ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, নিহত ৩ দ. আফ্রিকাকে হোয়াইটওয়াশ করে ইতিহাস গড়ল পাকিস্তান ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে আজও দুই গাড়ির সংঘর্ষ, নিহত ১ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বর্ডারে দুর্নীতির কারণে ঠেকানো যাচ্ছে না ‘রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আব্রাম না থাকলে তাকে আমার যোগ্য বলেও মনে করতাম না ওমরাহ শেষে গ্রামে ফিরে খেজুর-জমজমের পানি বিতরণ করল শিশু রিফাত বিদেশে প্রশিক্ষণে ঘুরে-ফিরে একই ব্যক্তি নয়, জুনিয়রদের অগ্রাধিকার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে সড়ক ছাড়লেন চিকিৎসকরা রেমিট্যান্সে জোয়ার, ২১ দিনে এলো ২ বিলিয়ন ডলার গণমাধ্যমের পাঠক-দর্শক-শ্রোতার মতামত জরিপ জানুয়ারিতে

ইমাম ও খতিবরা রাষ্ট্রীয়ভাবে অবহেলার শিকার

সমাজে ইমাম-খতিবরাই অবহেলা ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন সবচেয়ে বেশি।তাদের বাদ দিয়ে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। আজ রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয় ইমাম ও খতিব সংস্থা বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ গঠনে ইমাম ও খতিবদের করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলনে বক্তারা এ কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, ইমাম ও খতিব এ দুটি শব্দ আমাদের কাছে অত্যন্ত ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার। একজন মুসলমানের কাছে সামাজিকভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক পদ। তবে দুর্ভাগ্য হলেও সত্য মুসলিম প্রধান বাংলাদেশে জনসাধারণের কাছে ইমাম ও খতিবদের সামাজিক সম্মান এবং মর্যাদা অনেক বেশি থাকলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে তারা অবহেলার শিকার। এমনকি সমাজের সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিগুলো সরকারের আমলা ও রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারা অপমানিত হওয়ার ঘটনাও ঘটে অহরহ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সমাজপতিদের নোংরা রাজনীতির শিকারও হতে হয় অনেক ইমাম-খতিবকে।

তারা আরও বলেন, একজন ইমাম কিংবা খতিব মর্যাদা ও পদাধিকারে সমাজের সর্বপ্রধান ব্যক্তি হলেও বর্তমান দেশের সমাজ বাস্তবতায় তাদের নেই কোনো সোশ্যাল পাওয়ার ও যথাযোগ্য নেতৃত্ব। এছাড়াও প্রায়ই আমরা দেখে থাকি যে প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় যারা নেতৃত্বের আসনে কিংবা মসজিদ পরিচালনা কমিটির দায়িত্বে থাকেন তাদের দ্বারা ইমাম-খতিব, মোয়াজ্জিনগণ নানা ক্ষেত্রে অপমান, অবমূল্যায়ন ও অবহেলার শিকার হন, তথাপি দ্বীনের অতন্দ্র প্রহরী ওলামায়ে কেরামগণ আত্মমর্যাদা ও সম্মানের কারণে এহেন দুঃখ কষ্টগুলো কারো কাছে বলতে পারেন না।

খেলাফত মজলিশের মহাসচিব মাওলানা ড. আহমদ আব্দুল কাদের বলেন, ‘ইমামদের যে সম্মান থাকার কথা সেটা এ সমাজে নেই। তবে অনেকে তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে সম্মান অর্জন করেছেন। ইমামদের বেতন বাড়ানো উচিত। আজকের যুগে একজন রিকশাওয়ালাও ১০-১৫ হাজার টাকা ইনকাম করে। কিন্তু ইমামদের বেতন অনেক কম।’

তিনি বলেন, ‘ইমামদের যেখানে রাষ্ট্র পরিচালনা করার কথা সেখানে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে সমাজের দুর্বৃত্ত শ্রেণির লোকেরা। তবে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে এমন কোনো কাজ ইমামদের করা উচিত নয়। বাংলাদেশের ইমামদের সব বিভক্তি বাদ দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ইমামদের নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। বাদ দিতে হলেও সিস্টেম অনুযায়ী বাদ দিতে হবে।’

খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা মজিবুর রহমান হামিদী বলেন, ‘মসজিদ হচ্ছে সবকিছুর কেন্দ্র। মসজিদ একটি পবিত্র স্থান। মসজিদে আমরা এবাদত বন্দেগি করে থাকি। এছাড়াও মসজিদ থেকে ইমাম-খতিবরা সমাজের মানুষকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। সেজন্য ইমাম খতিবদেরকে স্বাধীনভাবে থাকার সুযোগ করে দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে মসজিদ কমিটির সদস্য হয় সন্ত্রাসীরা। তাদের যদি কমিটিতে না রাখা হয় তারা সমাজে ফেতনা করা শুরু করে দেয়। মসজিদ কমিটির সভাপতি সেক্রেটারি হতে হলে অবশ্যই বিশেষ গুণাবলি থাকতে হবে। মসজিদ কমিটির সভাপতি সেক্রেটারিসহ সদস্যদের কি ধরনের গুণাবলি থাকতে হবে সেটা সরকারকে নির্ধারণ করে দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৈষম্য দূর করার জন্য দেশ আবারও স্বাধীন করা হয়েছে। কিন্তু এখনো বৈষম্য রয়েছে। এ বিষয়ে সরকার একা বন্ধ করতে পারবে না। আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, নিহত ৩

