বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সপ্তাহব্যাপী তার যুক্তরাষ্ট্র সফরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে যোগদান, বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ের ইভেন্টে অংশগ্রহণ এবং বিশ্বনেতাদের সঙ্গে বৈঠককে অত্যন্ত সফল ও ফলপ্রসু হিসেবে বর্ণনা করেছেন। জাতিসংঘের ৭৩তম অধিবেশনে যোগদান শেষে আজ সকালে দেশে ফিরে আসার পর গণভবনে পৌঁছলে আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের হারানো গৌরব ফের প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং দেশের মানুষ মর্যাদা ও সম্মান পাচ্ছে।
দেশের জনগণ আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছিল বলেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা তার দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে বলেন, তাদেরকে আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। বরং এ ধরনের আত্মতুষ্টির জন্য ১৯৯১ সাল এবং ২০০১ সালের মতো আওয়ামী লীগকে যাতে খেসারত দিতে না হয় সে ব্যাপারে নেতা-কর্মীদেরকে সজাগ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার এবং দলের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত আগেও ছিল এবং এখনও এ চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র অনবরত অব্যাহত আছে।
‘৭৫-এর পর থেকেই একটা বৈরী পরিবেশে তার দল সংগ্রাম করে করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
ভোটের রাজনীতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই এখন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ভোটের কথা বলেন, কিন্তু তারা জিয়াউর রহমানের হ্যাঁ-না ভোটের কথা ভুলে গেছেন।
তিনি বলেন, তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, গত সাড়ে নয় বছরে উপনির্বাচন, পৌরসভা, মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনসহ দেশে ছয় হাজারের বেশি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেউ এসব নির্বাচন নিয়ে কোনো্ প্রশ্ন তুলতে পারেনি।
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার যড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা অভিযোগ করে বলেন, তার দলের বিরুদ্ধে তথ্য নিয়ে কয়েকটি পত্রিকা বসেই আছে, নির্বাচনের সময় তারা একটার পর একটা ছেড়ে দেবে। দলের সফল নেতা ও সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে এরা লেগেই থাকে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদসহ বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠান, কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী, জাতিসংঘ মহাসচিবসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে তার বৈঠক প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ এখন অনেক সম্মান পাচ্ছে।
বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানগণ তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে যে আমন্ত্রণ জানান এটা তারই প্রমাণ।
শেখ হাসিনা বলেন, নিউইয়র্কে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও তার কথা হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলাপকালে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেয়া জাতির পিতার খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ করেন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন বলে জানান শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি এবং রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ কূটনীতি পরিচালনায় অবদানের জন্য ইন্টার প্রেস সার্ভিস এবং গ্লোবাল হোপ- এর কাছ থেকে পাওয়া দু’টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার দেশের জনগণকে উৎসর্গ করেন।
এর আগে জাতিসংঘের ৭৩তম অধিবেশনে যোগদান শেষে আজ সকালে গণভবনে পৌঁছলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।