ঢাকা , বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পর্দায় সঙ্গীতযোদ্ধার নয়া সংগ্রাম আসিফ খান

বাঙালী কন্ঠ ডেস্কঃ ঘড়ির কাঁটা রাত দেড়টা জানান দিচ্ছে। এ গভীর রাতে রাজধানীর রাস্তায় খুব বেশি মানুষের আনাগোনা নেই। কিন্তু একজন মানুষ খুব ব্যস্ত। এফডিসির গেটের কাছে দেয়ালে পোস্টার সাঁটাচ্ছেন তিনি। মানুষটি পরিচিত। শুধু পরিচিত নন, খুব বেশি পরিচিত।

তাই তাকে গভীর রাতে পোস্টার সাঁটাতে দেখে রাস্তায় চলাচলকারী মানুষ দুজন করে থেমে যাচ্ছে। ছোটখাটো জটলা ক্রমেই বড় হচ্ছে। সবার উৎসুক দৃষ্টি। কাছে এসে দেখছেন, এ তো আসিফ আকবর! গভীর রাতে রাস্তায় তিনি পোস্টার সাঁটাচ্ছেন কেন? তাকেই বা পোস্টার সাঁটাতে হবে কেন?

উৎসুক মানুষের মনে এসব প্রশ্নের উদ্রেক হতেই পারে। প্রশ্নটা খোদ আসিফ আকবরের মনেও উদ্রেক হয়েছে নিশ্চয়ই। অবশ্য উত্তরটাও তিনি জানেন। আর জানেন বলেই রাস্তায় নেমেছেন পোস্টার সাঁটাতে। এ যে তার অন্যরকম এক সন্তানের পোস্টার। যে সন্তানকে ধারণ করেছেন তিনি। ঠিক যেমন আজ থেকে প্রায় বিশ বছর আগে এক সন্তানকে যেভাবে ধারণ করেছিলেন বুকের মাঝে। এ দুই সন্তানের একটি হচ্ছে গান, আরেকটি ছবি।

আসিফ আকবর প্রথমবার পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবিতে অভিনয় করেছেন। নাম ‘গহীনের গান’। এটা পুরনো খবর। অনেকবারই এ নিয়ে খবর প্রকাশ হয়েছে। প্রথমবার ছবিতে অভিনয়, এর প্রতি আলাদা আবেগ, ভালোলাগা তো থাকবেই। ঠিক যেমন বিশ বছর আগে প্রথম গানের অ্যালবামের প্রতি যে ভালোলাগা কিংবা আবেগ ছিল। আবেগের বর্শবর্তী হয়ে নিজের প্রথম ছবির পোস্টার নিজেই সাঁটাতে গভীর রাতে রাস্তায় বের হয়েছিলেন আসিফ আকবর।

এফডিসি এলাকা, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ, পল্টনসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ‘গহীনের গান-এর যেসব পোস্টার শোভা পাচ্ছে তার প্রায় সবগুলোয়ই আসিফের হাতের ছোঁয়া রয়েছে। কেন করেছেন তিনি কাজটি সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। বলেছেন, ‘আমি আগেই বলেছি, গহীনের গান ছবিটি দর্শকের হৃদয়ের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। এর জন্য যা যা করণীয়, ধাপে ধাপে সবই করছি আমি বা আমরা। এরই অংশ হিসেবে পোস্টার লাগানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজটি আমি ও আমার সহশিল্পী-কুশলীরা একসঙ্গে আনন্দের সঙ্গে শুরু করেছি।’

ক্যারিয়ারের অনেকবার অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন আসিফ। কিন্তু সব সময় সসম্মানে সব প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। এবার কেন করলেন? তাও আবার দীর্ঘ সময় পর? এ বিষয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দিয়েছেন তিনি।

বলেছেন, ‘প্রথমত, আমি অভিনয়ের মানুষ নই। একটা সময় অডিও গানেই সময় দিয়েছি বেশি। সেটা অ্যালবামই হোক কিংবা সিনেমা। অভিনয় আমাকে কখনই টানেনি। আমি মূলত যোদ্ধা। গান নিয়েই ছিল আমার যুদ্ধ। সেখানে আমি সফল। সবই আল্লাহর ইচ্ছা ও শ্রোতাদের ভালোবাসা। মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করেছি সময়ের প্রয়োজনে। কারণ আমি সময়কে ধারণ করি, সময়ের সঙ্গে থাকতে পছন্দ করি। আগামী বছর থেকে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মিউজিক ভিডিওতেও আর উপস্থিত হব না। তবে গহীনের গান আমার অন্যরকম ভালোলাগার বিষয়। বলা যায় আমার জীবনের গান। এক সঙ্গীতযোদ্ধার গান। তাই এতে অভিনয় করেছি। এটাই শেষ কিনা বলতে পারছি না। তবে অভিনয় আর না করার ইচ্ছাই বেশি।’

