ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
টাকার পাহাড় গড়েছেন তারা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে শেখ হাসিনা: সেলিমা রহমান ভারতে থাকার বৈধ মেয়াদ শেষ, কী ঘটবে শেখ হাসিনার ভাগ্যে ভারতে ‘এক দেশ এক ভোট’ কি সত্যিই হবে পুলিশের কাজ পুলিশকে দিয়েই করাতে হবে, আইন হাতে তুলে নেওয়া যাবে না জাতিসংঘ অধিবেশন নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে ড. ইউনূসের বৈশ্বিক-আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক জরুরি: বাইডেন ইলিশের দাম কমছে না কেন বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের মধ্যে হাতাহাতি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের মধ্যে হাতাহাতি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন

হাতির বিষ্ঠাও লাখ টাকা

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ কথায় আছে, হাতি মরলেও লাখ টাকা, বাচঁলেও লাখ টাকা! আর হাতির বিষ্ঠা থেকেও পাওয়া যায় আরও কয়েক লাখ টাকা। শুনলে অবাক হবেন। কিন্তু বাস্তবে সত্যি। থাইল্যান্ডে হাতির বিষ্ঠাকে সেদ্ধ করে তৈরি করা হয় নানান জিনিস, যা ব্যবহার করা হয় নানান কাজে।

দুনিয়ার পর্যটক জনপ্রিয় দেশগুলোর মধ্যে রাজা ভূমিবলের দেশ থাইল্যান্ড একটি। আর পর্যটকদের  আকর্ষিত করতে যা দরকার, সব ব্যবস্থাই রাখা আছে। টাকার মেশিন গাড়িতে করে ঘুরিয়ে পর্যটকদের ব্যাংক সেবা দেয়া হয়। গাড়ির মধ্যেই ব্যাংক-এটিএম!

দুনিয়া জুড়ে থাই খাবারের অনেক সুনামও রয়েছে। কিছু কিছু খাবারে চিনির ব্যবহার আর ওদের যে একটা নিজস্ব মসলা আছে সেটা হয়তো আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। তবে পাপায়া- সালাদ আর টম-ইয়াম স্যুপের ব্যাপারটা কিন্তু আলাদা। আহ্‌! জিহ্বায় পানি আসে! আরও  আছে রেড, ইয়োলো ও মাসামান কারি। এইগুলো ঝালজাতীয় খাবার, খেতেও অনেক সুস্বাদু ।

আমার পরিচিত এক জার্মান ছাত্র, ছুটির সময়ে কাজ করে অর্জিত আয় থেকে খরচ করার পরও  একটা অংশ জমা করে। তার স্বপ্ন হলো থাইল্যান্ড, এশিয়া ভ্রমণে যাবে। ব্যাপারগুলো আমার কাছে নতুন ও ভিন্নরকম অভিজ্ঞতা।

পরিকল্পনা হলো থাইল্যান্ডের উত্তরের ‘চিয়াং মাই’ শহরে ঘুরতে যাওয়ার। বাস, ট্রেন টিকেটের দর-দামের যাচাই  করছিলাম। পরে লম্বা যাত্রা আর  সময় কম- এটা ভেবে থাইল্যান্ডের ‘নক এয়ার’ নামক বিমানে ব্যাংককের ডন মুয়াং এয়ারপোর্ট থেকে উড়াল দেই।

মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই বিমানের পাইলট বিমান অবতরণের কথা জানিয়ে কেবিন ক্রু’দের হাঁটাহাটি না করে বসে পড়ার জন্যে সতর্ক করে দিলেন। এ যেন উঠলাম আর পৌঁছে গেলাম!

‘চিয়াং মাই’ শহরে আপনাকে স্বাগতম। ইংরেজিতে এয়ারপোর্টের প্রবেশ পথে লেখা ছিলো। সাথে ছোট-বড় কোনও লাগেজ না থাকায় এয়ারপোর্ট থেকে হেঁটেই আধ ঘণ্টায় পৌঁছে গেলাম হোটেলে।

রাতে কয়েকটা ভ্রমণ এজেন্সি যাচাই-বাছাই করে তার একটিতে ‘চিয়াং মাই ট্যুর’ বুক করে নিলাম। সকল ৭টায় গাড়ি আসবে, হোটেল থেকে উঠাবে, চিয়াং মাই শহরে যেসব দর্শনীয় স্থান আছে,  সেগুলোতে ওরা নিয়ে যাবে।

