ঢাকা , সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শান্তিরক্ষার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করেন

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জাতিসংঘের পুলিশপ্রধানদের দ্বিতীয় সম্মেলনে (যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে) বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী একথা বলেছেন। তিনি শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করেন। তিনি শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যৌন হয়রানি ও অসদাচরণ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুযায়ী বাংলাদেশ পুলিশের সুদৃঢ় অবস্থান ও প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেন।

এক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশ পরিমার্জিত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে উল্লেখ করেন। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (মিডিয়া এন্ড পিআর) সহেলী ফেরদৌস এক বার্তায় জানান, ওই সম্মেলনে আইজিপি বলেছেন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের প্রস্ততি গ্রহণ এবং কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। আর সহিংসতার ক্রমপরিবর্তনশীলতার প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে অরক্ষিত মানুষদের রক্ষা করা এবং বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটাতে হবে। অসম হুমকিসঙ্কুল পরিবেশে নিরাপদে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ, প্রয়োজনীয় রসদের সরবরাহ এবং কন্টিনজেন্সি পরিকল্পনা উন্নত করার ওপর জোর দেন বাংলাদেশের পুলিশপ্রধান।

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে গত বুধবার থেকে শুরু হয়েছে দুদিনব্যাপী জাতিসংঘের পুলিশপ্রধানদের দ্বিতীয় সম্মেলন। জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের পুলিশবাহিনীর প্রধানদের এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। গত বুধবার বিকালে জাতিসংঘের ডেলিগেটস্ ডাইনিং রুমে সদস্য রাষ্ট্রসমূহের পুলিশপ্রধানদের সম্মানে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ সম্মেলন শুরু হয়। গতকাল বৃৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে সাধারণ পরিষদ হলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যসহ সকল নিহত শান্তিরক্ষীর স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের মূল পর্বের শুভ সূচনা হয়।

সম্মেলনে উদ্বোধনী ভাষণ দেন জাতিসংঘ মহাসচিবের শেফ দ্য ক্যাবিনেট মিজ্ মারিয়া লুইজা রিবিরো ভায়োট্টি।আর শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী পূর্ব তিমুরের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের সাবেক বিশেষ প্রতিনিধি জোসে র‌্যামস্-হোরতা। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ পুলিশের ওপর নির্মিত একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। সম্মেলনের মূল আলোচনাকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের চ্যালেঞ্জসমূহ এবং জাতিসংঘ পুলিশ সহিংসতা প্রতিরোধ ও শান্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ পুলিশের ভূমিকা এবং দায়বদ্ধতা ও কর্মদক্ষতা এ তিনটি অংশে ভাগ করা হয়।

আলোচনা পর্বগুলোতে জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস কিপিং অপারেশন (ডিপিকেও)-এর প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ল্যাক্রুয়া। ডিপার্টমেন্ট অব ফিল্ড সাপোর্ট বিভাগের প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অতুল খারে এবং জাতিসংঘের ডিপিকেও, ফিল্ড সাপোর্ট, হিউম্যান রাইটস্ বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, বিভিন্ন দেশের পুলিশবাহিনীর প্রধানগণ ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের নীতি নির্ধারকগণ অংশ নেন। আলোচকগণ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বিশেষ করে স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাথে সংশ্লিষ্টতা, বিশ্বাস স্থাপন, সহিংসতার অগ্রিম সতর্কবার্তা সংগ্রহসহ মিশনসমূহকে কার্যকর রাখতে জাতিসংঘ পুলিশের বহুমুখী ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।

জনকেন্দ্রিক, আধুনিক, ক্ষীপ্রগতিসম্পন্ন, সহনশীল ও বিশেষায়িত জাতিসংঘ পুলিশ বিনির্মাণে মহাসচিবের রুপকল্পের কথা আলোচনায় উঠে আসে। উল্লেখ্য, বর্তমানে বিশ্বের ১৬টি পিস্ কিপিং মিশনে ৮৯টি দেশের প্রায় ১১ হাজার নারী ও পুরুষ পুলিশ সদস্য কর্মরত রয়েছেন। জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল, পুলিশ অ্যাডভাইজর, নিউইয়র্কের পুলিশ কমিশনার ও গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানের সাথে আইজিপি বৈঠক করেন। বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী গত ১৯ জুন জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ডিপার্টমেন্ট অব পিস কিপিং অপারেশন (ডিপিকেও)-এর প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ল্যাক্রুয়া এবং জাতিসংঘের পুলিশ অ্যাডভাইজর লুইস ক্যারিলহোর সাথে বৈঠকে মিলিত হন।

