ঢাকা , শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জাকের-শামীমকে যে পুরস্কার দিতে বললেন উইন্ডিজ কিংবদন্তি স্ত্রীর করা যৌতুক মামলায় পুলিশ স্বামী কারাগারে হাইকোর্টে উপদেষ্টা হাসান আরিফের জানাজা অনুষ্ঠিত যারা দুর্দিনে দলের জন্য কাজ করেছে, তাদের মূল্যায়ন করা হবে: টুকু আবাসন ব্যবসায় মন্দা দ্য ইকোনমিস্টকে ড. ইউনূস ‘আমি আমার নিয়মিত কাজে ফিরে যেতে পারলে খুশি হবো’ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা নিয়ে ভারতের তথ্য বিভ্রান্তিকর টঙ্গীতে বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক নদীতে, বিকল্প পথে চলার অনুরোধ অর্থহীন’ এর সাবেক গিটারিস্ট পিকলু মারা গেছেন নোয়াখালী জেলা আমীর ইসহাক খন্দকার ‘ভারতের আশেপাশের দেশগুলোর কোনোটির সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক নেই’

গুলশান রেস্টুরেন্টের একটি রুমালকে ঘিরে যত রহস্য

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে রোমহর্ষক হামলার ঘটনায় একটি রুমালকে ঘিরে রহস্য দেখা দিয়েছে।  ওই হামলায় পুরো রেস্টুরেন্ট রক্তাক্ত হলেও একেবারে দাগবিহীন একটি সাদা কাপড়ের রুমাল জব্দ করা হয়।

ওই রুমালকে ঘিরেই যত রহস্য।  কারণ রুমালটির সূত্রে জানা গেছে, হামলায় অংশগ্রহণকারী নতুন জঙ্গি প্লাটফর্মের নাম।

হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলাকারীদের ‘কমান্ড সেন্টারটির’ খোঁজ করছে গোয়েন্দারা।  কমান্ড সেন্টারটি থেকেই গোটা জঙ্গি হামলাকারীদের নিয়ন্ত্রণ করেছে তাদের মাস্টারমাইন্ড।

জঙ্গীদের সঙ্গে নতুন নামের কোনো জঙ্গী সংগঠনের লিংকআপ ঘটেছে কিনা- যারা অত্যাধুনিক উন্নত প্রযুক্তির পারদর্শী, তারও খোঁজ করছে গোয়েন্দারা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞ সাহায্য ও গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সহায়তা চাওয়া হবে।

এ ধরনের সহায়তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত সাইট ইন্টেলিজেন্স নামের জঙ্গীগোষ্ঠীর ওয়েবসাইটে পাঁচ জঙ্গী হাসিমুখে একে-২২ রাইফেল হাতে নিয়ে আইএসের কালো পোশাকে মাথায় রুমাল আবৃত পোশাকের ছবির দৃশ্যটি কখন, কোথায়, কীভাবে, কার মাধ্যমে তোলা হয়েছে- সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হবে।

জঙ্গি হামলার পেছনে রেখে যাওয়া অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জঙ্গীগোষ্ঠীর মাস্টারমাইন্ডের ব্যবহৃত কমান্ড সেন্টারটির খোঁজে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুুক্তিগত বিশেষজ্ঞ ও গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সহায়তা ও সাহায্য নেয়ার বিষয়ে এরই মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র জানায়, গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলাকারী পাঁচ জঙ্গী জীবদ্দশায় আইএসের পোশাক পরে যে ছবি তুলেছে এবং তারা নিহত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেছে- তাতে বুঝা যায়, মরতে তারা আগেভাগেই প্রস্তুত ছিল।

আইএসের পোশাক পরে তোলা ছবিটি বাংলাদেশে তোলা হয়েছে নাকি অন্য কোন দেশে তোলা হয়েছে-


এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে গোয়েন্দারা।  গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার সময় যাদের নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে তাদের বীভৎস ছবিসংবলিত তথ্যই বা এত ত্বরিতগতিতে আইএসের হাতে গেল কীভাবে?

