বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ ভবন আগামীকাল বুধবার রাজধানীর উত্তরায় স্থানান্তর করা হচ্ছে। হাতিরঝিলে অবস্থিত বিজিএমইএ ভবনটি সরাতে গত বছরের ১১ এপ্রিল শেষবারের মতো সময় বেঁধে দেন হাইকোর্ট। এ সময়সীমা মেনেই কারওয়ানবাজার থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বিজিএমইএ ভবন। উত্তরার এই নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিজিএমইএর নতুন অফিসের উদ্বোধন করবেন তিনি।
উত্তরায় ভবন নির্মাণের কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই সমিতির মূল অফিস স্থানান্তরের কাজ শুরু করেছে বিজিএমইএ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে আগামীকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী এই ভবনের উদ্বোধন করবেন। আমরা ১২, ১৩ ও ১৪ এপ্রিল বর্তমান কার্যালয়ের জিনিসপত্র উত্তরার নতুন ভবনে স্থানান্তর করব। ১৫ এপ্রিল থেকে আমরা নতুন ভবনে অফিস করব। বিজিএমইএর সদস্য প্রতিষ্ঠানকে কাঁচামাল আমদানির প্রাপ্যতা সনদ (ইউডি) উত্তরার নতুন ভবন থেকে নিতে হবে। তিনি জানান, নতুন ভবনের নির্মাণ ব্যয় ২৫০ কোটি টাকা।
উত্তরায় বিজিএমইএর নতুন ভবনে দুটি টাওয়ার হবে। সেখানে মোট জায়গার (স্পেস) পরিমাণ ৪ লাখ ৬৪ হাজার বর্গফুট। তার মধ্যে ৩ লাখ বর্গফুট নিজেদের ব্যবহারের জন্য রাখছে বিজিএমইএ। বাকি জায়গা ২৩টি প্রতিষ্ঠান কিনেছে। তবে এখনো ৫০ হাজার বর্গফুট জায়গা বিক্রির জন্য রয়েছে। ভবনটিতে প্রদর্শনী কেন্দ্র, ৭৫০ জন মানুষ ধারণক্ষমতার আধুনিক মিলনায়তন, দুটি সেমিনার কক্ষ এবং সংগঠনের সদস্যদের জন্য সুইমিংপুলসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থাকবে।
কারওয়ানবাজারে বিজিএমইএর বর্তমান ভবনটি দুটি বেসমেন্টসহ ১৬তলা। বিজিএমইএ ব্যবহার করে চারটি তলা। বাকি জায়গা দুটি ব্যাংকসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। তবে আইনি জটিলতার কারণে তাদের মালিকানা বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। ভবনের ওপরের দুইতলা নিয়ে বিলাসবহুল ‘অ্যাপারেল ক্লাব’ করা হয়েছে। সেখানে সংগঠনের সদস্যদের জন্য সুইমিংপুল, ব্যায়ামাগার, রেস্টুরেন্ট, সভাকক্ষ আছে। বড় আকারের একটি মিলনায়তনও আছে।
সম্প্রতি উত্তরায় নির্মাণকৃত নতুন ভবনে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ভবনটির কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। এরই মধ্যে বেসমেন্টসহ ভবনের পাঁচতলার কাজ শেষ হয়েছে। ৪০ হাজার বর্গফুটের প্রদর্শনী হলসহ ১৩তলা ভবনটি তৈরি হচ্ছে রাজধানীর উত্তরার ১৭ নম্বর সেক্টরে। লেকসাইট ভিউয়ের সাড়ে পাঁচ বিঘা জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে ভবনটি।
বিজিএমইএ সহসভাপতি মোহাম্মদ নাসির বলেন, ভবনটির তিন দিক থেকে যাতায়াতের সুুবিধা থাকছে। বিজিএমইএর কার্যালয় স্থানান্তর করা হলে ভবন ভেঙে ফেলা হবে কিনা এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিজিএমইএ এই ভবন ছেড়ে দেওয়ার পর এটি সরকারের সম্পত্তি হবে। তখন সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে কী করা হবে।
বিজিএমইএ ভবন নিয়ে আদালতে রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ১২ এপ্রিলের মধ্যে এই ভবন ভেঙে ফেলতে হবে। বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ এই ভবন নিজ দায়িত্বে ভেঙে ফেলার নির্দেশ রয়েছে আদালতের। আর যদি তারা নিজ দায়িত্বে না ভাঙে, তাহলে রাজউককে এই ভবন ভাঙার নির্দেশ দেওয়া আছে। এই ভবন ভাঙতে রাজউকের কার্যক্রমের সব খরচ বহন করতে হবে বিজিএমইএকে। এদিকে নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উত্তরায় ১৩তলা বিশিষ্ট নতুন ভবনের পুরো কাজ শেষ হতে আরো দুই বছর সময় লাগতে পারে। এছাড়া নতুন ভবনে যাওয়ার সংযোগ সড়কটিও এখনো চলাচল অনুপযোগী।