সভায় জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তাদ্বয় শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যদের গঠনমূলক ও সৃজনশীল ভূমিকা এবং অব্যাহত অবদানের প্রশংসা করেন। বৈঠকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারী পুলিশ বিশেষ করে নারী ফরমড্ পুলিশ ইউনিটসহ বাংলাদেশ পুলিশের অংশগ্রহণ আরও বৃদ্ধি, তাদের দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। জাতিসংঘ সদর দপ্তরস্থ ডিপার্টমেন্ট অব পিস কিপিং অপারেশন কার্যালয়ে বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যদের অংশগ্রহণ আরও বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানান আইজিপি। এসময় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ মিশনের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম, ডিফেন্স অ্যাডভাইজর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খান ফিরোজ আহমেদ ও মিশনের মিনিস্টার ফাইয়াজ মুর্শেদ কাজী উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার) গত ২০ জুন সকালে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ (ঘণচউ) এর পুলিশ কমিশনার জেমস্ ও নেইল এবং গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান টমাস পি. গ্যালাটির সাথেও বৈঠক করেন। বৈঠকে কাউন্টার টেরোরিজম ও সাইবার ক্রাইমের মতো ট্রান্সন্যাশনাল অপরাধ দমনে দ্রুত সাড়াদানের জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা ও তথ্য বিনিময়ের বিষয়গুলো প্রাধান্য পায়। এনওয়াইপিডি ও বাংলাদেশ পুলিশের মধ্যে প্রশিক্ষণ বিনিময়ের বিষয়টিও বৈঠকে গুরুত্বের সাাথে আলোচনা করা হয়। বৈঠক শেষে আইজিপি এনওয়াইপিডির জয়েন্ট অপারেশন সেন্টার পরিদর্শন করেন।

এ সেন্টার থেকে নিউইয়র্ক পুলিশের অপারেশন সমন্বয় ও মেগা ইভেন্টসমূহ পরিচালিত হয়। এনওয়াইপিডি কীভাবে অপরাধীদের মুখাবয়ব চিহ্নিত করার প্রযুক্তি ব্যবহার করছে তা বাংলাদেশের পুলিশপ্রধানকে দেখানো হয়। বাংলাদেশ পুলিশের সাথে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের পেশাগত সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এ বৈঠক ছিল অত্যন্ত গুরুত্ববহ ও তাৎপর্যপূর্ণ। এছাড়া আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার) জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন ও মিশনের কর্মকর্তাবৃন্দের সাথেও মতবিনিময় করেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

শান্তিরক্ষার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করেন

আপডেট টাইম : ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ জুন ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জাতিসংঘের পুলিশপ্রধানদের দ্বিতীয় সম্মেলনে (যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে) বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী একথা বলেছেন। তিনি শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করেন। তিনি শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যৌন হয়রানি ও অসদাচরণ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুযায়ী বাংলাদেশ পুলিশের সুদৃঢ় অবস্থান ও প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেন।

এক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশ পরিমার্জিত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে উল্লেখ করেন। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (মিডিয়া এন্ড পিআর) সহেলী ফেরদৌস এক বার্তায় জানান, ওই সম্মেলনে আইজিপি বলেছেন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের প্রস্ততি গ্রহণ এবং কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। আর সহিংসতার ক্রমপরিবর্তনশীলতার প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে অরক্ষিত মানুষদের রক্ষা করা এবং বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটাতে হবে। অসম হুমকিসঙ্কুল পরিবেশে নিরাপদে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ, প্রয়োজনীয় রসদের সরবরাহ এবং কন্টিনজেন্সি পরিকল্পনা উন্নত করার ওপর জোর দেন বাংলাদেশের পুলিশপ্রধান।

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে গত বুধবার থেকে শুরু হয়েছে দুদিনব্যাপী জাতিসংঘের পুলিশপ্রধানদের দ্বিতীয় সম্মেলন। জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের পুলিশবাহিনীর প্রধানদের এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। গত বুধবার বিকালে জাতিসংঘের ডেলিগেটস্ ডাইনিং রুমে সদস্য রাষ্ট্রসমূহের পুলিশপ্রধানদের সম্মানে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ সম্মেলন শুরু হয়। গতকাল বৃৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে সাধারণ পরিষদ হলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যসহ সকল নিহত শান্তিরক্ষীর স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের মূল পর্বের শুভ সূচনা হয়।

সম্মেলনে উদ্বোধনী ভাষণ দেন জাতিসংঘ মহাসচিবের শেফ দ্য ক্যাবিনেট মিজ্ মারিয়া লুইজা রিবিরো ভায়োট্টি।আর শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী পূর্ব তিমুরের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের সাবেক বিশেষ প্রতিনিধি জোসে র‌্যামস্-হোরতা। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ পুলিশের ওপর নির্মিত একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। সম্মেলনের মূল আলোচনাকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের চ্যালেঞ্জসমূহ এবং জাতিসংঘ পুলিশ সহিংসতা প্রতিরোধ ও শান্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ পুলিশের ভূমিকা এবং দায়বদ্ধতা ও কর্মদক্ষতা এ তিনটি অংশে ভাগ করা হয়।

