ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে কৌশলে ডাকাতি ও অপহরণ করা হয় শিশুটিকে

ঢাকার আজিমপুরের একটি বাসায় ডাকাতির সময় তুলে নেওয়া হয়েছিল আট মাসের একটি শিশুকে। তবে অপহরণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে একজন অপহরণকারীকেও।

আজ শনিবার র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক ও কর্নেল মুনিম ফেরদৌস এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের অপহরণের পরিকল্পনা ও যেভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে তার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

তিনি জানান, গ্রেপ্তার হওয়া অপহরণকারীর নাম ফাতেমা আক্তার শাপলা। পেশায় গৃহিনী শাপলা ২০১০ সাল থেকে পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসবাস করছেন।

তিনি ২০১২ সালে বগুড়ার একটি স্কুল থেকে এসএসসি এবং ২০১৪ সালে রাজধানীর একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে রাজধানীর অপর একটি কলেজে মার্কেটিং বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শুরু করলেও তা শেষ করেনি। ২০২৩ সালে তার বিয়ে হয়। ৩-৪ মাস আগে থেকে মোহাম্মদপুর নবীনগর হাউজিং এলাকায় স্বামীর ফ্লাটে বসবাস শুরু করেন।

মুনিম জানান, অপহরণের এক সপ্তাহ আগে শিশুটির মায়ের সঙ্গে অফিসে যাতায়াত করার সময় তার পরিচয় হয়। এসময় শাপলা নিজেকে রাইসা এবং তার বাড়ি নওগাঁ জেলা বলে পরিচয় দেন। তিনি শিশুটির মাকে আরও বলেন, তিনি অবিবাহিত এবং একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি সচিবালয়ের পরিবহন পুলে অফিস সহায়ক হিসেবে চাকরি করেন।

শাপলা ভিকটিমের মা ফারজানা আক্তারকে আরও জানায়, ঢাকায় থাকার জন্য সাবলেট হিসেবে একটি রুম দরকার। তাকে সাবলেট হিসেবে ভাড়া দিলে সারাদিন বাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুটিরও দেখভাল করতে পারবেন। এতে এক পর্যায়ের শিশুটির মা রাজি হন। ১৪ নভেম্বর শাপলা ওই বাড়ি যান এবং দুই হাজার টাকা আগাম দিয়ে রাত যাপন করেন।

রাত যাপন শেষে শাপলা শিশুটির মাকে জানান, গ্রাম থেকে তার চাচাতো ভাই চাল নিয়ে আসবে। ওই দিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চাচাতো ভাই পরিচয়ে তিন জন বাসায় আসেন। আলাপের এক পর্যায়ে তারা ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ভিকটিমের মাকে ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। এরপর নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে এবং শিশুটিকে তুলে নিয়ে চলে যায়। পরে তার সহযোগীরা গ্রেপ্তার এড়াতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে।

আটক শাপলা ও তার সহযোগীরা মুক্তিপণ আদায় করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু ঘটনাটি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এতে তারা মুক্তিপণ দাবি থেকে বিরত থাকেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

যে কৌশলে ডাকাতি ও অপহরণ করা হয় শিশুটিকে

আপডেট টাইম : ২ ঘন্টা আগে

ঢাকার আজিমপুরের একটি বাসায় ডাকাতির সময় তুলে নেওয়া হয়েছিল আট মাসের একটি শিশুকে। তবে অপহরণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে একজন অপহরণকারীকেও।

আজ শনিবার র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক ও কর্নেল মুনিম ফেরদৌস এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের অপহরণের পরিকল্পনা ও যেভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে তার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

তিনি জানান, গ্রেপ্তার হওয়া অপহরণকারীর নাম ফাতেমা আক্তার শাপলা। পেশায় গৃহিনী শাপলা ২০১০ সাল থেকে পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসবাস করছেন।

তিনি ২০১২ সালে বগুড়ার একটি স্কুল থেকে এসএসসি এবং ২০১৪ সালে রাজধানীর একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে রাজধানীর অপর একটি কলেজে মার্কেটিং বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শুরু করলেও তা শেষ করেনি। ২০২৩ সালে তার বিয়ে হয়। ৩-৪ মাস আগে থেকে মোহাম্মদপুর নবীনগর হাউজিং এলাকায় স্বামীর ফ্লাটে বসবাস শুরু করেন।

মুনিম জানান, অপহরণের এক সপ্তাহ আগে শিশুটির মায়ের সঙ্গে অফিসে যাতায়াত করার সময় তার পরিচয় হয়। এসময় শাপলা নিজেকে রাইসা এবং তার বাড়ি নওগাঁ জেলা বলে পরিচয় দেন। তিনি শিশুটির মাকে আরও বলেন, তিনি অবিবাহিত এবং একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি সচিবালয়ের পরিবহন পুলে অফিস সহায়ক হিসেবে চাকরি করেন।

শাপলা ভিকটিমের মা ফারজানা আক্তারকে আরও জানায়, ঢাকায় থাকার জন্য সাবলেট হিসেবে একটি রুম দরকার। তাকে সাবলেট হিসেবে ভাড়া দিলে সারাদিন বাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুটিরও দেখভাল করতে পারবেন। এতে এক পর্যায়ের শিশুটির মা রাজি হন। ১৪ নভেম্বর শাপলা ওই বাড়ি যান এবং দুই হাজার টাকা আগাম দিয়ে রাত যাপন করেন।

রাত যাপন শেষে শাপলা শিশুটির মাকে জানান, গ্রাম থেকে তার চাচাতো ভাই চাল নিয়ে আসবে। ওই দিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চাচাতো ভাই পরিচয়ে তিন জন বাসায় আসেন। আলাপের এক পর্যায়ে তারা ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ভিকটিমের মাকে ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। এরপর নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে এবং শিশুটিকে তুলে নিয়ে চলে যায়। পরে তার সহযোগীরা গ্রেপ্তার এড়াতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে।

আটক শাপলা ও তার সহযোগীরা মুক্তিপণ আদায় করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু ঘটনাটি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এতে তারা মুক্তিপণ দাবি থেকে বিরত থাকেন।