ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হজের মর্যাদা ও বিধান কবুল হজের

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বরকতে মুসলিমের পাপ মোচন হয়। শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পায়। একনিষ্ঠভাবে সুন্নত মোতাবেক হজ আদায় করলে সে শয়তানের ভ্রান্তি থেকে নিরাপদ থাকবে। আর যার হজ শুদ্ধ হবে, তার জীবনও শুদ্ধ হবে। হজের নেয়ামত দান করার জন্য বান্দার কর্তব্য হলো,
তার রবের শোকর আদায় করা
প্রাপ্তবয়স্ক সামর্থ্যবান মুসলিমের ওপর জীবনে একবার পবিত্র বায়তুল্লাহর হজ করা ফরজ। বেশি হলে তা নফল হবে। যে ব্যক্তি ফরজ বা নফল হজ আদায়ের সুযোগ লাভ করে হজের যাবতীয় কর্মকা- পূর্ণাঙ্গভাবে পালন করে, আল্লাহ তাকে মহান নেয়ামত, সুউচ্চ মর্যাদা, বিশাল ক্ষমা ও প্রভূত প্রতিদান দিয়ে ধন্য করেন। হজ দ্বারা আল্লাহ যাকে অনুগ্রহ করেন তার সীমাহীন সন্তুষ্টি ও আনন্দ প্রকাশ করা উচিত। আল্লাহ বলেন, ‘বল, আল্লাহর দয়া ও মেহেরবানিতে। এরই প্রতি তারা যেন সন্তুষ্ট প্রকাশ করে। তারা যা সঞ্চয় করে তার চেয়ে এটাই শ্রেষ্ঠ।’ (সূরা ইউনুস : ৫৮)। কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হজের ফজিলতগুলো সে অর্জন করেছে বলেই তার এ আনন্দ। হজের আমলগুলো সম্পন্ন করা প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।’ (সূরা হজ : ৩৭)। হজের সৎকর্ম প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা যে কল্যাণ কর্ম সম্পাদন করো আল্লাহ তা জানেন।’ (সূরা বাকারা : ১৯৭)। অর্থাৎ তিনি এর প্রতিদান দেবেন।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘এক ওমরা থেকে আরেক ওমরার মধ্যবর্তী সময়ের জন্য কাফফারাস্বরূপ। আর কবুল হজের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া কিছু নয়।’ (বোখারি ও মুসলিম)। তিনি আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ করেছে, সেখানে কোনো পাপাচার ও অন্যায় কর্মে জড়িত থাকেনি, সে যেন তার মায়ের গর্ভ থেকে সদ্য জন্ম নিয়ে ফিরে এলো।’ (বোখারি ও মুসলিম)।
হজ ও ওমরা আদায়কারী ব্যক্তিরা আল্লাহর মেহমান। আর আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ সমাদরকারী। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘হজ ও ওমরা পালনকারীরা আল্লাহর মেহমান। তারা দোয়া করলে তিনি তা কবুল করেন। ক্ষমা চাইলে তাদের ক্ষমা করে দেন।’ (নাসাঈ)।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘হজ আদায়কারীকে ক্ষমা করা হয় এবং হজ পালনকারী যার জন্য ক্ষমা চায় তাকেও ক্ষমা করা হয়।’ (তাবারানি ও বাজ্জার)।
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ আরাফাত দিবসেই সবচেয়ে বেশি বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। সেদিন তিনি সমহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে কাছে আসেন। তাদের নিয়ে গৌরব করে ফেরেশতাদের বলেন, এরা কী চেয়েছে?’ (মুসলিম)।
হজের পুণ্য ও উপকারিতা আল্লাহ ছাড়া কেউ গণনা করতে পারবে না। আল্লাহ যার হজ কবুল করেন, তার পার্থিব ও পরকালীন প্রাপ্তির সীমা নেই।
আল্লাহ বলেন, ‘আর মানুষের মধ্যে হজের জন্য ঘোষণা প্রচার করো। তারা দূরদূরান্ত থেকে হেঁটে ও সব ধরনের কৃশকায় উটের পিঠে সওয়ার হয়ে তোমার কাছে আসবে। তাদের কল্যাণময় স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে।’ (সূরা হজ : ২৭-২৮)।