আলোচনা পর্বগুলোতে জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস কিপিং অপারেশন (ডিপিকেও)-এর প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ল্যাক্রুয়া। ডিপার্টমেন্ট অব ফিল্ড সাপোর্ট বিভাগের প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অতুল খারে এবং জাতিসংঘের ডিপিকেও, ফিল্ড সাপোর্ট, হিউম্যান রাইটস্ বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, বিভিন্ন দেশের পুলিশবাহিনীর প্রধানগণ ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের নীতি নির্ধারকগণ অংশ নেন। আলোচকগণ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বিশেষ করে স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাথে সংশ্লিষ্টতা, বিশ্বাস স্থাপন, সহিংসতার অগ্রিম সতর্কবার্তা সংগ্রহসহ মিশনসমূহকে কার্যকর রাখতে জাতিসংঘ পুলিশের বহুমুখী ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।

জনকেন্দ্রিক, আধুনিক, ক্ষীপ্রগতিসম্পন্ন, সহনশীল ও বিশেষায়িত জাতিসংঘ পুলিশ বিনির্মাণে মহাসচিবের রুপকল্পের কথা আলোচনায় উঠে আসে। উল্লেখ্য, বর্তমানে বিশ্বের ১৬টি পিস্ কিপিং মিশনে ৮৯টি দেশের প্রায় ১১ হাজার নারী ও পুরুষ পুলিশ সদস্য কর্মরত রয়েছেন। জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল, পুলিশ অ্যাডভাইজর, নিউইয়র্কের পুলিশ কমিশনার ও গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানের সাথে আইজিপি বৈঠক করেন। বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী গত ১৯ জুন জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ডিপার্টমেন্ট অব পিস কিপিং অপারেশন (ডিপিকেও)-এর প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ল্যাক্রুয়া এবং জাতিসংঘের পুলিশ অ্যাডভাইজর লুইস ক্যারিলহোর সাথে বৈঠকে মিলিত হন।

সভায় জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তাদ্বয় শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যদের গঠনমূলক ও সৃজনশীল ভূমিকা এবং অব্যাহত অবদানের প্রশংসা করেন। বৈঠকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারী পুলিশ বিশেষ করে নারী ফরমড্ পুলিশ ইউনিটসহ বাংলাদেশ পুলিশের অংশগ্রহণ আরও বৃদ্ধি, তাদের দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। জাতিসংঘ সদর দপ্তরস্থ ডিপার্টমেন্ট অব পিস কিপিং অপারেশন কার্যালয়ে বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যদের অংশগ্রহণ আরও বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানান আইজিপি। এসময় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ মিশনের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম, ডিফেন্স অ্যাডভাইজর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খান ফিরোজ আহমেদ ও মিশনের মিনিস্টার ফাইয়াজ মুর্শেদ কাজী উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার) গত ২০ জুন সকালে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ (ঘণচউ) এর পুলিশ কমিশনার জেমস্ ও নেইল এবং গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান টমাস পি. গ্যালাটির সাথেও বৈঠক করেন। বৈঠকে কাউন্টার টেরোরিজম ও সাইবার ক্রাইমের মতো ট্রান্সন্যাশনাল অপরাধ দমনে দ্রুত সাড়াদানের জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা ও তথ্য বিনিময়ের বিষয়গুলো প্রাধান্য পায়। এনওয়াইপিডি ও বাংলাদেশ পুলিশের মধ্যে প্রশিক্ষণ বিনিময়ের বিষয়টিও বৈঠকে গুরুত্বের সাাথে আলোচনা করা হয়। বৈঠক শেষে আইজিপি এনওয়াইপিডির জয়েন্ট অপারেশন সেন্টার পরিদর্শন করেন।

এ সেন্টার থেকে নিউইয়র্ক পুলিশের অপারেশন সমন্বয় ও মেগা ইভেন্টসমূহ পরিচালিত হয়। এনওয়াইপিডি কীভাবে অপরাধীদের মুখাবয়ব চিহ্নিত করার প্রযুক্তি ব্যবহার করছে তা বাংলাদেশের পুলিশপ্রধানকে দেখানো হয়। বাংলাদেশ পুলিশের সাথে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের পেশাগত সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এ বৈঠক ছিল অত্যন্ত গুরুত্ববহ ও তাৎপর্যপূর্ণ। এছাড়া আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার) জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন ও মিশনের কর্মকর্তাবৃন্দের সাথেও মতবিনিময় করেন।