টেন্ডার জটিলতার কারণে বন্ধ রয়েছে বুড়িগঙ্গার ‘ওয়াটার বাস’ সার্ভিস। আগানগর টু ওয়াইজঘাট ও তেলঘাট টু শ্যামবাজার। এই দুটি রুটে চারটি ওয়াটার বাস চলাচল করত। বর্তমানে মাসখানেক ধরে বন্ধ রয়েছে এ সার্ভিস।

জনগণের উপকারে আসা নদী পারাপারের এ সার্ভিস বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থী, নারী, শিশুসহ হাজার যাত্রীর নদী পারাপারে এখন ঝুঁকি বেড়েছে। মনের ভেতর আতঙ্ক নিয়ে বর্তমানে খেয়া নৌকায় নদী পারাপার হচ্ছেন তারা।

খুব শীঘ্রই সার্ভিসটি আবার চালু করা হবে জানিয়ে বিআইডব্লিউটিসির প্যাসেঞ্জার সার্ভিস ইউনিটের ডিজিএম তানভীর আহমেদ বলেন, ‘মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ইজারাদার সার্ভিসটি বন্ধ করে ওয়াটার বাসগুলো আমাদের জিম্মায় দিয়ে গেছেন। যার ফলে সার্ভিসটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। মাসখানেক হলো এটি বন্ধ রয়েছে। এদিকে ৫ বছরের জন্য নতুন ইজারাদার নিয়োগ করা হয়েছে। অচিরেই সার্ভিসটি চালু করা হবে।’

জানা যায়, নৌ দুর্ঘটনারোধে ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বুড়িগঙ্গায় যাত্রী পারাপারে ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু করে বিআইডব্লিউটিসি।

প্রতিদিনই আগানগর ওয়াটার বাস ঘাটে এখন নানা শ্রেণি-পেশার যাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোহাতে দেখা যায়। এ প্রসঙ্গে গৃহিণী রাসিকা খানম শান্তা গণমাধ্যমকে জানান, ছেলেমেয়েদের স্কুলের খাতা-কলম বেশি করে পাইকারি দামে বাংলাবাজার থেকে কিনে আনি। আজকে মেয়েকে নিয়ে সেই উদ্দেশ্যেই বের হয়েছিলাম, কিন্তু ঘাটে এসে দেখি ওয়াটার বাস বন্ধ। ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে ডিঙ্গি নৌকায় নদী পার হতে ভয় পাচ্ছি, তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।

এদিকে সেন্ট গ্রেগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র তাহমিদ চৌধুরী বলেন, ‘চালুর পর থেকে সব সময়ই ওয়াটার বাসে বুড়িগঙ্গা পার হতাম। ডিঙ্গি নৌকা থেকে ওয়াটার বাস নিরাপদ ও আরামদায়ক। আমি সাঁতার জানি না তাই নৌকা দিয়ে পারাপার হতে অনেক ভয় লাগে। হঠাৎ ওয়াটার বাস বন্ধ হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছি।’

বন্ধ হয়ে যাওয়া এ সার্ভিস প্রসঙ্গে বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আবিদুর রহমান জানান, মাসখানেক ধরে সার্ভিসটি বন্ধ রয়েছে। শুনেছি নতুন করে টেন্ডার দেওয়া হচ্ছে, তাই আপাতত বন্ধ আছে সার্ভিস। আমার প্রশ্ন টেন্ডার দিতে হলে কি সার্ভিস বন্ধ করে দিতে হয়। সার্ভিস চালু থাকবে, নতুন কেউ ইজারা পেলে তারা পুরোনোদের কাছ থেকে ওয়াটার বাস বুঝে নেবে। তাহলেই তো হয়ে যায়। জনগণের ভোগান্তি হয় না।

জানা গেছে, গত অর্থবছরে ওয়াটার বাস সার্ভিসের ইজারা নিয়েছিলেন মাঝি শ্রমিক লীগের নেতা মো. মিন্টু। সরকার পরিবর্তনের পর তিনি গা ঢাকা দেন। এর কিছুদিন পর তিনি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সার্ভিসটি বন্ধ করে ওয়াটার বাসগুলো বিআইডব্লিউটিসির কাছে হস্তান্তর করেন।