কবুল হজের বরকতে মুসলিমের পাপ মোচন হয়। শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পায়। একনিষ্ঠভাবে সুন্নত মোতাবেক হজ আদায় করলে সে শয়তানের ভ্রান্তি থেকে নিরাপদ থাকবে। আর যার হজ শুদ্ধ হবে, তার জীবনও শুদ্ধ হবে। হজের নেয়ামত দান করার জন্য বান্দার কর্তব্য হলো, তার রবের শোকর আদায় করা। তিনি হজের যাবতীয় ব্যবস্থা ও সামগ্রী তৈরি করে দিয়েছেন। স্থলপথ, জলপথ ও আকাশপথ সহজ করে দিয়েছেন। যুদ্ধকবলিত বিশ্বপরিস্থিতিতেও মক্কা ও মদিনার পবিত্র ভূমিকে নিরাপদ রেখেছেন। তাই তাঁর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে হবে।
আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং তারা যেন এ কাবা গৃহের মালিকের ইবাদত করে। যিনি তাদের ক্ষুধা থেকে মুক্ত করে আহার দিয়েছেন এবং ত্রাস থেকে নিরাপত্তা দান করেছেন।’ (সূরা কোরাইশ : ৩-৪)। ইবরাহিম (আ.) কর্তৃক নির্মিত বরকতময় প্রাচীন কাবাগৃহের জন্য শোকর আদায় করা মুসলিমের কর্তব্য। কাবাঘর দ্বীন ও দুনিয়ার অসংখ্য কল্যাণের কারণ। মানুষের জন্য তা রহমত। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ পবিত্র কাবাঘরকে মানুষের জন্য স্থিতিশীলতার ভিত্তি বানিয়েছেন।’ (সূরা মায়েদা : ৯৭)।
আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জিবরাঈল (আ.) ইবরাহিম (আ.) কে নিয়ে মিনায় পৌঁছলেন। মিনায় জোহর, আসর, মাগরিব, এশা ও ফজরের নামাজ আদায় করেন। তারপর মিনা থেকে তাকে নিয়ে আরাফায় যান। সেখানে দুই রাকাত নামাজ পড়েন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। পরে মুজদালিফায় এসে রাতযাপন করেন। একজন মুসলিম যতটুকু আগে পারে ঠিক তত আগেই সেখানে ফজর আদায় করেন। তারপর তাকে মিনায় নিয়ে যান। পাথর নিক্ষেপ করেন। মাথা মু-ন করেন। কোরবানি করেন। পরবর্তী সময় আল্লাহ মুহাম্মদ (সা.) এর কাছে ওহি প্রেরণ করে বলেন, ‘আপনি ইবরাহিমের দ্বীন অনুসরণ করুন, যিনি একনিষ্ঠ ছিলেন এবং পৌত্তলিক ও মোশরেক ছিলেন না।’ (সূরা নাহল : ১২৩)। (তাবরানি)।
যার ওপর হজ ফরজ হয়েছে তাকে হজের বিধান ও নীতিমালা জানতে হবে। যাতে তার হজ সঠিক ও শুদ্ধ হয়। হজের প্রধান কর্ম ও ভিত্তি হলো, ইহরামের নিয়ত করে হজের নির্ধারিত ভূমিতে প্রবেশ করা। আরাফায় অবস্থান করা। রাতে মুজদালিফায় অবস্থান করে তওয়াফে জিয়ারত করা। সাঈ করা। আরাফায় অবস্থান না করলে হজ হবে না। হজের কোনো রুকন ছেড়ে দিলে হজ সম্পন্ন হবে না।
হজের ওয়াজিবগুলোর মধ্যে আছে মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধা। সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফায় অবস্থান করা। মিনায় রাতযাপন করা। মধ্যরাত পর্যন্ত মুজদালিফায় থাকা। পাথর নিক্ষেপ করা। মাথা মু-ন করা। বিদায়ী তওয়াফ করা।
হজের সুন্নতের ক্ষেত্রেও মুসলিম সচেষ্ট থাকবে। জিকির, তেলাওয়াত, দানখয়রাত, মন্দ থেকে বিরত থাকাসহ যাবতীয় ইবাদত করে যে একনিষ্ঠভাবে হজ পালন করে তার জন্য সুসংবাদ। হজে নিষিদ্ধ সব বিষয় পরিহার করতে হবে। কেউ যদি অসৎ উদ্দেশ্য, কারও ক্ষতিসাধন বা কোনো অপকর্ম করার উদ্দেশ্যে হজে গমন করে তবে তার জন্য আল্লাহর ভয়াবহ শাস্তি অপেক্ষা করছে। ‘আল্লাহর পবিত্র স্থানগুলোর মর্যাদা দিলে তা অন্তরের তাকওয়ার পরিচায়ক।’ (সূরা হজ : ৩২)।

২৬ জিলকদ ১৪৩৮ হিজরি মসজিদে নববির জুমার খুতবার সংক্ষিপ্ত ভাষান্তর করেছেন মাহমুদুল হাসান জুনাইদ

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