নিশ্চয়ই জঙ্গীগোষ্ঠীর একটি কমান্ড সেন্টার আছে এবং কমান্ড সেন্টারের মাস্টারমাইন্ড থাকার যে অস্তিত্বটি আছে তার খোঁজ করা হচ্ছে।

গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র জানায়, গুলশান হলি আর্টিজানে রাত প্রায় নয়টার সময় হামলা চালানোর পর রাত দশটার দিকেই সাইট ইন্টেলিজেন্সের টুইটার অ্যাকাউন্টে পাঁচ জঙ্গীর ছবিগুলো প্রকাশ করা হয়।

অত্যাধুনিক একে-২২ রাইফেল হাতে হাসিমুখে আইএসের পোশাক পরিহিত জঙ্গীদের ছবিগুলো কখন কোথায় তোলা তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।  এটা স্পষ্ট যে, তারা যে মরতে প্রস্তুত এবং মারা যাওয়ার পর তাদের ছবিগুলো প্রচার করা হবে তারা জীবদ্দশায়ই তা জানত।

সাইটের টেররিজম মনিটরের টুইটার অ্যাকাউন্টে এই জঙ্গীদের ছবি দিয়ে তাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে- আবু উমর, আবু সালমা, আবু রহিম, আবু মুসলিম ও আবু মুহারিব।

আইএসের প্রচার করা নামের সঙ্গে নিহত হওয়ার পর যে নাম পাওয়া যায় তার সঙ্গে মিল না থাকলেও চেহারা ও পরিচয়ে মিল পাওয়া যায়।  গুলশানে নিহত হওয়ার পর তাদের নাম পাওয়া যায়- মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও সফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল। অথচ পুলিশ বলেছে, নিহত জঙ্গীদের নাম হচ্ছে- আকাশ, বিকাশ, ডন, বাঁধন ও রিপন।  রহস্য উদ্ঘাটনে ও অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি, বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে জঙ্গী তৎপরতার প্রচার বন্ধের পথ খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে করছে গোয়েন্দারা।

গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেছেন, যে নামেই জঙ্গীগোষ্ঠীর তৎপরতা চালানো হোক না কেন এবং যত জঙ্গীই মারা পড়ুক না কেন, জঙ্গীগোষ্ঠীর মাস্টারমাইন্ড ও কমান্ড সেন্টারের সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত জঙ্গী তৎপরতা নির্মূল করা যে অসম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।

গত ১ জুলাই রাতে অস্ত্রধারী জঙ্গিরা ৭৯ নম্বর সড়কের ওই রেস্টুরেন্টে হামলা চালিয়ে জিম্মি করে দেশি-বিদেশি অতিথিদের।  প্রায় ১২ ঘণ্টা পর কমান্ডো অভিযান চালিয়ে রেস্টুরেন্টটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনী।  তবে জঙ্গিদের হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে নির্মমভাবে নিহত হয়।  হামলায় মারা যায় দুই পুলিশ সদস্য।

হামলার ওই রাতে আইএসের বরাতে গুলশান হামলাকে অভিনন্দন জানিয়ে ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়। বাংলাদেশি তিন যুবক ওই ভিডিও বার্তা প্রচার করে।

তুষার নামে এক যু্বক ভিডিও বার্তায় বলেন, বাংলাদেশে শরিয়া প্রতিষ্ঠায় দৌলাতুল ইসলামের আন্ডারে আপনারা দলে দলে যোগদান করুন।

গুলশান থানা পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট থেকে জব্দ করা রুমালে বাংলায় লেখা, ‘দৌলাতুল ইসলাম বাংলাদেশ টিকে থাকবে’।  গুলশান থানায় দায়ের করা মামলায় হামলার ঘটনাস্থল থেকে জব্দ তালিকার প্রথম স্থানেই ওই সাদা কাপড়ের রুমাল।

গোয়েন্দা সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, বাংলাদেশে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠন গুলোর প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে দৌলাতুল ইসলাম। হিযবুত তাহরির, জেএমবি ও আনসারুল্লাহ বাংলাটিম (এবিটি) সদস্যদের নতুন প্লাপফর্ম হিসেবে কাজ করতে পারে এ দৌলাতুল ইসলাম। হামলার পর নিজেদের অবস্থান জানান দিতেই ওই রুমালে দৌলাতুল ইসলামের নাম লিখে ফেলে দেয় গুলশানের হামলাকারীরা।

