ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাঁচাবাজারে সবজি ও পেঁয়াজের দামের বেড়েছে

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ কাঁচাবাজারে ও পেঁয়াজের দামের তাণ্ডব গত কয়েক মাস ধরে দেখে আসছেন ক্রেতারা। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এসেও এই তাণ্ডব চলমান রয়েছে। রাজধানীতে একদিনের ব্যবধানে আজ পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ২০ টাকা। পাশাপাশি বেড়েছে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম। গত সপ্তাহে বেশকিছু সবজির কেজি ৩০ টাকায় নেমে আসলেও আজ ৪০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না।

আজ রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলেন, চলতি মাসের শুরুতে পেঁয়াজের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার পর মাঝে কিছুটা কমেছিল। কিন্তু আজ আবার হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। মূলত আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বাড়ার প্রভাবে দেশি পেঁয়াজের দামও বেশ বেড়েছে। আজ খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা কেজি দরে, যা একদিন আগে গতকালও বিক্রি হয়েছে ৭০-৭৫ টাকায়। আর এক সপ্তাহ আগে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে।

অপরদিকে আমাদানি করা পেঁয়াজের দাম এক লাফে বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা কেজি। যা গতকাল ছিল ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে প্রায় ৩০ টাকা।

কারওয়ান বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, সপ্তাহখানেক ধরে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বাড়তে বাড়তে ৭৫ টাকায় চলে এসেছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বাড়ার প্রভাবে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দামও। তবে বাজারে দেশি বা আমদানি কোন ধরণের পেঁয়াজেরই কমতি নেই।

এ ব্যবসায়ী আরও বলেন, এখন পেঁয়াজের দাম কমার কথা। কারণ কিছুদিন পরেই বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলে পেঁয়াজের দাম না কমে বরং বেড়ে গেছে। এভাবে দাম বাড়া ঠিক না।

এদিকে কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতের আগাম সবজি ফুলকপি, বাধাকপি, শিম, লাউ এখন বাজারে ভরপুর। সঙ্গে ঝিঙা, পটল, করলা, ঢেঁড়স, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, বেগুন, শাল গম, পাঁকা ও কাঁচা টমেটা সবকিছুর সরবরাহই রয়েছে পর্যাপ্ত। এরপরও প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে।

দাম বাড়ার তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে পাঁকা টমেটো। প্রতি কেজি পাঁকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি। সে হিসেবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে এ পণ্যটির দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা। তবে কাঁচা টমেটো গত সপ্তাহের মতোই ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহে শিম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ তা ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে। বেগুনের দাম ৪০- ৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আর পটল গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ৩০ টাকায় নেমে আসলেও আজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। তবে মুলা আগের মতোই ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাল গম বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। আর ৩০ টাকায় নেমে আসা ধুন্দলের কেজি আবার বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা।

দাম বাড়ার তালিকায় আরও রয়েছে ঝিঙে, চিচিঙ্গা,ঢেঁড়স, লাউও। গত সপ্তাহে ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ঝিঙে-চিচিঙ্গা দাম বেড়ে হেয়েছে ৫৫-৬০ টাকা। আর ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হওয়া ঢেঁড়সের দাম এক লাফে বেড়ে হয়েছে ৭০-৮০ টাকা। আর ৩০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া লাউয়ের দাম বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা।

তবে গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে করলা। এ সবজিটির কেজি ৪০-৪৫ টাকা। আর ৩০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া ফুলকপি ও বাধাকপি আজ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়।

সবজির দাম বাড়লেও স্থিতিশীল রয়েছে শাকের বাজার। লাল শাক ও সবুজ শাক আগের সপ্তাহের মতোই ৫ থেকে ১০ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে। পুঁই শাক বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়, মুলা শাক ৫ টাকা, পালন শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া স্থিতিশীল রয়েছে মুরগির মাংসের বাজারও। সাদা ব্রয়লার মুরগি বিক্রি গত সপ্তাহের মতোই ১২০-১২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা কেজি দরে। গরুর মাংস ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

