ঢাকা , রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিরল পরিযায়ী ঝুঁটিয়াল গাছবাতাসি

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বিরল দর্শন। এক সময় শীতে পার্বত্য এলাকায় দেখা যেত। হালে দেখা যাওয়ার তেমন একটা নজির নেই। আশির দশকেও রাঙ্গামাটিতে দেখা যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে। প্রাকৃতিক আবাসস্থল বিক্ষিপ্ত গাছ-গাছালি, পর্ণমোচী বন। বন প্রান্তরের নেড়া গাছ বেশি পছন্দ। একাকী, জোড়ায় কিংবা ছোট দলে বিচরণ করে। অবসরে দলের সবাই নেড়া গাছের ডালে বসে গা খোঁটাখুঁটি করে। চেহারা খানিকটা ভিনদেশি ‘ককাটিল’ পাখির মতো। পাখি বিশারদ ব্যতিত প্রজাতি শনাক্ত করা কঠিনই বটে। দেখতে হিংস্র মনে হতে পারে, পারতপক্ষে হিংস্র নয়। তবে আক্রান্ত হলেই কেবল আক্রমণ করে।

আত্মরক্ষার্থে অনেক সময় মানুষকেও ছাড় দেয় না। বন্দি হলে ঠোঁট এবং নখের আঁচড়ে যখম করে দেয়। শরীরের তুলনায় ডানা লম্বা থাকার কারণে উড়ন্ত অবস্থায় ডানা নিচের দিকে ঝুলে পড়ে। মূলত এরা বন পাহাড়ি অঞ্চলে বিচরণ করে। ভূপৃষ্ট থেকে ৩৬৫ মিটার উচ্চতায়ও দেখা যায়। স্বভাবে ভারি চঞ্চল। সারাদিন ওড়াউড়ি করে কাটায়। উড়ন্ত অবস্থায়ই পতঙ্গ শিকার করে। বেশ দ্রুত উড়তে পারে। একাকী কিংবা দলবদ্ধ হয়ে ওড়াউড়ি করে। জলপান ব্যতিরেকে পারতপক্ষে ভূমি স্পর্শ করে না। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, দক্ষিণ চীন ও থাইল্যান্ড পর্যন্ত। বিশ্বব্যাপী হুমকি না হলেও অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে বিরল দর্শন। ফলে আইইউসিএন এদের ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত হিসেবে শনাক্ত করেছে।

পাখির বাংলা নাম: ‘ঝুঁটিয়াল বাতাসি’, ইংরেজি নাম: ‘ক্রেস্টেড ট্রি সুইট’ (Crested Tree swift), বৈজ্ঞানিক নাম: Hemiprocne coronata। এরা ‘খোঁপাযুক্ত বাতাসি’ নামেও পরিচিত।

প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ২৩-২৫ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় সামান্য পার্থক্য আছে। মাথা আসমানি-ধূসর। মাথায় ২.৫ সেন্টিমিটার উঁচু সবুজাভ নীল ঝুঁটি। পিঠ আসমানি-ধূসর। ডানা লম্বা সুঁচালো কালচে, নিচের দিকে ধূসরাভ। লেজ লম্বা দ্বিখণ্ডিত। পুরুষ পাখির মুখাবয়ব লালচে-বাদামি। স্ত্রী পাখির মুখাবয় ধুসর। গলা ধূসরাভ। দেহতল ধূসরাভ-সাদা। চোখ বাদমি-কালো। ঠোঁট কালো, একেবারেই খাটো। পা কালচে। যুবাদের রঙ ভিন্ন।

প্রধান খাদ্য: কীট-পতঙ্গ, পোকামাকড়। গোবরে পোকার প্রতি আসক্তি লক্ষ করা যায়। প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে এপ্রিল। অঞ্চলভেদে ভিন্ন। ধ্বংসাবশেষ গাছে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৫টি। ফুটতে সময় লাগে ১৫-১৭ দিন।

