বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ পানির পরিমাণ এবং আয়তনের দিক দিয়ে দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় লেক টিটিকাকা৷ পেরু ও বলিভিয়ার মধ্যে অবস্থিত এই লেকটি স্থানীয়দের কাছে পবিত্রস্থান হিসেবে পরিচিত৷ এই লেকের নীচেই চলছে জাদুঘর বানানোর পরিকল্পনা৷ লেকের নীচে কী আছে? উত্তর জানতে অনেকবার অভিযানে নেমেছেন বিভিন্ন দেশের অনুসন্ধিৎসু প্রত্নপ্রেমীরা৷ লেকের তলদেশ থেকে আবিষ্কার হয়েছে হাজার হাজার অমূল্যপ্রত্নসামগ্রী৷ এরই পরিপ্রেক্ষিতে এবার লেকের নীচেই জাদুঘর বানাতে চায় বলিভিয়া সরকার৷ জাদুঘরটির অবস্থান হবে রাজধানী লা পাজ থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে৷ খবর ডয়চে ভেলের।
দেশটির সংস্কৃতিমন্ত্রী উইলমা আলানোকা জানিয়েছেন, ‘এটি একই সাথে একটি পর্যটন কমপ্লেক্স এবং প্রত্নতাত্বিক, ভূতাত্বিক এবং জীববিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণার কেন্দ্রও হবে৷ বিশ্বে এটিই হবে এ ধরনের প্রথম জাদুঘর।’ এই জাদুঘর তৈরিতে খরচ হবে ৮ দশমিক ৬ মিলিয়ন ইউরো৷ আর এই কাজে সহায়তা করবে বেলজিয়ামের উন্নয়ন সংস্থা এনাবেল৷ আলানোকা জানিয়েছেন, বেলজিয়াম সরকার এবং ইউনেস্কো এই প্রকল্পে ১ দশমিক ৭ ইউরো অর্থ সহায়তা করবে৷
লোকগল্পে আছে, সূর্য দেবতার ছেলে মানকো কাপাক এবং তার স্ত্রী মামা ওকলো টিটিকাকা লেকের পানি থেকে উঠে এসেছিলেন৷ এ কারণে স্থানীয়দের কাছে এর গুরুত্বও অনেক৷ ইনকা মিথোলজির বেশ বড় অংশ জুড়ে আছেন মানকো কাপাক৷ বিশ্বাস আছে, ত্রয়োদশ শতক থেকে ষোড়শ শতক পর্যন্ত যে ইনকা সভ্যতা ছিল, তার রাজধানী, বর্তমানে পেরুর শহর কুসকোর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এই কাপাক৷
প্রায় ৮৫০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে টিটিকাকা লেকের অবস্থান৷ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৩৮০০ মিটার৷ স্প্যানিশ উপনিবেশ হওয়ার আগ পর্যন্ত বেশ কিছু প্রাচীন সভ্যতার জন্ম দিয়েছে এই লেক৷ সাম্প্রতিক নানা অভিযানে হাড়, সিরামিক, ধাতুর তৈরি প্রায় ১০ হাজারের মতো প্রত্নসামগ্রী, রান্নার সরঞ্জাম এবং মানুষ ও প্রাণীর দেহাবশেষ পাওয়া গেছে৷ এর বেশিরভাগই তিওয়ানাকু-পূর্ব সভ্যতা (৩০০ খ্রিস্টাব্দ), তিওয়ানাকু সভ্যতা (৩০০-১১০০ খ্রিস্টাব্দ) এবং ইনকা সভ্যতার (১১০০-১৫৭০ খ্রিস্টাব্দ) সময়কালের৷