ঢাকা , বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাল্যবিয়ে ঠেকালো তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ অনেকটা হেসে খেলেই তার সহপাঠিদের সাথে সময় পার করছিল শিশুটি। অবসরে পুতুল খেলা, কানামাছি, ইছিং বিছিং আরো কতো সব খেলা নিয়ে সারাক্ষণই মেতে থাকতো সে।

কিন্তু মেঘের ঘনঘটায় আর বাবার আর্থিক দৈন্যতায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তার। শুক্রবার বর পক্ষের সাথে বিয়ের সব ধরণের আয়োজন প্রায় শেষ। শিশুটি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।

বিয়ের খবর শুনে অসহায় হয়ে ছুটে যায় তার প্রিয় প্রধান শিক্ষকের কাছে। হয়তো কোন সমাধান হবে। প্রধান শিক্ষকও তার কথা শুনলেন। সিদ্ধান্ত নিলেন স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে শিশুটির বাল্যবিবাহের হাত থেকে রক্ষা করার।

যেই ভাবা সেই কাজ। যোগাযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মো. মাহাবুব আলমের সাথে। সর্বশেষ বুধবার লোহাগাড়ার চুনতি এলাকায় ১০বছর বয়সী ওই শিশুর বিয়ে বন্ধ হয় তার একান্ত হস্তক্ষেপে।

সেই সাথে বাল্যবিবাহ দেয়ার চেষ্টা করায় শিশুটির বাবা মোহাম্মদ আলী ও নাসির মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে ১লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হলেও ওই জরিমানা শিশুটির শিক্ষা ব্যয় হিসেবে তার নামে ব্যাংকে জমা রাখা হয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওসমানুল হক জানান, মঙ্গলবার ওই ছাত্রী বিদ্যালয়ে এসে তাকে জোর করে বিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়ে কান্না করতে থাকে। বিয়ের উপহার হিসেবে ছাত্রীটিকে বরপক্ষ থেকে এক জোড়া সোনার কানের দুল উপহার দেয়া হয়েছে তখন সে দেখায়। ছাত্রীর মুখে এই ঘটনা শুনে তিনি সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি ইউএনওকে জানালে সমাধান হয়।

ইউএনও মো. মাহাবুব আলম বলেন, বাল্যবিবাহ দেওয়ার চেষ্টা করায় শিশুটির বাবাসহ দুজনকে আটক করা হয়। দারিদ্র্যের কারণে মেয়ের বিয়ে ঠিক করেন বলে শিশুটির বাবা স্বীকার করেছেন।

পরে মেয়েটি প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না—এই মর্মে মুচলেকা নিয়ে বাবা নাসির মিয়াকে এক লাখ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ওই টাকা শিক্ষা ব্যয়ের জন্য শিশুটির নামে ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা হবে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

বাল্যবিয়ে ঠেকালো তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী

আপডেট টাইম : ০২:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ অনেকটা হেসে খেলেই তার সহপাঠিদের সাথে সময় পার করছিল শিশুটি। অবসরে পুতুল খেলা, কানামাছি, ইছিং বিছিং আরো কতো সব খেলা নিয়ে সারাক্ষণই মেতে থাকতো সে।

কিন্তু মেঘের ঘনঘটায় আর বাবার আর্থিক দৈন্যতায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তার। শুক্রবার বর পক্ষের সাথে বিয়ের সব ধরণের আয়োজন প্রায় শেষ। শিশুটি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।

বিয়ের খবর শুনে অসহায় হয়ে ছুটে যায় তার প্রিয় প্রধান শিক্ষকের কাছে। হয়তো কোন সমাধান হবে। প্রধান শিক্ষকও তার কথা শুনলেন। সিদ্ধান্ত নিলেন স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে শিশুটির বাল্যবিবাহের হাত থেকে রক্ষা করার।

যেই ভাবা সেই কাজ। যোগাযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মো. মাহাবুব আলমের সাথে। সর্বশেষ বুধবার লোহাগাড়ার চুনতি এলাকায় ১০বছর বয়সী ওই শিশুর বিয়ে বন্ধ হয় তার একান্ত হস্তক্ষেপে।

সেই সাথে বাল্যবিবাহ দেয়ার চেষ্টা করায় শিশুটির বাবা মোহাম্মদ আলী ও নাসির মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে ১লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হলেও ওই জরিমানা শিশুটির শিক্ষা ব্যয় হিসেবে তার নামে ব্যাংকে জমা রাখা হয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওসমানুল হক জানান, মঙ্গলবার ওই ছাত্রী বিদ্যালয়ে এসে তাকে জোর করে বিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়ে কান্না করতে থাকে। বিয়ের উপহার হিসেবে ছাত্রীটিকে বরপক্ষ থেকে এক জোড়া সোনার কানের দুল উপহার দেয়া হয়েছে তখন সে দেখায়। ছাত্রীর মুখে এই ঘটনা শুনে তিনি সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি ইউএনওকে জানালে সমাধান হয়।

ইউএনও মো. মাহাবুব আলম বলেন, বাল্যবিবাহ দেওয়ার চেষ্টা করায় শিশুটির বাবাসহ দুজনকে আটক করা হয়। দারিদ্র্যের কারণে মেয়ের বিয়ে ঠিক করেন বলে শিশুটির বাবা স্বীকার করেছেন।

পরে মেয়েটি প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না—এই মর্মে মুচলেকা নিয়ে বাবা নাসির মিয়াকে এক লাখ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ওই টাকা শিক্ষা ব্যয়ের জন্য শিশুটির নামে ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা হবে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার।