ঢাকা , শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জাকের-শামীমকে যে পুরস্কার দিতে বললেন উইন্ডিজ কিংবদন্তি স্ত্রীর করা যৌতুক মামলায় পুলিশ স্বামী কারাগারে হাইকোর্টে উপদেষ্টা হাসান আরিফের জানাজা অনুষ্ঠিত যারা দুর্দিনে দলের জন্য কাজ করেছে, তাদের মূল্যায়ন করা হবে: টুকু আবাসন ব্যবসায় মন্দা দ্য ইকোনমিস্টকে ড. ইউনূস ‘আমি আমার নিয়মিত কাজে ফিরে যেতে পারলে খুশি হবো’ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা নিয়ে ভারতের তথ্য বিভ্রান্তিকর টঙ্গীতে বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক নদীতে, বিকল্প পথে চলার অনুরোধ অর্থহীন’ এর সাবেক গিটারিস্ট পিকলু মারা গেছেন নোয়াখালী জেলা আমীর ইসহাক খন্দকার ‘ভারতের আশেপাশের দেশগুলোর কোনোটির সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক নেই’

জঙ্গিবাদবিরোধী ফতোয়া, ঢাকায় আসছেন মদিনার ইমাম : মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ

 বাংলাদেশে জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে মদিনা মসজিদের ইমামকে নভেম্বর মাসে ঢাকায় আনার চেষ্টা হচ্ছে৷ জানিয়েছেন জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লাখো আলেমের ফতোয়া প্রকাশকারী দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ৷

শনিবার ঢাকায় এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ১ হাজার ৭৫০ ইসলামি চিন্তাবিদ– আলেম এবং মুফতির ফতোয়া প্রকাশ করা হয়৷

এ ফতোয়ায় ৯ হাজার ২০ জন নারী আলেমও স্বাক্ষর করেন৷ শুধু তাই নয়, মসদিদের ইমাম, মাদ্রাসার শিক্ষক থেকে শুরু করে হেফাজতে ইসলামের কয়েকজন শীর্ষ নেতাও এ ফতোয়ায় স্বাক্ষর করেছেন৷ ১০টি প্রশ্নের উত্তরে যে জবাব পাওয়া গেছে, তাই হলো এদের ফতোয়া৷

ফতোয়ার উদ্যোক্তা বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার প্রধান এবং শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ বলেন, ফতোয়ায় জঙ্গিবাদ, আত্মঘাতী হামলা এবং ইসলামের নামে মানুষ হত্যাকে হারাম বলে ঘোষণা করা হয়েছে৷ ইসলামে জঙ্গি এবং উগ্রবাদের কোনো ঠাঁই নাই৷ যারা এটা করেন, তারা ইসলামের কেউ নন৷

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা মনে করছেন জঙ্গিবাদের মাধ্যমে


জান্নাতে যাবেন, তারা ভুল করছেন৷ জান্নাতে তাদের ঠাঁই হবে না৷ বরং এই জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ করতে গিয়ে যদি কেউ মারা যান, তাহলে তিনি শহিদের মর্যাদা পাবেন৷

বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা এখন সারাদেশে এই ফতোয়ার মূল কথা ছড়িয়ে দিতে চায়৷ বাংলাদেশ সরকার ছাড়াও ফতোয়ার ইংরেজি অনুবাদ জাতিসংঘ এবং ওআইসিতে পাঠানো হবে৷

এছাড়া সারাদেশে ইমামদের মাধ্যমে মসজিদে এবং মাদ্রাসার শিক্ষকদের মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ফতোয়ার কথা জানানো হবে৷ এ জন্য ফতোয়ার সংক্ষিপ্ত বই এবং লিফলেট ছাপানোর পরিকল্পনাও হয়েছে৷ একইসঙ্গে বছরব্যাপী ওয়াজ ও সমাবেশের মাধ্যমে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আলোমদের এ অবস্থানের কথা তুলে ধরা হবে৷

মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ জানান, আগামী নভেম্বরে ঢাকায় একটি বড় ধরনের ইসলামী সমাবেশ করার পরিকল্পনা আছে আমাদের৷ ওই সমাবেশে আমরা মুসলমানদের সবচেয়ে পবিত্র মসজিদ মদিনা মসজিদের ইমামকে আনার পরিকল্পনা করছি৷

তিনি বলেন, আমরা এরই মধ্যে তার সঙ্গে কথাও বলেছি৷ তিনি আসতে সম্মত আছেন৷ তবে সরকারের পক্ষ থেকে তাকে দাওয়াত দিতে হবে, যেহেতু তিনি সেখানে সরকারি পদে আছেন৷ আমরা আশা করছি, সরকারের পক্ষ থেকে দাওয়াত পাঠাতে পারবো৷

তার কথায়, মদিনা মসজিদের ইমাম ঢাকায় আসলে তিনি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ইসলামের অবস্থান তুলে ধরবেন৷ বলা বাহুল্য, এতে ব্যাপক ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া হবে৷

জঙ্গিবাদবিরোধী এ প্রচারণার অর্থ কোথা থেকে আসবে জানতে চাইলে শোলাকিয়ার এই ইমাম বলেন, আমরা সম্পদশালীদের কাছে অর্থ সহায়তার আহ্বান জানিয়েছি৷ আমরা মনে করি, এ কাজে অংশ নেয়া সওয়াবের৷ এছাড়া আমরা সরকারের কাছেও অর্থ সহায়তা চাইবো৷ আশা করি, সরকারের সহায়তা পাবো আমরা৷

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে গত বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৪৬টি হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা৷ এতে নিহত হয়েছেন মোট ৪৮ জন৷ এদের মধ্যে দু’জন পুলিশ সদস্য এবং এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীও আছেন৷