এ ব্যাপারে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, আমরা দৌলাতুল ইসলাম আদৌ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছি।  হামলাকারীরা কৌশলগত কারণেও রুমালটি ফেলে দিয়ে যেতে পারে।

দৌলাতুল ইসলাম নামে সংগঠনটি মূলত ইরাক, তুরস্ক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও মিসরে বেশি সক্রিয়।  বাংলাদেশে এর কোনো ভিত্তি রয়েছে কি-না তা এখনো নিশ্চিত নয় গোয়েন্দা সংশ্লিষ্টরা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

জাকের-শামীমকে যে পুরস্কার দিতে বললেন উইন্ডিজ কিংবদন্তি

গুলশান রেস্টুরেন্টের একটি রুমালকে ঘিরে যত রহস্য

আপডেট টাইম : ০৫:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ জুলাই ২০১৬

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে রোমহর্ষক হামলার ঘটনায় একটি রুমালকে ঘিরে রহস্য দেখা দিয়েছে।  ওই হামলায় পুরো রেস্টুরেন্ট রক্তাক্ত হলেও একেবারে দাগবিহীন একটি সাদা কাপড়ের রুমাল জব্দ করা হয়।

ওই রুমালকে ঘিরেই যত রহস্য।  কারণ রুমালটির সূত্রে জানা গেছে, হামলায় অংশগ্রহণকারী নতুন জঙ্গি প্লাটফর্মের নাম।

হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলাকারীদের ‘কমান্ড সেন্টারটির’ খোঁজ করছে গোয়েন্দারা।  কমান্ড সেন্টারটি থেকেই গোটা জঙ্গি হামলাকারীদের নিয়ন্ত্রণ করেছে তাদের মাস্টারমাইন্ড।

জঙ্গীদের সঙ্গে নতুন নামের কোনো জঙ্গী সংগঠনের লিংকআপ ঘটেছে কিনা- যারা অত্যাধুনিক উন্নত প্রযুক্তির পারদর্শী, তারও খোঁজ করছে গোয়েন্দারা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞ সাহায্য ও গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সহায়তা চাওয়া হবে।

এ ধরনের সহায়তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত সাইট ইন্টেলিজেন্স নামের জঙ্গীগোষ্ঠীর ওয়েবসাইটে পাঁচ জঙ্গী হাসিমুখে একে-২২ রাইফেল হাতে নিয়ে আইএসের কালো পোশাকে মাথায় রুমাল আবৃত পোশাকের ছবির দৃশ্যটি কখন, কোথায়, কীভাবে, কার মাধ্যমে তোলা হয়েছে- সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হবে।

জঙ্গি হামলার পেছনে রেখে যাওয়া অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জঙ্গীগোষ্ঠীর মাস্টারমাইন্ডের ব্যবহৃত কমান্ড সেন্টারটির খোঁজে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুুক্তিগত বিশেষজ্ঞ ও গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সহায়তা ও সাহায্য নেয়ার বিষয়ে এরই মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র জানায়, গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলাকারী পাঁচ জঙ্গী জীবদ্দশায় আইএসের পোশাক পরে যে ছবি তুলেছে এবং তারা নিহত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেছে- তাতে বুঝা যায়, মরতে তারা আগেভাগেই প্রস্তুত ছিল।

আইএসের পোশাক পরে তোলা ছবিটি বাংলাদেশে তোলা হয়েছে নাকি অন্য কোন দেশে তোলা হয়েছে-


এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে গোয়েন্দারা।  গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার সময় যাদের নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে তাদের বীভৎস ছবিসংবলিত তথ্যই বা এত ত্বরিতগতিতে আইএসের হাতে গেল কীভাবে?

নিশ্চয়ই জঙ্গীগোষ্ঠীর একটি কমান্ড সেন্টার আছে এবং কমান্ড সেন্টারের মাস্টারমাইন্ড থাকার যে অস্তিত্বটি আছে তার খোঁজ করা হচ্ছে।

গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র জানায়, গুলশান হলি আর্টিজানে রাত প্রায় নয়টার সময় হামলা চালানোর পর রাত দশটার দিকেই সাইট ইন্টেলিজেন্সের টুইটার অ্যাকাউন্টে পাঁচ জঙ্গীর ছবিগুলো প্রকাশ করা হয়।

