ঢাকা , রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শীতের ফুল

পৌষ আর মাঘ এই দু’মাস শীত কাল। অগ্রহায়নের নব্বানের বার্তার সাথে শীতের বার্তাও চলে আসে আমাদের মাঝে। নানা ভর্তা আর পিঠা সাথে খেজুরের রস যেনো এই মৌসুমের আনন্দকে আরো একধাপ বাড়িয়ে নেয়। তবে এসব কিছু ছাড়াও এই শীতের এরেকটি চমক হচ্ছে এই মৌসুমের ফুল। যদিও এই সময়ের আদ্রতার জন্য গাছপালা নির্জিব হয়ে পরে তবুও এটি প্রকৃতিতে আনে এক নতুন ছোঁয়া। এই শুষ্কতার মাঝেও বাহারি রঙের  নানা ধরনের ফুল চারিদিককে বিমোহিত করে।

আমাদের দেশে জন্মালেও কিংবা আমাদের এই দেশে পাওয়া যায় বলে বেশির ভাগ ফুল কিন্তু আমাদের দেশীয় নয়। এদের জন্ম শীত প্রধান দেশে। কোন সেই পুষ্প প্রেমী যার হাত ধরে ভীন দেশ থেকে এদেশে এসেছে এরা তা কেউ জানে না। তবে অন্যদেশ থেকে এলেও এরা এদেশের সাথে মানিয়ে নিয়েছে খুব সহজে। আর এসব শীত প্রধান ফুলের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডালিয়া, বাটন কারেনশন, জিনিয়া, কসমস, পিটুনিয়া, পর্টুলেখা, ভার্বেনা যারা অন্যদেশী ফুল। তবে এদের কিছুর সুন্দর সুন্দর বাংলা নাম ও রয়েছে। যেমন বাটণকে বলা হয় বোতাম ফুল। দেশীয় ফুলের মধ্য রয়েছে কৃষ্ণকলি, গাঁদা ইত্যাদি।

শীতের ফুলের মধ্যে গাঁদা অন্যতম। এতে রয়েছে নানা রঙ আর ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতি। কোনোটা হালকা হলদে, কোনটা হলদে কমলা আবার কোনোটার পাপড়ির মধ্য খয়েরি রঙ। এদের মধ্যে লাল গাঁদাও রয়েছে। আকারের ক্ষেত্রেও রয়েছে তারতম্য। হাইব্রিড জাতের গাঁদা হয়ে থাকে বিশাল আকৃতির। তবে দেখতে বেশ সুন্দর।

শীতের আরেকটি নজরকারা ফুল ডালিয়া। এটির রয়েছে অসংখ্য প্রজাতির। ডালিয়ার মাংসল মূল দিয়ে এর বিস্তার করানো যায়। এর রঙ্গেও আছে নানা রঙয়ের বাহার। সবুজ আর নীল ছাড়াও এতে আছে আরো কিছু রঙ। শীতের আরেকটি ফুল কসমস। তিন থেকে চার ফুট লিম্বা এবং ফালিপাতা বিশিষ্ট এই গাছে ধরে একটি একক ফুল। কসমসে যেমন আছে লাল, সাদা এবং গোলাপি রঙই বেশি দেখা যায়।

কৃষ্ণকলি আমাদের দেশীয় ফুল। এটি হাত দেড়েক লম্বা এবং এতে ছোট ছোট ফুল ফোটে। কোনোটি সাদা আবার কোনোটি গোলাপি।

শীতের ফুল গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি মাপের টবই যথেষ্ট। ছোট আকৃতির গাছ যেমন ডায়ান্থাস, গাঁদা, পিটুনিয়া, গাজানিয়া ইত্যাদি ছোট টবে লাগানো যেতে পারে। তবে ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা এগুলো ১০-১২ ইঞ্চি টবে লাগানো যায়। টবে মাটির সঙ্গে জৈব সার, কম্পোস্ট বা ভার্মিকম্পোস্ট মেশাতে হয়। তার মধ্যে পলিব্যাগের চারা লাগিয়ে চারার গোড়ার মাটি দুই হাতের আঙ্গুল দিয়ে চেপে শক্ত করে দিয়ে এরপর পানি দিতে হয়। গাছে পানি দেয়ার সময় শুধু গাছের গোড়ায় পানি না দিয়ে ঝাঁঝরি দিয়ে গাছের ওপর থেকে বৃষ্টির মতো গাছ-পাতা ভিজিয়ে নিয়মিত হালকা পানি দেয়া ভালো। এতে গাছ বেশি সতেজ থাকে। প্রয়োজন মতো গাছে কাঠি পুঁতে দিতে হবে যেন হেলে না পড়ে।

কোথায় পাবেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কার্জন হলের উল্টোদিকে হাইকোর্ট মাজারের গেটের পাশে, ঢাকা কলেজের সামনে, মোহাম্মদপুর ও আগারগাঁওয়ে টবসহ ফুলগাছ ও ফুলের চারা কিনতে বেশ কয়েকটি দোকান পাবেন। যেখান থেকে আপনার পছন্দের ফুলের চারা কিনে নিতে পারেন। এছাড়াও রাজধানীর বনানী, শেখেরটেক রিং রোড, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে শীতকালীন ফুলের চারা পাওয়া যায়। টবসহ নিতে চাইলে দাম পড়বে একটু বেশি, যেমন- ৬০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