সূত্রঃ মানবকণ্ঠ

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

বিরল পরিযায়ী ঝুঁটিয়াল গাছবাতাসি

আপডেট টাইম : ০৭:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ মে ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বিরল দর্শন। এক সময় শীতে পার্বত্য এলাকায় দেখা যেত। হালে দেখা যাওয়ার তেমন একটা নজির নেই। আশির দশকেও রাঙ্গামাটিতে দেখা যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে। প্রাকৃতিক আবাসস্থল বিক্ষিপ্ত গাছ-গাছালি, পর্ণমোচী বন। বন প্রান্তরের নেড়া গাছ বেশি পছন্দ। একাকী, জোড়ায় কিংবা ছোট দলে বিচরণ করে। অবসরে দলের সবাই নেড়া গাছের ডালে বসে গা খোঁটাখুঁটি করে। চেহারা খানিকটা ভিনদেশি ‘ককাটিল’ পাখির মতো। পাখি বিশারদ ব্যতিত প্রজাতি শনাক্ত করা কঠিনই বটে। দেখতে হিংস্র মনে হতে পারে, পারতপক্ষে হিংস্র নয়। তবে আক্রান্ত হলেই কেবল আক্রমণ করে।

আত্মরক্ষার্থে অনেক সময় মানুষকেও ছাড় দেয় না। বন্দি হলে ঠোঁট এবং নখের আঁচড়ে যখম করে দেয়। শরীরের তুলনায় ডানা লম্বা থাকার কারণে উড়ন্ত অবস্থায় ডানা নিচের দিকে ঝুলে পড়ে। মূলত এরা বন পাহাড়ি অঞ্চলে বিচরণ করে। ভূপৃষ্ট থেকে ৩৬৫ মিটার উচ্চতায়ও দেখা যায়। স্বভাবে ভারি চঞ্চল। সারাদিন ওড়াউড়ি করে কাটায়। উড়ন্ত অবস্থায়ই পতঙ্গ শিকার করে। বেশ দ্রুত উড়তে পারে। একাকী কিংবা দলবদ্ধ হয়ে ওড়াউড়ি করে। জলপান ব্যতিরেকে পারতপক্ষে ভূমি স্পর্শ করে না। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, দক্ষিণ চীন ও থাইল্যান্ড পর্যন্ত। বিশ্বব্যাপী হুমকি না হলেও অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে বিরল দর্শন। ফলে আইইউসিএন এদের ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত হিসেবে শনাক্ত করেছে।

পাখির বাংলা নাম: ‘ঝুঁটিয়াল বাতাসি’, ইংরেজি নাম: ‘ক্রেস্টেড ট্রি সুইট’ (Crested Tree swift), বৈজ্ঞানিক নাম: Hemiprocne coronata। এরা ‘খোঁপাযুক্ত বাতাসি’ নামেও পরিচিত।

প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ২৩-২৫ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় সামান্য পার্থক্য আছে। মাথা আসমানি-ধূসর। মাথায় ২.৫ সেন্টিমিটার উঁচু সবুজাভ নীল ঝুঁটি। পিঠ আসমানি-ধূসর। ডানা লম্বা সুঁচালো কালচে, নিচের দিকে ধূসরাভ। লেজ লম্বা দ্বিখণ্ডিত। পুরুষ পাখির মুখাবয়ব লালচে-বাদামি। স্ত্রী পাখির মুখাবয় ধুসর। গলা ধূসরাভ। দেহতল ধূসরাভ-সাদা। চোখ বাদমি-কালো। ঠোঁট কালো, একেবারেই খাটো। পা কালচে। যুবাদের রঙ ভিন্ন।

প্রধান খাদ্য: কীট-পতঙ্গ, পোকামাকড়। গোবরে পোকার প্রতি আসক্তি লক্ষ করা যায়। প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে এপ্রিল। অঞ্চলভেদে ভিন্ন। ধ্বংসাবশেষ গাছে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৫টি। ফুটতে সময় লাগে ১৫-১৭ দিন।

সূত্রঃ মানবকণ্ঠ