কাঁচাবাজারে সবজি ও পেঁয়াজের দামের বেড়েছে

আপডেট টাইম : ০৩:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ কাঁচাবাজারে ও পেঁয়াজের দামের তাণ্ডব গত কয়েক মাস ধরে দেখে আসছেন ক্রেতারা। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এসেও এই তাণ্ডব চলমান রয়েছে। রাজধানীতে একদিনের ব্যবধানে আজ পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ২০ টাকা। পাশাপাশি বেড়েছে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম। গত সপ্তাহে বেশকিছু সবজির কেজি ৩০ টাকায় নেমে আসলেও আজ ৪০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না।

আজ রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলেন, চলতি মাসের শুরুতে পেঁয়াজের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার পর মাঝে কিছুটা কমেছিল। কিন্তু আজ আবার হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। মূলত আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বাড়ার প্রভাবে দেশি পেঁয়াজের দামও বেশ বেড়েছে। আজ খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা কেজি দরে, যা একদিন আগে গতকালও বিক্রি হয়েছে ৭০-৭৫ টাকায়। আর এক সপ্তাহ আগে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে।

অপরদিকে আমাদানি করা পেঁয়াজের দাম এক লাফে বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা কেজি। যা গতকাল ছিল ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে প্রায় ৩০ টাকা।

কারওয়ান বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, সপ্তাহখানেক ধরে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বাড়তে বাড়তে ৭৫ টাকায় চলে এসেছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বাড়ার প্রভাবে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দামও। তবে বাজারে দেশি বা আমদানি কোন ধরণের পেঁয়াজেরই কমতি নেই।

এ ব্যবসায়ী আরও বলেন, এখন পেঁয়াজের দাম কমার কথা। কারণ কিছুদিন পরেই বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলে পেঁয়াজের দাম না কমে বরং বেড়ে গেছে। এভাবে দাম বাড়া ঠিক না।

এদিকে কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতের আগাম সবজি ফুলকপি, বাধাকপি, শিম, লাউ এখন বাজারে ভরপুর। সঙ্গে ঝিঙা, পটল, করলা, ঢেঁড়স, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, বেগুন, শাল গম, পাঁকা ও কাঁচা টমেটা সবকিছুর সরবরাহই রয়েছে পর্যাপ্ত। এরপরও প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে।

দাম বাড়ার তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে পাঁকা টমেটো। প্রতি কেজি পাঁকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি। সে হিসেবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে এ পণ্যটির দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা। তবে কাঁচা টমেটো গত সপ্তাহের মতোই ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহে শিম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ তা ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে। বেগুনের দাম ৪০- ৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আর পটল গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ৩০ টাকায় নেমে আসলেও আজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। তবে মুলা আগের মতোই ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাল গম বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। আর ৩০ টাকায় নেমে আসা ধুন্দলের কেজি আবার বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা।

দাম বাড়ার তালিকায় আরও রয়েছে ঝিঙে, চিচিঙ্গা,ঢেঁড়স, লাউও। গত সপ্তাহে ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ঝিঙে-চিচিঙ্গা দাম বেড়ে হেয়েছে ৫৫-৬০ টাকা। আর ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হওয়া ঢেঁড়সের দাম এক লাফে বেড়ে হয়েছে ৭০-৮০ টাকা। আর ৩০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া লাউয়ের দাম বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা।

তবে গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে করলা। এ সবজিটির কেজি ৪০-৪৫ টাকা। আর ৩০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া ফুলকপি ও বাধাকপি আজ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়।

সবজির দাম বাড়লেও স্থিতিশীল রয়েছে শাকের বাজার। লাল শাক ও সবুজ শাক আগের সপ্তাহের মতোই ৫ থেকে ১০ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে। পুঁই শাক বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়, মুলা শাক ৫ টাকা, পালন শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া স্থিতিশীল রয়েছে মুরগির মাংসের বাজারও। সাদা ব্রয়লার মুরগি বিক্রি গত সপ্তাহের মতোই ১২০-১২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা কেজি দরে। গরুর মাংস ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।