বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বসন্ত মানেই ফুল আর পাখির কলরব। ধূসর পাহাড়ের প্রকৃতিতে মেলে নতুন রূপ। প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয় প্রাণিকূল জুড়ে। বসন্তজুড়ে বটবৃক্ষে আনাগোণা বাড়ে পাখ-পাখালির। একসময় এ সময়টাতে পাহাড়েও দেখা মিলতো নানা প্রজাতির পাখির। তবে এখন সময়ের পালাবদলে অনেক পাখিরই দেখা মেলে কালে-ভদ্রে। প্রাকৃতিক বন বিনষ্ট, পাহাড়ে আগুন দেয়ার ফলে প্রতিদিন ধ্বংস হচ্ছে বিশাল বনভূমি। আর সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিপন্ন হচ্ছে অনেক পাখিসহ বন্যপ্রাণি।
পাহাড়ি জনপদে বিপন্ন পাখিদের মধ্যে অন্যতম হলুদ পায়ের সবুজ পাখি ‘হরিয়াল’। এক ধরনের কবুতর জাতীয় পাখি ‘হরিয়াল’ ফলভোগী বৃক্ষচারী পাখি। সাধারণত হলদে, জলপাই ও সবুজ রঙের হয়ে থাকে। পাখিটির দৈর্ঘ্য ২৫ থেকে ২৮ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। আকারের দিক থেকে স্ত্রী পাখি সামান্য ছোট ও গায়ের রং পুরুষ পাখির চেয়ে ফিকে হয়ে থাকে।
তথ্যমতে, পৃথিবীতে ২৩ প্রজাতির হরিয়াল রয়েছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে হলুদ পায়ের সবুজ পাখি ‘হরিয়াল’। বন নষ্ট আর প্রকৃতি ধ্বংসের ফলে প্রাণিকূলের বিপর্যয়ের তালিকায় যুক্ত হয়েছে ‘হরিয়াল’। প্রকৃতি ধ্বংসের পাশাপাশি বেড়েছে বন্যপ্রাণি শিকারীদের উৎপাত। আর সেই কারণেই পাহাড়ে দিন দিন কমছে বণ্যপ্রাণিসহ নানা প্রজাতির পশু-পাখি। এছাড়া মানুষের খাদ্য তালিকায় থাকা পশু-পাখিগুলো দ্রুত বিলুপ্ত হচ্ছে। অতীতে পাহাড়ে বিপুল পশু পাখির অভয়ারণ্য থাকলেও বর্তমানে অনেকটাই বন শূন্য। ফলে আবাস হারাচ্ছে প্রাণিকূল।
একসময় গভীর অরণ্য ছাড়াও গ্রাম-গঞ্জের বড় গাছে দল বেঁধে ‘হরিয়াল’ ঝাঁক বেঁধে বসতো এবং একসঙ্গে ঘুরে বেড়ালেও বর্তমানে এই পাখির দেখা মেলা ভার। পাকা বা কাঁচা ফল খেতেই হলুদ পায়ের সবুজ পাখি ‘হরিয়াল’র দল ছুটে বেড়ায় গাছের ডালে ডালে। বট, অশ্ব কিংবা শিমুলের ডালে ঘুরে বেড়ানো হরিয়াল পাখি মাটিতে খুব কমই নামে। নিরবতা হরিয়ালের পছন্দ। লোকজনের আওয়াজ শুনলেই নিজেদের আড়াল করে নিত হরিয়াল। শরীরের রঙ সবুজ হওয়ায় পাতার রঙের সঙ্গে মিশে যায়। দিন শেষে হরিয়ালের দল চোখ ধাঁধিয়ে উড়ে যায়।
ইতোমধ্যে ‘হরিয়াল’ ও ঘুঘুসহ বিপন্ন প্রাণিকূল রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘লোকাল গভমেন্ট সার্পোট প্রোগ্রামের (এলজিএসপি) আওতায় দীঘিনালার বিভিন্নস্থানে সচেতনামূলক কার্যক্রম চালানো হয়েছে। এছাড়ও চলতি বছরে উপজেলার বনাঞ্চলগুলোতে পাখি শিকার বন্ধের আহ্বান জানিয়ে সচেতনতামূলক বিলবোর্ড দেয়া হবে।