ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
টাকার পাহাড় গড়েছেন তারা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে শেখ হাসিনা: সেলিমা রহমান ভারতে থাকার বৈধ মেয়াদ শেষ, কী ঘটবে শেখ হাসিনার ভাগ্যে ভারতে ‘এক দেশ এক ভোট’ কি সত্যিই হবে পুলিশের কাজ পুলিশকে দিয়েই করাতে হবে, আইন হাতে তুলে নেওয়া যাবে না জাতিসংঘ অধিবেশন নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে ড. ইউনূসের বৈশ্বিক-আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক জরুরি: বাইডেন ইলিশের দাম কমছে না কেন বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের মধ্যে হাতাহাতি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের মধ্যে হাতাহাতি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন

দেশি মাছ রক্ষায় হবিগঞ্জে ১০ অভয়াশ্রম

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ দেশের নদনদী ও খালবিলে এক সময় প্রচুর নানা প্রজাতির দেশি মাছ পাওয়া যেত। নানা কারণে এসব মাছের উৎপাদন কমে গেছে। কোনো কোনো মাছ বিলুপ্তির পথে। এসব মাছ রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে হবিগঞ্জ মৎস্য বিভাগ। চারটি স্থানকে ঘোষণা করা হয়েছে দেশি মাছের অভয়াশ্রম। এখানে মাছ শিকার না করায় মাছ উৎপাদন বেড়েছে। প্রায় হারিয়ে গিয়েছিল এমন অনেক প্রজাতির মাছও পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া আরও ছয়টি স্থানকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হচ্ছে।
অভয়াশ্রমগুলো হলো জেলার নবীগঞ্জের কসবা ফেরি নদী, লাখাইয়ের কিরানী বিল, বানিয়াচংয়ের পিরানী বিল ও আজমিরীগঞ্জের সুকড়িবাড়ী খাল। এছাড়া আরও ছয়টি গভীর জলাশয়কে এ ধরনের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা দেয়া হচ্ছে।
জেলার বাহুবল উপজেলার গুঙ্গিয়াজুরী হাওর এলাকার রউয়াইল গ্রামের শ্রীকান্ত সরকার বলেন, এক সময় হাওরে প্রচুর দেশি মাছ পাওয়া যেত। এর মধ্যে রানী মাছ অন্যতম। দিন দিন এ মাছটি হারিয়ে যাচ্ছিল। এখন এ মাছ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, সাধারণত জলাশয়ের তলদেশে পরিষ্কার পানিতে এদের বাস। ঘোলা পানিতেও এ মাছ কখনও কখনও দেখা যায়। এতে অবশ্য মাছের রঙ কিছুটা ফ্যাকাশে হয়। আরও জানান, সিলেট, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম অঞ্চলে এ মাছের বিস্তৃতি রয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহ এনামুুুর রহমান জানান, হবিগঞ্জ হাওরে রানী বা বউ মাছের বিচরণ ছিল। এগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও সুস্বাদু। এর পুষ্টিগুণও ভালো। বাংলাদেশের মানুষ এ মাছ পছন্দ করে। তবে হাওরে ইজারাদাররা নির্বিবাদে মাছ শিকার, প্রাকৃতিক বিবর্তন এবং প্রজনন কেন্দ্র ধ্বংস করায় মাছটি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছিল। বিশেষ করে শুকনো মৌসুমে খাল-বিল শুকিয়ে মাছ আহরণ করায় মা মাছের অবশিষ্টও আর থাকত না। তবে ইদানীং এ মাছের দেখা মিলছে নিয়মিত। সরকারের মৎস্য অভয়াশ্রম গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে মাছটিকে বাঁচিয়ে রাখার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রক্ষায় জলমহাল খনন, নির্বিবাদে মাছ শিকার বন্ধ এবং প্রজনন ক্ষেত্র রক্ষার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধিও প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও পিএইচডি গবেষক সুভাষ চন্দ্র দেব জানান, অঞ্চলভেদে রানী মাছকে বেতি, বৌমাছ, পুতুল মাছ, বেতাঙ্গী, বেত্রাঙ্গী, বেটি, বুকতিয়া ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। সিপ্রিনিডিবর্গের অধীন কোবিটিডি গোত্রভুক্ত এ মাছের বৈজ্ঞানিক নাম বেটিয়া ডরিও। চলনবিল এলাকায় এর নিকটতম আরেকটি প্রজাতি বেটিয়া লোহাচিটা দেখা যায়। স্থানীয়ভাবে এরা বউ-রানী মাছ নামে সুপরিচিত।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

