বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় এখন জাল ফেললেই টাকা। তাই মশারির জাল নিয়ে মেঘনায় ছুটছেন তীরবর্তী মানুষেরা। গলদা-বাগদা চিংড়ির রেণু শিকারই এসব মানুষের টার্গেট। মেঘনার পাড়ে দেখা হয় রেণু শিকারে আসা স্কুলছাত্র শরীফ হোসেনের সাথে।
সে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে। শরীফ জানায়, স্কুল না থাকলেই সে মশারির জাল দিয়ে নদীতে গলদা-বাগদা চিংড়ির রেণু পোনা শিকারে আসে। রেণু পোনা বিক্রির টাকা সে পরিবারকে দেয়।
তার ভাষ্য, এ সময়ে নদীতে গলদা-বাগদার রেণু পোনা বেশি পাওয়া যায়, আবার দামও ভাল। স্বল্প সময় ও কম পরিশ্রমে এতে বেশি লাভবান হওয়াও যাচ্ছে। প্রতিদিন ৩শ’ থেকে ৭শ’রেনু পাওয়া যায়। আর প্রতিটি রেনুর দাম ২ থেকে ৩ টাকা ।
শরীফের মত আরো অনেকেই লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মশারির জাল দিয়ে গলদা-বাগদা চিংড়ির রেণু নিধন করছে। এতে চিংড়ির রেণু’র সঙ্গে ধবংস হচ্ছে নদী ও সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনাও।
সরোজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বহু নারী পুরুষ ও শিশু মশারির জাল দিয়ে মেঘনার বিভিন্ন স্থানেই গলদা-বাগদা চিংড়ির রেণু পোনা ধরার কাজে ব্যস্ত। তারা জাল থেকে চিংড়ির রেণু পোনা আলাদা করে পাত্রে জিইয়ে রাখলেও অন্য প্রজাতির মাছের পোনাগুলো ডাঙায় অথবা চরে ফেলে দেওয়ায় সেগুলো মারা যাচ্ছে।
রেণু শিকারিদের একজন জানালেন, রেণু পোনা শিকারে মহাজনরাও তাদের আগ্রহভরে অগ্রিম ঋণ দিচ্ছেন। ফলে শিকারিরা আরো উৎসাহী হয়ে উঠছেন।
রেণু পোনা ব্যবসায়ীরা জানান, জেলেদের কাছ থেকে রেণু পোনা ক্রয় করে তারা খুলনা, যশোর, ডুমুরিয়া সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গলদা-বাগদা চিংড়ির ঘের মালিকদের কাছে বিক্রি করেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম মহিব উল্লা বলেন, ‘ঝটিকা অভিযান চালিয়ে গলদা-বাগদা রেণু পোনা শিকারি ও মহাজনদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। পোড়ানো হচ্ছে তাদের ব্যবহৃত মশারির জাল।’
উল্লেখ্য, ২০০০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে দেশের উপকূলীয় এলাকায় মাছের রেণু পোনা আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়।