আমার বুকিংয়ের মধ্যে আরও যেগুলো ছিল তা হচ্ছে, হাতি ও বাঁশের নৌকায় চড়া, জঙ্গলে হাঁটা, জিপ লাইন (কেবল-তারের মাধ্যমে এক পাশ থেকে আরেক পাশে যাওয়া) ইত্যাদি। দুপুরে খাওয়ার জন্যে ছিল বুফে আর  তারপর যেখানে হাতির বিষ্ঠা থেকে তৈরি করা হয় নানান জিনিস, সেই জায়গায় ভ্রমণ করা।

বুক করা উল্লেখিত জিনিসের অনেকগুলোই দেখা-চড়া প্রায় শেষ। দুপুরের খাওয়ার পরে ভ্রমণ এজেন্সির গাড়ি নিয়ে যাবে হাতির বিষ্ঠা পার্কে, আর সেখানে গিয়েই চোখ ঘুরলো।

দেখলাম বিষ্ঠা পার্কে কর্মরত থাই মহিলারা এক ধরনের বড়ো বড়ো পাতিলে করে বিষ্ঠাকে সেদ্ধ করছেন জীবাণুমুক্ত করার জন্যে। সেদ্ধ হয়ে যাওয়ার পরে একজন আমাকে বলছিলেন, এখন এটাকে হাতে নেওয়া যাবে, খেলা করা যাবে। এটা এখন জীবাণুমুক্ত।

তারপর এভাবেই বিষ্ঠাকে রঙ করে শুকিয়ে পরে তৈরি করা হয় পেপার, বই-খাতা, চিঠির খাম, পোস্ট কার্ডসহ আরও নানান জিনিস, যা ব্যবহার করা হয় নানান কাজে।

আসলে পুরো ব্যাপারটা হচ্ছে রিসাইক্লিং, মানে পুনর্ব্যবহার ও পর্যটক আকর্ষণ করা। আমাদের দেশে পুনর্ব্যবহারের ব্যাপারটা এখনও খুব কমই মনে হয়। হয়তো বা আমরা সম্পূর্ণ নতুন জিনিস ব্যবহার করতে পছন্দ করি বলে। থাইল্যান্ড, দুবাই কিংবা জার্মানিতে হাতের ফেলে দেওয়া ছোট্ট একটা  কাগজের টুকরা থেকে শুরু করে খেলনা-ফেলনা সবকিছুরই পুনর্ব্যবহার করা হয়।

এসকল  দেশে সরকারি-বেসরকারি কিংবা নিজ উদ্যোগে অনেকেই এই পুনর্ব্যবহারের ব্যবসায়  জড়িত। গড়ে তোলা হয়েছে ফেলে দেওয়া জিনিস পুনর্ব্যবহার করে নতুন করে তৈরির কারখানা। এতে করে পরিবেশ দূষণমুক্ত, অর্থ উপার্জনসহ হয়ে গেলো কর্মসংস্থানও।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

টাকার পাহাড় গড়েছেন তারা

হাতির বিষ্ঠাও লাখ টাকা

আপডেট টাইম : ১২:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ কথায় আছে, হাতি মরলেও লাখ টাকা, বাচঁলেও লাখ টাকা! আর হাতির বিষ্ঠা থেকেও পাওয়া যায় আরও কয়েক লাখ টাকা। শুনলে অবাক হবেন। কিন্তু বাস্তবে সত্যি। থাইল্যান্ডে হাতির বিষ্ঠাকে সেদ্ধ করে তৈরি করা হয় নানান জিনিস, যা ব্যবহার করা হয় নানান কাজে।

দুনিয়ার পর্যটক জনপ্রিয় দেশগুলোর মধ্যে রাজা ভূমিবলের দেশ থাইল্যান্ড একটি। আর পর্যটকদের  আকর্ষিত করতে যা দরকার, সব ব্যবস্থাই রাখা আছে। টাকার মেশিন গাড়িতে করে ঘুরিয়ে পর্যটকদের ব্যাংক সেবা দেয়া হয়। গাড়ির মধ্যেই ব্যাংক-এটিএম!

দুনিয়া জুড়ে থাই খাবারের অনেক সুনামও রয়েছে। কিছু কিছু খাবারে চিনির ব্যবহার আর ওদের যে একটা নিজস্ব মসলা আছে সেটা হয়তো আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। তবে পাপায়া- সালাদ আর টম-ইয়াম স্যুপের ব্যাপারটা কিন্তু আলাদা। আহ্‌! জিহ্বায় পানি আসে! আরও  আছে রেড, ইয়োলো ও মাসামান কারি। এইগুলো ঝালজাতীয় খাবার, খেতেও অনেক সুস্বাদু ।

আমার পরিচিত এক জার্মান ছাত্র, ছুটির সময়ে কাজ করে অর্জিত আয় থেকে খরচ করার পরও  একটা অংশ জমা করে। তার স্বপ্ন হলো থাইল্যান্ড, এশিয়া ভ্রমণে যাবে। ব্যাপারগুলো আমার কাছে নতুন ও ভিন্নরকম অভিজ্ঞতা।

