বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  মাত্র এক ঘণ্টার বৃষ্টি। দুপুর ২-৩টা। আর এই এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই রাজধানী ঢাকার প্রায় অর্ধেক তলিয়ে গেল পানির নিচে। ভাঙা-চোরা, গর্ত, খানা-খন্দে ভরা সেই রাস্তা অসহনীয় দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুরো রাজধানীবাসীর জন্য।

বাটা সিগন্যাল থেকে হাতিরপুল বাজার পর্যন্ত পুরোটা এক হাঁটু পানির নিচে। শাহবাগের দিকেও যথারীতি অবস্থা।

রমনা পার্ক, নাইটিঙ্গেল মোড়, ফকিরাপুল, আরামবাগ, রাজারবাগ, খিলগাঁও, রামপুরারও একই দশা। কাকরাইলে কোমর সমান পানি। এজিবি কলোনির পাশ দিয়ে মতিঝিল আইডিয়ালের দিকে রাস্তায় যেন বিশাল বিশাল ঢেউ খেলা করছে। উন্মত্ত পদ্মা কিংবা মেঘনার রূপ ক্ষণিকের জন্য হলেও এ জায়গায় এসে নগরবাসী প্রত্যক্ষ করে এসময়।

পল্টন থানার ভেতরে সিঁড়ির গোড়ায় গিয়েও ঠেকেছে। ফকিরাপুল মোড় পার হয়ে আরামবাগের দিকেও রাস্তায় একই অবস্থা। এজিবি কলোনির পাশ দিয়ে মতিঝিল আইডিয়ালের দিকে রাস্তায় যেন বিশাল বিশাল ঢেউ খেলা করছে। উন্মত্ত পদ্মা কিংবা মেঘনার রূপ ক্ষণিকের জন্য হলেও এ জায়গায় এসে নগরবাসী প্রত্যক্ষ করতে পারত।

মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গেপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারী অবস্থায় বিরাজ করছে। এ কারণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারী অথবা মাঝারী থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসেবে আজ দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে ১২১ মিলিমিটার। একই সময় এই বৃষ্টি কেবল ঢাকায় নয়, আশপাশসহ বেশ কয়েকটি জেলায় হয়েছে। টাঙ্গাইলে এর পরিমাণ ছিল ৬৩ মিলিমিটার। রাজশাহীতে ১৬, চুয়াডাঙ্গায় ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

এর আগে গতকাল বুধবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে বৃষ্টি হয় ২৩.৬ মিলিমিটার।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন বলেন, ঢাকায় চলতি মৌসুমে স্বল্প সময়ে এত বৃষ্টি হয়নি। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় রয়েছে। এ কারণে সারা দেশে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

এর আগে, গত ২৫ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৬ জুলাই দুপুর পর্যন্ত রাজধানীতে বৃষ্টি হয়েছে অস্বাভাবিক। আর এই বৃষ্টিতে নগরীর একটি বড় অংশ তলিয়ে সৃষ্টি হয় জলজটের। ওই সময় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলে তা সিটি করপোরেশনের আয়ত্বের মধ্যে থাকে। এর বেশি হলে তা সিটির সক্ষমতার বাইরে চলে যায়। আর ওই বৃষ্টিপাত ছিল এর চেয়ে বেশি। এর ফলে জলজট তৈরি হয়।

আবহাওয়া চিত্রের সংক্ষিপ্তসারে বলা হয়েছে, মৌসুমী বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে।