্য নিয়ম হলো- যিনি পপুলার ভোটে জিতবেন, তিনিই সে অঙ্গরাজ্যের সব কটি ইলেকটোরাল ভোট পাবেন। এই ক্ষেত্রে পপুলার ভোটের ব্যবধান যত কমই হোক না কেন। আর নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীকে জয়ী হওয়ার জন্য ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে ২৭০টি ভোট পেতে হবে।