অত্যাধুনিক একে-২২ রাইফেল হাতে হাসিমুখে আইএসের পোশাক পরিহিত জঙ্গীদের ছবিগুলো কখন কোথায় তোলা তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।  এটা স্পষ্ট যে, তারা যে মরতে প্রস্তুত এবং মারা যাওয়ার পর তাদের ছবিগুলো প্রচার করা হবে তারা জীবদ্দশায়ই তা জানত।

সাইটের টেররিজম মনিটরের টুইটার অ্যাকাউন্টে এই জঙ্গীদের ছবি দিয়ে তাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে- আবু উমর, আবু সালমা, আবু রহিম, আবু মুসলিম ও আবু মুহারিব।

আইএসের প্রচার করা নামের সঙ্গে নিহত হওয়ার পর যে নাম পাওয়া যায় তার সঙ্গে মিল না থাকলেও চেহারা ও পরিচয়ে মিল পাওয়া যায়।  গুলশানে নিহত হওয়ার পর তাদের নাম পাওয়া যায়- মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও সফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল। অথচ পুলিশ বলেছে, নিহত জঙ্গীদের নাম হচ্ছে- আকাশ, বিকাশ, ডন, বাঁধন ও রিপন।  রহস্য উদ্ঘাটনে ও অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি, বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে জঙ্গী তৎপরতার প্রচার বন্ধের পথ খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে করছে গোয়েন্দারা।

গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেছেন, যে নামেই জঙ্গীগোষ্ঠীর তৎপরতা চালানো হোক না কেন এবং যত জঙ্গীই মারা পড়ুক না কেন, জঙ্গীগোষ্ঠীর মাস্টারমাইন্ড ও কমান্ড সেন্টারের সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত জঙ্গী তৎপরতা নির্মূল করা যে অসম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।

গত ১ জুলাই রাতে অস্ত্রধারী জঙ্গিরা ৭৯ নম্বর সড়কের ওই রেস্টুরেন্টে হামলা চালিয়ে জিম্মি করে দেশি-বিদেশি অতিথিদের।  প্রায় ১২ ঘণ্টা পর কমান্ডো অভিযান চালিয়ে রেস্টুরেন্টটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনী।  তবে জঙ্গিদের হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে নির্মমভাবে নিহত হয়।  হামলায় মারা যায় দুই পুলিশ সদস্য।

হামলার ওই রাতে আইএসের বরাতে গুলশান হামলাকে অভিনন্দন জানিয়ে ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়। বাংলাদেশি তিন যুবক ওই ভিডিও বার্তা প্রচার করে।

তুষার নামে এক যু্বক ভিডিও বার্তায় বলেন, বাংলাদেশে শরিয়া প্রতিষ্ঠায় দৌলাতুল ইসলামের আন্ডারে আপনারা দলে দলে যোগদান করুন।

গুলশান থানা পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট থেকে জব্দ করা রুমালে বাংলায় লেখা, ‘দৌলাতুল ইসলাম বাংলাদেশ টিকে থাকবে’।  গুলশান থানায় দায়ের করা মামলায় হামলার ঘটনাস্থল থেকে জব্দ তালিকার প্রথম স্থানেই ওই সাদা কাপড়ের রুমাল।

গোয়েন্দা সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, বাংলাদেশে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠন গুলোর প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে দৌলাতুল ইসলাম। হিযবুত তাহরির, জেএমবি ও আনসারুল্লাহ বাংলাটিম (এবিটি) সদস্যদের নতুন প্লাপফর্ম হিসেবে কাজ করতে পারে এ দৌলাতুল ইসলাম। হামলার পর নিজেদের অবস্থান জানান দিতেই ওই রুমালে দৌলাতুল ইসলামের নাম লিখে ফেলে দেয় গুলশানের হামলাকারীরা।

এ ব্যাপারে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, আমরা দৌলাতুল ইসলাম আদৌ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছি।  হামলাকারীরা কৌশলগত কারণেও রুমালটি ফেলে দিয়ে যেতে পারে।

দৌলাতুল ইসলাম নামে সংগঠনটি মূলত ইরাক, তুরস্ক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও মিসরে বেশি সক্রিয়।  বাংলাদেশে এর কোনো ভিত্তি রয়েছে কি-না তা এখনো নিশ্চিত নয় গোয়েন্দা সংশ্লিষ্টরা।