শীতের ফুল

আপডেট টাইম : ০৫:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৬

পৌষ আর মাঘ এই দু’মাস শীত কাল। অগ্রহায়নের নব্বানের বার্তার সাথে শীতের বার্তাও চলে আসে আমাদের মাঝে। নানা ভর্তা আর পিঠা সাথে খেজুরের রস যেনো এই মৌসুমের আনন্দকে আরো একধাপ বাড়িয়ে নেয়। তবে এসব কিছু ছাড়াও এই শীতের এরেকটি চমক হচ্ছে এই মৌসুমের ফুল। যদিও এই সময়ের আদ্রতার জন্য গাছপালা নির্জিব হয়ে পরে তবুও এটি প্রকৃতিতে আনে এক নতুন ছোঁয়া। এই শুষ্কতার মাঝেও বাহারি রঙের  নানা ধরনের ফুল চারিদিককে বিমোহিত করে।

আমাদের দেশে জন্মালেও কিংবা আমাদের এই দেশে পাওয়া যায় বলে বেশির ভাগ ফুল কিন্তু আমাদের দেশীয় নয়। এদের জন্ম শীত প্রধান দেশে। কোন সেই পুষ্প প্রেমী যার হাত ধরে ভীন দেশ থেকে এদেশে এসেছে এরা তা কেউ জানে না। তবে অন্যদেশ থেকে এলেও এরা এদেশের সাথে মানিয়ে নিয়েছে খুব সহজে। আর এসব শীত প্রধান ফুলের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডালিয়া, বাটন কারেনশন, জিনিয়া, কসমস, পিটুনিয়া, পর্টুলেখা, ভার্বেনা যারা অন্যদেশী ফুল। তবে এদের কিছুর সুন্দর সুন্দর বাংলা নাম ও রয়েছে। যেমন বাটণকে বলা হয় বোতাম ফুল। দেশীয় ফুলের মধ্য রয়েছে কৃষ্ণকলি, গাঁদা ইত্যাদি।

শীতের ফুলের মধ্যে গাঁদা অন্যতম। এতে রয়েছে নানা রঙ আর ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতি। কোনোটা হালকা হলদে, কোনটা হলদে কমলা আবার কোনোটার পাপড়ির মধ্য খয়েরি রঙ। এদের মধ্যে লাল গাঁদাও রয়েছে। আকারের ক্ষেত্রেও রয়েছে তারতম্য। হাইব্রিড জাতের গাঁদা হয়ে থাকে বিশাল আকৃতির। তবে দেখতে বেশ সুন্দর।

শীতের আরেকটি নজরকারা ফুল ডালিয়া। এটির রয়েছে অসংখ্য প্রজাতির। ডালিয়ার মাংসল মূল দিয়ে এর বিস্তার করানো যায়। এর রঙ্গেও আছে নানা রঙয়ের বাহার। সবুজ আর নীল ছাড়াও এতে আছে আরো কিছু রঙ। শীতের আরেকটি ফুল কসমস। তিন থেকে চার ফুট লিম্বা এবং ফালিপাতা বিশিষ্ট এই গাছে ধরে একটি একক ফুল। কসমসে যেমন আছে লাল, সাদা এবং গোলাপি রঙই বেশি দেখা যায়।

কৃষ্ণকলি আমাদের দেশীয় ফুল। এটি হাত দেড়েক লম্বা এবং এতে ছোট ছোট ফুল ফোটে। কোনোটি সাদা আবার কোনোটি গোলাপি।

শীতের ফুল গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি মাপের টবই যথেষ্ট। ছোট আকৃতির গাছ যেমন ডায়ান্থাস, গাঁদা, পিটুনিয়া, গাজানিয়া ইত্যাদি ছোট টবে লাগানো যেতে পারে। তবে ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা এগুলো ১০-১২ ইঞ্চি টবে লাগানো যায়। টবে মাটির সঙ্গে জৈব সার, কম্পোস্ট বা ভার্মিকম্পোস্ট মেশাতে হয়। তার মধ্যে পলিব্যাগের চারা লাগিয়ে চারার গোড়ার মাটি দুই হাতের আঙ্গুল দিয়ে চেপে শক্ত করে দিয়ে এরপর পানি দিতে হয়। গাছে পানি দেয়ার সময় শুধু গাছের গোড়ায় পানি না দিয়ে ঝাঁঝরি দিয়ে গাছের ওপর থেকে বৃষ্টির মতো গাছ-পাতা ভিজিয়ে নিয়মিত হালকা পানি দেয়া ভালো। এতে গাছ বেশি সতেজ থাকে। প্রয়োজন মতো গাছে কাঠি পুঁতে দিতে হবে যেন হেলে না পড়ে।

কোথায় পাবেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কার্জন হলের উল্টোদিকে হাইকোর্ট মাজারের গেটের পাশে, ঢাকা কলেজের সামনে, মোহাম্মদপুর ও আগারগাঁওয়ে টবসহ ফুলগাছ ও ফুলের চারা কিনতে বেশ কয়েকটি দোকান পাবেন। যেখান থেকে আপনার পছন্দের ফুলের চারা কিনে নিতে পারেন। এছাড়াও রাজধানীর বনানী, শেখেরটেক রিং রোড, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে শীতকালীন ফুলের চারা পাওয়া যায়। টবসহ নিতে চাইলে দাম পড়বে একটু বেশি, যেমন- ৬০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে।