ঢাকা , শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আখের বাম্পার ফলন

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাগেরহাট সহ ১০ জেলার  আখের বাম্পার ফলন হওয়ার কারণে চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। বাগেরহাট এবং আশেপাশের জেলায় আখ চাষ করে চাষীরা ব্যাপক ফলন পাওয়ায় তাদের মাঝে আখ চাষের আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলার মাটি এটেল দোঁআশ হওয়ায় এ মাটিতে আখ চাষে গত কয়েক বছরের মত এবারো সফলতা আশা করছেন চাষীরা। ধান, পাট ও অন্যান্য ফসলের আবাদে খরচ বেশি হওয়ার আখ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা।

বাগেরহাট  কৃষি অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৯টি উপজেলার ৭ শত ৬০ হেক্টর জমিতে আখের আবাদ হয়েছে। উপজেলাসহ বিভিন্ন গ্রামের নিজ জমিতে আখ চাষ করে চাষীরা আশানুরুপ ফলন পেয়েছে। এতে অনেকেই আধুনিক পদ্ধতিতে ভাল জাতের আখ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

সরেজমিনে বাগেরহাটের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, আখ চাষে সার ও কীটনাশক তেমন ব্যবহার করতে হয় না। তবে তিনবার সেচের প্রয়োজন পরে। কম পরিশ্রমে অল্প ব্যয়ে ব্যাপক সফলতা পাওয়ায় জেলায় কৃষকরা আখ চাষে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। ধান ও অন্যান্য ফসলের আবাদে খরচ বেশি হওয়ার কারণে আখ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা।

বাগেরহাটের কৃষকরা এ বছর হলুদ রং এর আখ, চিবিয়ে খাওয়া আখ, টেনাই, অমৃত জাতের আখের আবাদ করেছেন। এছাড়াও আখের পাশাপাশি বিভিন্ন মৌসুমের শাখ সবজি চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। ধান ও পাটসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে লাভবান না হওয়ায় আখ চাষের দিকে মনোযোগী হচ্ছে জেলার কৃষকরা।

আখচাষী জামাল হোসেন জানান, এ বৎসর আখের ফলন ভাল হয়েছে, সে তার ২একর জমিতে হলুদ বর্নের গ্যান্ডারী চাষ করে লাভবান হয়েছেন। জমিতে ১২ হাজার টাকা খরচ করে তা ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। ভলো আাবাদ পেলেও কৃষকের মনে রয়েছে নানা অভিযোগ। তারা আরও বলেন, আখ চাষে কৃষি কর্মকর্তাদের নেই কোন পরামর্শ। নেই সরকারী বীজ বিতরণ ও বিক্রয়। তাই তাদের নিজের চেষ্টায় এ ফলন। তাই তাদের আশা সরকারী ভাবে যদি কৃষকদের সহযোগীতা করা হয় তবে কৃষকের আখ চাষে আরও মনোনিবেশ হবে।

তবে এসব কথা অস্বীকার করে মোরেলগঞ্জ উপজেলার উপসহকারী কর্মকর্তা  বলেন, জেলার কৃষকরা  দুই প্রজাতীর আখ চাষ করে। তবে এখান থেকে কৃষকরা সকল সময় শুধু পরমর্শটুকুই পায়, এছাড়া কৃষকদের জন্য সরকারীভাবে আর কিছুই আসে না। যদি সরকারীভাবে তাদের বীজ ও সার দেয়া যেত তাহলে অনেক কৃষকরা উপকৃত হত।

বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আফতাব উদ্দিন  জানান, বাগেরহাটে মাটির গুনগত মান খুবই ভাল। আর সময়মত আখের চারা রোপন করতে পারলে ফলন অবশ্যই ভাল হয়। বর্তমানে ধান ও পাটের খরচের তুলনায় দাম কম থাকায়, কৃষকেরা আখ চাষের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে। এই জেলায় এ বিষয়ে কোন প্রকল্প। তাই প্রকল্প অনুসারে কৃষকদের আখ চাষে উৎস দিতে পারলে ফলন ও চাষাবাদ আরও ভালো হতো।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আখের বাম্পার ফলন

