বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ পাখির আগমনে কলকাকলিতে মুখর থাকে এ আবাসিক ক্যাম্পাস জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস । পাখি যে প্রকৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ, তার সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ এ বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিবারের মত এবার জাবিতে আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখির। সবুজের বুক চিরে আঁকাবাঁকা লেকগুলোতে এক পায়ে দাড়িয়ে থাকা পাখিদের এমন দৃশ্য পাখি প্রেমিকদের মুগ্ধ করে। শান্ত পানিতে লাল শাপলার মাঝে জলকেলিতে মেতে আছে পাখিরা।
ছুটির দিনে অতিথি পাখির উচ্ছ্বাস দেখতে ক্যাম্পাসে পর্যটকদের আগমন ঘটে। আসে বিদেশি পর্যটকরাও। দর্শনার্থীদের আপ্যায়নেম লেকের পাড়ে পিঠার পসরা নিয়ে বসেছে দোকানিরা। সব মিলিয়ে ক্যাম্পাস এক মিলন মেলায় পরিণত হয়।
প্রতিদিন পড়ন্ত বিকালে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে পাখির অভয়ারণ্য খ্যাত এ ক্যাম্পাস। মূলত এখানে দুই ধরনের পাখির আগমন ঘটে। এক ধরনের পাখি ডাঙ্গায়, শুকনো স্থানে বা ডালে থাকে। আরেক ধরনের পাখি পানিতে থাকে। সাধারণত এ দেশে ৩০-৩৫ প্রজাতির অতিথি পাখি আসে। এদের বেশির ভাগই হাঁস জাতীয় ও পানিতে বসবাস করে। এর মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, পান্তামুখী, পাতারি, মুরগ্যাধি, কোম্বাডাক, পাতারী হাঁস, জলকুক্কুট, খয়রা ও কামপাখি অন্যতম। এছাড়া মানিকজোড়, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি, লাল গুড়গুটি, বামুনিয়া হাঁস, লাল গুড়গুটি, নর্দানপিনটেল ও কাস্তে চাড়া প্রভৃতি পাখিও আসে।
এরা ডানায় ভর করে সূদুর সাইরেয়িা থেকে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এ অঞ্চলে আসে। প্রাণীবিদ্যা বিভাগের গবেষণায় দেখে গেছে, এ দেশে ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ৭৬টি প্রজাতির পাখি ছিল। পরবর্তীতে নব্বয়ের দশকে পাখি সচেতনা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে ১৮৯টি প্রজাতির পাখি এখন দেখা যায়।
বর্তমান ক্যাম্পাসে ছোট-বড় মিলে ১২-১৪টি লেক রয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এবং জাহানারা ইমাম ও প্রীতিলতা হলসংলগ্ন দুটি লেকে অতিথি পাখির আনাগোনা বেশি। অতিথি পাখির জন্য লেকগুলোকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, এ দেশে আসা পাখির বড় একটা অংশ এ ক্যাম্পাসে আসে। ক্যাম্পাসের উপযোগী পরিবেশ আর বৈচিত্র্যময় জলবায়ুর কারণেই অতিথি পাখির আগমন ঘটে।