হজের মর্যাদা ও বিধান কবুল হজের

আপডেট টাইম : ০৯:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অগাস্ট ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বরকতে মুসলিমের পাপ মোচন হয়। শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পায়। একনিষ্ঠভাবে সুন্নত মোতাবেক হজ আদায় করলে সে শয়তানের ভ্রান্তি থেকে নিরাপদ থাকবে। আর যার হজ শুদ্ধ হবে, তার জীবনও শুদ্ধ হবে। হজের নেয়ামত দান করার জন্য বান্দার কর্তব্য হলো,
তার রবের শোকর আদায় করা
প্রাপ্তবয়স্ক সামর্থ্যবান মুসলিমের ওপর জীবনে একবার পবিত্র বায়তুল্লাহর হজ করা ফরজ। বেশি হলে তা নফল হবে। যে ব্যক্তি ফরজ বা নফল হজ আদায়ের সুযোগ লাভ করে হজের যাবতীয় কর্মকা- পূর্ণাঙ্গভাবে পালন করে, আল্লাহ তাকে মহান নেয়ামত, সুউচ্চ মর্যাদা, বিশাল ক্ষমা ও প্রভূত প্রতিদান দিয়ে ধন্য করেন। হজ দ্বারা আল্লাহ যাকে অনুগ্রহ করেন তার সীমাহীন সন্তুষ্টি ও আনন্দ প্রকাশ করা উচিত। আল্লাহ বলেন, ‘বল, আল্লাহর দয়া ও মেহেরবানিতে। এরই প্রতি তারা যেন সন্তুষ্ট প্রকাশ করে। তারা যা সঞ্চয় করে তার চেয়ে এটাই শ্রেষ্ঠ।’ (সূরা ইউনুস : ৫৮)। কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হজের ফজিলতগুলো সে অর্জন করেছে বলেই তার এ আনন্দ। হজের আমলগুলো সম্পন্ন করা প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।’ (সূরা হজ : ৩৭)। হজের সৎকর্ম প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা যে কল্যাণ কর্ম সম্পাদন করো আল্লাহ তা জানেন।’ (সূরা বাকারা : ১৯৭)। অর্থাৎ তিনি এর প্রতিদান দেবেন।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘এক ওমরা থেকে আরেক ওমরার মধ্যবর্তী সময়ের জন্য কাফফারাস্বরূপ। আর কবুল হজের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া কিছু নয়।’ (বোখারি ও মুসলিম)। তিনি আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ করেছে, সেখানে কোনো পাপাচার ও অন্যায় কর্মে জড়িত থাকেনি, সে যেন তার মায়ের গর্ভ থেকে সদ্য জন্ম নিয়ে ফিরে এলো।’ (বোখারি ও মুসলিম)।
হজ ও ওমরা আদায়কারী ব্যক্তিরা আল্লাহর মেহমান। আর আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ সমাদরকারী। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘হজ ও ওমরা পালনকারীরা আল্লাহর মেহমান। তারা দোয়া করলে তিনি তা কবুল করেন। ক্ষমা চাইলে তাদের ক্ষমা করে দেন।’ (নাসাঈ)।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘হজ আদায়কারীকে ক্ষমা করা হয় এবং হজ পালনকারী যার জন্য ক্ষমা চায় তাকেও ক্ষমা করা হয়।’ (তাবারানি ও বাজ্জার)।
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ আরাফাত দিবসেই সবচেয়ে বেশি বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। সেদিন তিনি সমহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে কাছে আসেন। তাদের নিয়ে গৌরব করে ফেরেশতাদের বলেন, এরা কী চেয়েছে?’ (মুসলিম)।
হজের পুণ্য ও উপকারিতা আল্লাহ ছাড়া কেউ গণনা করতে পারবে না। আল্লাহ যার হজ কবুল করেন, তার পার্থিব ও পরকালীন প্রাপ্তির সীমা নেই।
আল্লাহ বলেন, ‘আর মানুষের মধ্যে হজের জন্য ঘোষণা প্রচার করো। তারা দূরদূরান্ত থেকে হেঁটে ও সব ধরনের কৃশকায় উটের পিঠে সওয়ার হয়ে তোমার কাছে আসবে। তাদের কল্যাণময় স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে।’ (সূরা হজ : ২৭-২৮)।