ইমাম ও খতিবরা রাষ্ট্রীয়ভাবে অবহেলার শিকার

আপডেট টাইম : ০৪:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪

সমাজে ইমাম-খতিবরাই অবহেলা ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন সবচেয়ে বেশি।তাদের বাদ দিয়ে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। আজ রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয় ইমাম ও খতিব সংস্থা বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ গঠনে ইমাম ও খতিবদের করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলনে বক্তারা এ কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, ইমাম ও খতিব এ দুটি শব্দ আমাদের কাছে অত্যন্ত ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার। একজন মুসলমানের কাছে সামাজিকভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক পদ। তবে দুর্ভাগ্য হলেও সত্য মুসলিম প্রধান বাংলাদেশে জনসাধারণের কাছে ইমাম ও খতিবদের সামাজিক সম্মান এবং মর্যাদা অনেক বেশি থাকলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে তারা অবহেলার শিকার। এমনকি সমাজের সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিগুলো সরকারের আমলা ও রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারা অপমানিত হওয়ার ঘটনাও ঘটে অহরহ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সমাজপতিদের নোংরা রাজনীতির শিকারও হতে হয় অনেক ইমাম-খতিবকে।

তারা আরও বলেন, একজন ইমাম কিংবা খতিব মর্যাদা ও পদাধিকারে সমাজের সর্বপ্রধান ব্যক্তি হলেও বর্তমান দেশের সমাজ বাস্তবতায় তাদের নেই কোনো সোশ্যাল পাওয়ার ও যথাযোগ্য নেতৃত্ব। এছাড়াও প্রায়ই আমরা দেখে থাকি যে প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় যারা নেতৃত্বের আসনে কিংবা মসজিদ পরিচালনা কমিটির দায়িত্বে থাকেন তাদের দ্বারা ইমাম-খতিব, মোয়াজ্জিনগণ নানা ক্ষেত্রে অপমান, অবমূল্যায়ন ও অবহেলার শিকার হন, তথাপি দ্বীনের অতন্দ্র প্রহরী ওলামায়ে কেরামগণ আত্মমর্যাদা ও সম্মানের কারণে এহেন দুঃখ কষ্টগুলো কারো কাছে বলতে পারেন না।

খেলাফত মজলিশের মহাসচিব মাওলানা ড. আহমদ আব্দুল কাদের বলেন, ‘ইমামদের যে সম্মান থাকার কথা সেটা এ সমাজে নেই। তবে অনেকে তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে সম্মান অর্জন করেছেন। ইমামদের বেতন বাড়ানো উচিত। আজকের যুগে একজন রিকশাওয়ালাও ১০-১৫ হাজার টাকা ইনকাম করে। কিন্তু ইমামদের বেতন অনেক কম।’

তিনি বলেন, ‘ইমামদের যেখানে রাষ্ট্র পরিচালনা করার কথা সেখানে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে সমাজের দুর্বৃত্ত শ্রেণির লোকেরা। তবে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে এমন কোনো কাজ ইমামদের করা উচিত নয়। বাংলাদেশের ইমামদের সব বিভক্তি বাদ দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ইমামদের নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। বাদ দিতে হলেও সিস্টেম অনুযায়ী বাদ দিতে হবে।’

খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা মজিবুর রহমান হামিদী বলেন, ‘মসজিদ হচ্ছে সবকিছুর কেন্দ্র। মসজিদ একটি পবিত্র স্থান। মসজিদে আমরা এবাদত বন্দেগি করে থাকি। এছাড়াও মসজিদ থেকে ইমাম-খতিবরা সমাজের মানুষকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। সেজন্য ইমাম খতিবদেরকে স্বাধীনভাবে থাকার সুযোগ করে দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে মসজিদ কমিটির সদস্য হয় সন্ত্রাসীরা। তাদের যদি কমিটিতে না রাখা হয় তারা সমাজে ফেতনা করা শুরু করে দেয়। মসজিদ কমিটির সভাপতি সেক্রেটারি হতে হলে অবশ্যই বিশেষ গুণাবলি থাকতে হবে। মসজিদ কমিটির সভাপতি সেক্রেটারিসহ সদস্যদের কি ধরনের গুণাবলি থাকতে হবে সেটা সরকারকে নির্ধারণ করে দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৈষম্য দূর করার জন্য দেশ আবারও স্বাধীন করা হয়েছে। কিন্তু এখনো বৈষম্য রয়েছে। এ বিষয়ে সরকার একা বন্ধ করতে পারবে না। আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’