আপডেট টাইম : ০৫:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ অক্টোবর ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাগেরহাট সহ ১০ জেলার  আখের বাম্পার ফলন হওয়ার কারণে চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। বাগেরহাট এবং আশেপাশের জেলায় আখ চাষ করে চাষীরা ব্যাপক ফলন পাওয়ায় তাদের মাঝে আখ চাষের আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলার মাটি এটেল দোঁআশ হওয়ায় এ মাটিতে আখ চাষে গত কয়েক বছরের মত এবারো সফলতা আশা করছেন চাষীরা। ধান, পাট ও অন্যান্য ফসলের আবাদে খরচ বেশি হওয়ার আখ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা।

বাগেরহাট  কৃষি অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৯টি উপজেলার ৭ শত ৬০ হেক্টর জমিতে আখের আবাদ হয়েছে। উপজেলাসহ বিভিন্ন গ্রামের নিজ জমিতে আখ চাষ করে চাষীরা আশানুরুপ ফলন পেয়েছে। এতে অনেকেই আধুনিক পদ্ধতিতে ভাল জাতের আখ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

সরেজমিনে বাগেরহাটের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, আখ চাষে সার ও কীটনাশক তেমন ব্যবহার করতে হয় না। তবে তিনবার সেচের প্রয়োজন পরে। কম পরিশ্রমে অল্প ব্যয়ে ব্যাপক সফলতা পাওয়ায় জেলায় কৃষকরা আখ চাষে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। ধান ও অন্যান্য ফসলের আবাদে খরচ বেশি হওয়ার কারণে আখ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা।

বাগেরহাটের কৃষকরা এ বছর হলুদ রং এর আখ, চিবিয়ে খাওয়া আখ, টেনাই, অমৃত জাতের আখের আবাদ করেছেন। এছাড়াও আখের পাশাপাশি বিভিন্ন মৌসুমের শাখ সবজি চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। ধান ও পাটসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে লাভবান না হওয়ায় আখ চাষের দিকে মনোযোগী হচ্ছে জেলার কৃষকরা।

আখচাষী জামাল হোসেন জানান, এ বৎসর আখের ফলন ভাল হয়েছে, সে তার ২একর জমিতে হলুদ বর্নের গ্যান্ডারী চাষ করে লাভবান হয়েছেন। জমিতে ১২ হাজার টাকা খরচ করে তা ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। ভলো আাবাদ পেলেও কৃষকের মনে রয়েছে নানা অভিযোগ। তারা আরও বলেন, আখ চাষে কৃষি কর্মকর্তাদের নেই কোন পরামর্শ। নেই সরকারী বীজ বিতরণ ও বিক্রয়। তাই তাদের নিজের চেষ্টায় এ ফলন। তাই তাদের আশা সরকারী ভাবে যদি কৃষকদের সহযোগীতা করা হয় তবে কৃষকের আখ চাষে আরও মনোনিবেশ হবে।

তবে এসব কথা অস্বীকার করে মোরেলগঞ্জ উপজেলার উপসহকারী কর্মকর্তা  বলেন, জেলার কৃষকরা  দুই প্রজাতীর আখ চাষ করে। তবে এখান থেকে কৃষকরা সকল সময় শুধু পরমর্শটুকুই পায়, এছাড়া কৃষকদের জন্য সরকারীভাবে আর কিছুই আসে না। যদি সরকারীভাবে তাদের বীজ ও সার দেয়া যেত তাহলে অনেক কৃষকরা উপকৃত হত।

বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আফতাব উদ্দিন  জানান, বাগেরহাটে মাটির গুনগত মান খুবই ভাল। আর সময়মত আখের চারা রোপন করতে পারলে ফলন অবশ্যই ভাল হয়। বর্তমানে ধান ও পাটের খরচের তুলনায় দাম কম থাকায়, কৃষকেরা আখ চাষের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে। এই জেলায় এ বিষয়ে কোন প্রকল্প। তাই প্রকল্প অনুসারে কৃষকদের আখ চাষে উৎস দিতে পারলে ফলন ও চাষাবাদ আরও ভালো হতো।