টাকার পাহাড় গড়েছেন তারা

দেশি মাছ রক্ষায় হবিগঞ্জে ১০ অভয়াশ্রম

আপডেট টাইম : ০১:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ দেশের নদনদী ও খালবিলে এক সময় প্রচুর নানা প্রজাতির দেশি মাছ পাওয়া যেত। নানা কারণে এসব মাছের উৎপাদন কমে গেছে। কোনো কোনো মাছ বিলুপ্তির পথে। এসব মাছ রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে হবিগঞ্জ মৎস্য বিভাগ। চারটি স্থানকে ঘোষণা করা হয়েছে দেশি মাছের অভয়াশ্রম। এখানে মাছ শিকার না করায় মাছ উৎপাদন বেড়েছে। প্রায় হারিয়ে গিয়েছিল এমন অনেক প্রজাতির মাছও পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া আরও ছয়টি স্থানকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হচ্ছে।
অভয়াশ্রমগুলো হলো জেলার নবীগঞ্জের কসবা ফেরি নদী, লাখাইয়ের কিরানী বিল, বানিয়াচংয়ের পিরানী বিল ও আজমিরীগঞ্জের সুকড়িবাড়ী খাল। এছাড়া আরও ছয়টি গভীর জলাশয়কে এ ধরনের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা দেয়া হচ্ছে।
জেলার বাহুবল উপজেলার গুঙ্গিয়াজুরী হাওর এলাকার রউয়াইল গ্রামের শ্রীকান্ত সরকার বলেন, এক সময় হাওরে প্রচুর দেশি মাছ পাওয়া যেত। এর মধ্যে রানী মাছ অন্যতম। দিন দিন এ মাছটি হারিয়ে যাচ্ছিল। এখন এ মাছ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, সাধারণত জলাশয়ের তলদেশে পরিষ্কার পানিতে এদের বাস। ঘোলা পানিতেও এ মাছ কখনও কখনও দেখা যায়। এতে অবশ্য মাছের রঙ কিছুটা ফ্যাকাশে হয়। আরও জানান, সিলেট, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম অঞ্চলে এ মাছের বিস্তৃতি রয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহ এনামুুুর রহমান জানান, হবিগঞ্জ হাওরে রানী বা বউ মাছের বিচরণ ছিল। এগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও সুস্বাদু। এর পুষ্টিগুণও ভালো। বাংলাদেশের মানুষ এ মাছ পছন্দ করে। তবে হাওরে ইজারাদাররা নির্বিবাদে মাছ শিকার, প্রাকৃতিক বিবর্তন এবং প্রজনন কেন্দ্র ধ্বংস করায় মাছটি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছিল। বিশেষ করে শুকনো মৌসুমে খাল-বিল শুকিয়ে মাছ আহরণ করায় মা মাছের অবশিষ্টও আর থাকত না। তবে ইদানীং এ মাছের দেখা মিলছে নিয়মিত। সরকারের মৎস্য অভয়াশ্রম গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে মাছটিকে বাঁচিয়ে রাখার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রক্ষায় জলমহাল খনন, নির্বিবাদে মাছ শিকার বন্ধ এবং প্রজনন ক্ষেত্র রক্ষার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধিও প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও পিএইচডি গবেষক সুভাষ চন্দ্র দেব জানান, অঞ্চলভেদে রানী মাছকে বেতি, বৌমাছ, পুতুল মাছ, বেতাঙ্গী, বেত্রাঙ্গী, বেটি, বুকতিয়া ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। সিপ্রিনিডিবর্গের অধীন কোবিটিডি গোত্রভুক্ত এ মাছের বৈজ্ঞানিক নাম বেটিয়া ডরিও। চলনবিল এলাকায় এর নিকটতম আরেকটি প্রজাতি বেটিয়া লোহাচিটা দেখা যায়। স্থানীয়ভাবে এরা বউ-রানী মাছ নামে সুপরিচিত।