কবুল হজের বরকতে মুসলিমের পাপ মোচন হয়। শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পায়। একনিষ্ঠভাবে সুন্নত মোতাবেক হজ আদায় করলে সে শয়তানের ভ্রান্তি থেকে নিরাপদ থাকবে। আর যার হজ শুদ্ধ হবে, তার জীবনও শুদ্ধ হবে। হজের নেয়ামত দান করার জন্য বান্দার কর্তব্য হলো, তার রবের শোকর আদায় করা। তিনি হজের যাবতীয় ব্যবস্থা ও সামগ্রী তৈরি করে দিয়েছেন। স্থলপথ, জলপথ ও আকাশপথ সহজ করে দিয়েছেন। যুদ্ধকবলিত বিশ্বপরিস্থিতিতেও মক্কা ও মদিনার পবিত্র ভূমিকে নিরাপদ রেখেছেন। তাই তাঁর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে হবে।
আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং তারা যেন এ কাবা গৃহের মালিকের ইবাদত করে। যিনি তাদের ক্ষুধা থেকে মুক্ত করে আহার দিয়েছেন এবং ত্রাস থেকে নিরাপত্তা দান করেছেন।’ (সূরা কোরাইশ : ৩-৪)। ইবরাহিম (আ.) কর্তৃক নির্মিত বরকতময় প্রাচীন কাবাগৃহের জন্য শোকর আদায় করা মুসলিমের কর্তব্য। কাবাঘর দ্বীন ও দুনিয়ার অসংখ্য কল্যাণের কারণ। মানুষের জন্য তা রহমত। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ পবিত্র কাবাঘরকে মানুষের জন্য স্থিতিশীলতার ভিত্তি বানিয়েছেন।’ (সূরা মায়েদা : ৯৭)।
আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জিবরাঈল (আ.) ইবরাহিম (আ.) কে নিয়ে মিনায় পৌঁছলেন। মিনায় জোহর, আসর, মাগরিব, এশা ও ফজরের নামাজ আদায় করেন। তারপর মিনা থেকে তাকে নিয়ে আরাফায় যান। সেখানে দুই রাকাত নামাজ পড়েন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। পরে মুজদালিফায় এসে রাতযাপন করেন। একজন মুসলিম যতটুকু আগে পারে ঠিক তত আগেই সেখানে ফজর আদায় করেন। তারপর তাকে মিনায় নিয়ে যান। পাথর নিক্ষেপ করেন। মাথা মু-ন করেন। কোরবানি করেন। পরবর্তী সময় আল্লাহ মুহাম্মদ (সা.) এর কাছে ওহি প্রেরণ করে বলেন, ‘আপনি ইবরাহিমের দ্বীন অনুসরণ করুন, যিনি একনিষ্ঠ ছিলেন এবং পৌত্তলিক ও মোশরেক ছিলেন না।’ (সূরা নাহল : ১২৩)। (তাবরানি)।
যার ওপর হজ ফরজ হয়েছে তাকে হজের বিধান ও নীতিমালা জানতে হবে। যাতে তার হজ সঠিক ও শুদ্ধ হয়। হজের প্রধান কর্ম ও ভিত্তি হলো, ইহরামের নিয়ত করে হজের নির্ধারিত ভূমিতে প্রবেশ করা। আরাফায় অবস্থান করা। রাতে মুজদালিফায় অবস্থান করে তওয়াফে জিয়ারত করা। সাঈ করা। আরাফায় অবস্থান না করলে হজ হবে না। হজের কোনো রুকন ছেড়ে দিলে হজ সম্পন্ন হবে না।
হজের ওয়াজিবগুলোর মধ্যে আছে মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধা। সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফায় অবস্থান করা। মিনায় রাতযাপন করা। মধ্যরাত পর্যন্ত মুজদালিফায় থাকা। পাথর নিক্ষেপ করা। মাথা মু-ন করা। বিদায়ী তওয়াফ করা।
হজের সুন্নতের ক্ষেত্রেও মুসলিম সচেষ্ট থাকবে। জিকির, তেলাওয়াত, দানখয়রাত, মন্দ থেকে বিরত থাকাসহ যাবতীয় ইবাদত করে যে একনিষ্ঠভাবে হজ পালন করে তার জন্য সুসংবাদ। হজে নিষিদ্ধ সব বিষয় পরিহার করতে হবে। কেউ যদি অসৎ উদ্দেশ্য, কারও ক্ষতিসাধন বা কোনো অপকর্ম করার উদ্দেশ্যে হজে গমন করে তবে তার জন্য আল্লাহর ভয়াবহ শাস্তি অপেক্ষা করছে। ‘আল্লাহর পবিত্র স্থানগুলোর মর্যাদা দিলে তা অন্তরের তাকওয়ার পরিচায়ক।’ (সূরা হজ : ৩২)।

২৬ জিলকদ ১৪৩৮ হিজরি মসজিদে নববির জুমার খুতবার সংক্ষিপ্ত ভাষান্তর করেছেন মাহমুদুল হাসান জুনাইদ