এছাড়া গত তিন মাসে হত্যা করা হয়েছে ১১ জনকে৷ এসব হামলার অনেকগুলোরই দায় স্বীকার করেছে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস এবং আল কায়দার ভারতীয় উপ-মহাদেশের কথিত বাংলাদেশ শাখা আনসার আল-ইসলাম৷

সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য বাংলাদেশে আইএসের উপস্থিতি এখনো অস্বীকার করা হচ্ছে৷ সূত্র : ডয়চে ভেলে

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

জাকের-শামীমকে যে পুরস্কার দিতে বললেন উইন্ডিজ কিংবদন্তি

জঙ্গিবাদবিরোধী ফতোয়া, ঢাকায় আসছেন মদিনার ইমাম : মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ

আপডেট টাইম : ০৪:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুন ২০১৬

 বাংলাদেশে জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে মদিনা মসজিদের ইমামকে নভেম্বর মাসে ঢাকায় আনার চেষ্টা হচ্ছে৷ জানিয়েছেন জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লাখো আলেমের ফতোয়া প্রকাশকারী দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ৷

শনিবার ঢাকায় এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ১ হাজার ৭৫০ ইসলামি চিন্তাবিদ– আলেম এবং মুফতির ফতোয়া প্রকাশ করা হয়৷

এ ফতোয়ায় ৯ হাজার ২০ জন নারী আলেমও স্বাক্ষর করেন৷ শুধু তাই নয়, মসদিদের ইমাম, মাদ্রাসার শিক্ষক থেকে শুরু করে হেফাজতে ইসলামের কয়েকজন শীর্ষ নেতাও এ ফতোয়ায় স্বাক্ষর করেছেন৷ ১০টি প্রশ্নের উত্তরে যে জবাব পাওয়া গেছে, তাই হলো এদের ফতোয়া৷

ফতোয়ার উদ্যোক্তা বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার প্রধান এবং শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ বলেন, ফতোয়ায় জঙ্গিবাদ, আত্মঘাতী হামলা এবং ইসলামের নামে মানুষ হত্যাকে হারাম বলে ঘোষণা করা হয়েছে৷ ইসলামে জঙ্গি এবং উগ্রবাদের কোনো ঠাঁই নাই৷ যারা এটা করেন, তারা ইসলামের কেউ নন৷

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা মনে করছেন জঙ্গিবাদের মাধ্যমে


জান্নাতে যাবেন, তারা ভুল করছেন৷ জান্নাতে তাদের ঠাঁই হবে না৷ বরং এই জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ করতে গিয়ে যদি কেউ মারা যান, তাহলে তিনি শহিদের মর্যাদা পাবেন৷

বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা এখন সারাদেশে এই ফতোয়ার মূল কথা ছড়িয়ে দিতে চায়৷ বাংলাদেশ সরকার ছাড়াও ফতোয়ার ইংরেজি অনুবাদ জাতিসংঘ এবং ওআইসিতে পাঠানো হবে৷

এছাড়া সারাদেশে ইমামদের মাধ্যমে মসজিদে এবং মাদ্রাসার শিক্ষকদের মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ফতোয়ার কথা জানানো হবে৷ এ জন্য ফতোয়ার সংক্ষিপ্ত বই এবং লিফলেট ছাপানোর পরিকল্পনাও হয়েছে৷ একইসঙ্গে বছরব্যাপী ওয়াজ ও সমাবেশের মাধ্যমে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আলোমদের এ অবস্থানের কথা তুলে ধরা হবে৷

মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ জানান, আগামী নভেম্বরে ঢাকায় একটি বড় ধরনের ইসলামী সমাবেশ করার পরিকল্পনা আছে আমাদের৷ ওই সমাবেশে আমরা মুসলমানদের সবচেয়ে পবিত্র মসজিদ মদিনা মসজিদের ইমামকে আনার পরিকল্পনা করছি৷

তিনি বলেন, আমরা এরই মধ্যে তার সঙ্গে কথাও বলেছি৷ তিনি আসতে সম্মত আছেন৷ তবে সরকারের পক্ষ থেকে তাকে দাওয়াত দিতে হবে, যেহেতু তিনি সেখানে সরকারি পদে আছেন৷ আমরা আশা করছি, সরকারের পক্ষ থেকে দাওয়াত পাঠাতে পারবো৷

তার কথায়, মদিনা মসজিদের ইমাম ঢাকায় আসলে তিনি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ইসলামের অবস্থান তুলে ধরবেন৷ বলা বাহুল্য, এতে ব্যাপক ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া হবে৷

জঙ্গিবাদবিরোধী এ প্রচারণার অর্থ কোথা থেকে আসবে জানতে চাইলে শোলাকিয়ার এই ইমাম বলেন, আমরা সম্পদশালীদের কাছে অর্থ সহায়তার আহ্বান জানিয়েছি৷ আমরা মনে করি, এ কাজে অংশ নেয়া সওয়াবের৷ এছাড়া আমরা সরকারের কাছেও অর্থ সহায়তা চাইবো৷ আশা করি, সরকারের সহায়তা পাবো আমরা৷

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে গত বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৪৬টি হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা৷ এতে নিহত হয়েছেন মোট ৪৮ জন৷ এদের মধ্যে দু’জন পুলিশ সদস্য এবং এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীও আছেন৷

এছাড়া গত তিন মাসে হত্যা করা হয়েছে ১১ জনকে৷ এসব হামলার অনেকগুলোরই দায় স্বীকার করেছে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস এবং আল কায়দার ভারতীয় উপ-মহাদেশের কথিত বাংলাদেশ শাখা আনসার আল-ইসলাম৷

সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য বাংলাদেশে আইএসের উপস্থিতি এখনো অস্বীকার করা হচ্ছে৷ সূত্র : ডয়চে ভেলে