মোঃ দ্বীন ইসলামঃ ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলার সবুজ ধানের হাওরে এখন পাঁকা পাঁকা ধান। দাওয়ালীদের সংকটের কারণে সময় মতো ধান কাটতে পারছেন না অনেক কৃষকরা। বেশি টাকা মজুরি দিয়েও মিলছে না একজন শ্রমিকও। শ্রমিক মিললেও একর প্রতি মজুরি দিতে হচ্ছে কমপক্ষে ৯ হাজার টাকা। এছাড়া বৃষ্টি বাদলের ভারি বর্ষণ। ফলে হাওর ভর্তি পাঁকা ধান নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন হাওর বাসি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর চলতি সপ্তাহে হাওর এলাকায় ভারি বর্ষণসহ বন্যার আশঙ্কা করছে। বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষায় তাড়াতাড়ি ধান কাটার তাড়া থাকলেও শ্রমিকদের সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে ধান কাটা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত বছর বন্যার পর অভাবের তাড়নায় এলাকায় বেশির ভাগ শ্রমিক কাজের সন্ধানে অন্য কাজে চলে গেছেন। কৃষি শ্রমিকরা অন্য কাজে জড়িয়ে পড়েছেন। তাছাড়া কৃষির চেয়ে অন্য কাজে মজুরি বেশি হওয়ায় বেশ আগে থেকেই কৃষি শ্রমিকরা পেশা বদল শুরু করেছেন।
এছাড়া অন্যান্য বছর বোরো মৌসুমে ধান কাটার জন্য কিশোরগঞ্জ জেলা হাওর এলাকাতে, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, দিনাজপুর, রংপুর, জামালপুর, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে দাওয়ালীরা ধান কাটার জন্য আসতো। বিগত বছরসমূহে পর অকাল বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে বোরো ফসলের ক্ষতি হওয়ায় আগের মতো আর ধান কাটার জন্য দাওয়ালীরা আসে না। বজ্রপাতে হতাহতের ঘটনাও ধান কাটা শ্রমিকদের মধ্যে ভীতি তৈরি করেছে বলে অনেক কৃষকরা জানিয়েছেন।
ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামে উপজেলার কৃষকেরা জানান, এবার ফলন ভালোই হয়েছে। কিন্তু শ্রমিক না থাকায় পাঁকা ধান জমিতে নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে আগাম বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তাই কৃষকের দুশ্চিন্তা কাটছে না এখন।
মিঠামইন উপজেলার কাটখাল গ্রামের একজন কৃষক জানান, তার স্কীমে ৫০০শত’ একর জমি রয়েছে। অধিকাংশ জমির ধান জমিতে পাঁকা অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু শ্রমিকের অভাবে কৃষকেরা জমির ধান কাটতে সাহস পাচ্ছেন না। এই সুযোগে স্থানীয় ধান কাটা শ্রমিকেরা চড়া পারিশ্রমিক ছাড়া ধান কাটছে না। প্রতি একর জমি কাটার জন্য তারা ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা মজুরী নিচ্ছে। পরিবহন খরচও প্রায় একই। ফলে ধান কাটা ও ধান বাড়িতে নেয়া নিয়ে সংকটে রয়েছেন এখানকার কৃষক। এ নিয়ে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন কৃষকেরা।
একই অবস্থা ইটনা ও অষ্টগ্রাম উপজেলার কৃষকের।
কৃষকেরা জানিয়েছেন, ধান কাটা শ্রমিকের সংকট হাওরে প্রকট আকার ধারণ করেছে। ধান কাটা শ্রমিকের এ সংকট অব্যাহত থাকলে উৎপাদিত ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবেন না বলে আশঙ্কা করছেন।