পরিকল্পনা হলো থাইল্যান্ডের উত্তরের ‘চিয়াং মাই’ শহরে ঘুরতে যাওয়ার। বাস, ট্রেন টিকেটের দর-দামের যাচাই  করছিলাম। পরে লম্বা যাত্রা আর  সময় কম- এটা ভেবে থাইল্যান্ডের ‘নক এয়ার’ নামক বিমানে ব্যাংককের ডন মুয়াং এয়ারপোর্ট থেকে উড়াল দেই।

মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই বিমানের পাইলট বিমান অবতরণের কথা জানিয়ে কেবিন ক্রু’দের হাঁটাহাটি না করে বসে পড়ার জন্যে সতর্ক করে দিলেন। এ যেন উঠলাম আর পৌঁছে গেলাম!

‘চিয়াং মাই’ শহরে আপনাকে স্বাগতম। ইংরেজিতে এয়ারপোর্টের প্রবেশ পথে লেখা ছিলো। সাথে ছোট-বড় কোনও লাগেজ না থাকায় এয়ারপোর্ট থেকে হেঁটেই আধ ঘণ্টায় পৌঁছে গেলাম হোটেলে।

রাতে কয়েকটা ভ্রমণ এজেন্সি যাচাই-বাছাই করে তার একটিতে ‘চিয়াং মাই ট্যুর’ বুক করে নিলাম। সকল ৭টায় গাড়ি আসবে, হোটেল থেকে উঠাবে, চিয়াং মাই শহরে যেসব দর্শনীয় স্থান আছে,  সেগুলোতে ওরা নিয়ে যাবে।

আমার বুকিংয়ের মধ্যে আরও যেগুলো ছিল তা হচ্ছে, হাতি ও বাঁশের নৌকায় চড়া, জঙ্গলে হাঁটা, জিপ লাইন (কেবল-তারের মাধ্যমে এক পাশ থেকে আরেক পাশে যাওয়া) ইত্যাদি। দুপুরে খাওয়ার জন্যে ছিল বুফে আর  তারপর যেখানে হাতির বিষ্ঠা থেকে তৈরি করা হয় নানান জিনিস, সেই জায়গায় ভ্রমণ করা।

বুক করা উল্লেখিত জিনিসের অনেকগুলোই দেখা-চড়া প্রায় শেষ। দুপুরের খাওয়ার পরে ভ্রমণ এজেন্সির গাড়ি নিয়ে যাবে হাতির বিষ্ঠা পার্কে, আর সেখানে গিয়েই চোখ ঘুরলো।

দেখলাম বিষ্ঠা পার্কে কর্মরত থাই মহিলারা এক ধরনের বড়ো বড়ো পাতিলে করে বিষ্ঠাকে সেদ্ধ করছেন জীবাণুমুক্ত করার জন্যে। সেদ্ধ হয়ে যাওয়ার পরে একজন আমাকে বলছিলেন, এখন এটাকে হাতে নেওয়া যাবে, খেলা করা যাবে। এটা এখন জীবাণুমুক্ত।

তারপর এভাবেই বিষ্ঠাকে রঙ করে শুকিয়ে পরে তৈরি করা হয় পেপার, বই-খাতা, চিঠির খাম, পোস্ট কার্ডসহ আরও নানান জিনিস, যা ব্যবহার করা হয় নানান কাজে।

আসলে পুরো ব্যাপারটা হচ্ছে রিসাইক্লিং, মানে পুনর্ব্যবহার ও পর্যটক আকর্ষণ করা। আমাদের দেশে পুনর্ব্যবহারের ব্যাপারটা এখনও খুব কমই মনে হয়। হয়তো বা আমরা সম্পূর্ণ নতুন জিনিস ব্যবহার করতে পছন্দ করি বলে। থাইল্যান্ড, দুবাই কিংবা জার্মানিতে হাতের ফেলে দেওয়া ছোট্ট একটা  কাগজের টুকরা থেকে শুরু করে খেলনা-ফেলনা সবকিছুরই পুনর্ব্যবহার করা হয়।

এসকল  দেশে সরকারি-বেসরকারি কিংবা নিজ উদ্যোগে অনেকেই এই পুনর্ব্যবহারের ব্যবসায়  জড়িত। গড়ে তোলা হয়েছে ফেলে দেওয়া জিনিস পুনর্ব্যবহার করে নতুন করে তৈরির কারখানা। এতে করে পরিবেশ দূষণমুক্ত, অর্থ উপার্জনসহ হয়ে গেলো কর্মসংস্থানও।