আগামীকাল মুক্তি পাচ্ছে বাংলাঢোলের ব্যানারে নির্মিত এ সঙ্গীতযোদ্ধার অভিনীত প্রথম ছবি ‘গহীনের গান’। এটি মূলত একটি ‘মিউজিক্যাল ফিল্ম’। পরিচালনা করেছেন সাদাত হোসেন। আসিফেরই ৯টি গান দিয়ে সাজান হয়েছে এ ছবি। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগ্রহে এটি দেখা যাবে। ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন তমা মির্জা, তানজিকা আমিন, তুলনা আল হারুন, আমান পরজা, কাজী আসিফসহ আরও অনেকে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

পর্দায় সঙ্গীতযোদ্ধার নয়া সংগ্রাম আসিফ খান

আপডেট টাইম : ১০:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯

বাঙালী কন্ঠ ডেস্কঃ ঘড়ির কাঁটা রাত দেড়টা জানান দিচ্ছে। এ গভীর রাতে রাজধানীর রাস্তায় খুব বেশি মানুষের আনাগোনা নেই। কিন্তু একজন মানুষ খুব ব্যস্ত। এফডিসির গেটের কাছে দেয়ালে পোস্টার সাঁটাচ্ছেন তিনি। মানুষটি পরিচিত। শুধু পরিচিত নন, খুব বেশি পরিচিত।

তাই তাকে গভীর রাতে পোস্টার সাঁটাতে দেখে রাস্তায় চলাচলকারী মানুষ দুজন করে থেমে যাচ্ছে। ছোটখাটো জটলা ক্রমেই বড় হচ্ছে। সবার উৎসুক দৃষ্টি। কাছে এসে দেখছেন, এ তো আসিফ আকবর! গভীর রাতে রাস্তায় তিনি পোস্টার সাঁটাচ্ছেন কেন? তাকেই বা পোস্টার সাঁটাতে হবে কেন?

উৎসুক মানুষের মনে এসব প্রশ্নের উদ্রেক হতেই পারে। প্রশ্নটা খোদ আসিফ আকবরের মনেও উদ্রেক হয়েছে নিশ্চয়ই। অবশ্য উত্তরটাও তিনি জানেন। আর জানেন বলেই রাস্তায় নেমেছেন পোস্টার সাঁটাতে। এ যে তার অন্যরকম এক সন্তানের পোস্টার। যে সন্তানকে ধারণ করেছেন তিনি। ঠিক যেমন আজ থেকে প্রায় বিশ বছর আগে এক সন্তানকে যেভাবে ধারণ করেছিলেন বুকের মাঝে। এ দুই সন্তানের একটি হচ্ছে গান, আরেকটি ছবি।

আসিফ আকবর প্রথমবার পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবিতে অভিনয় করেছেন। নাম ‘গহীনের গান’। এটা পুরনো খবর। অনেকবারই এ নিয়ে খবর প্রকাশ হয়েছে। প্রথমবার ছবিতে অভিনয়, এর প্রতি আলাদা আবেগ, ভালোলাগা তো থাকবেই। ঠিক যেমন বিশ বছর আগে প্রথম গানের অ্যালবামের প্রতি যে ভালোলাগা কিংবা আবেগ ছিল। আবেগের বর্শবর্তী হয়ে নিজের প্রথম ছবির পোস্টার নিজেই সাঁটাতে গভীর রাতে রাস্তায় বের হয়েছিলেন আসিফ আকবর।

এফডিসি এলাকা, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ, পল্টনসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ‘গহীনের গান-এর যেসব পোস্টার শোভা পাচ্ছে তার প্রায় সবগুলোয়ই আসিফের হাতের ছোঁয়া রয়েছে। কেন করেছেন তিনি কাজটি সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। বলেছেন, ‘আমি আগেই বলেছি, গহীনের গান ছবিটি দর্শকের হৃদয়ের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। এর জন্য যা যা করণীয়, ধাপে ধাপে সবই করছি আমি বা আমরা। এরই অংশ হিসেবে পোস্টার লাগানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজটি আমি ও আমার সহশিল্পী-কুশলীরা একসঙ্গে আনন্দের সঙ্গে শুরু করেছি।’

ক্যারিয়ারের অনেকবার অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন আসিফ। কিন্তু সব সময় সসম্মানে সব প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। এবার কেন করলেন? তাও আবার দীর্ঘ সময় পর? এ বিষয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দিয়েছেন তিনি।

বলেছেন, ‘প্রথমত, আমি অভিনয়ের মানুষ নই। একটা সময় অডিও গানেই সময় দিয়েছি বেশি। সেটা অ্যালবামই হোক কিংবা সিনেমা। অভিনয় আমাকে কখনই টানেনি। আমি মূলত যোদ্ধা। গান নিয়েই ছিল আমার যুদ্ধ। সেখানে আমি সফল। সবই আল্লাহর ইচ্ছা ও শ্রোতাদের ভালোবাসা। মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করেছি সময়ের প্রয়োজনে। কারণ আমি সময়কে ধারণ করি, সময়ের সঙ্গে থাকতে পছন্দ করি। আগামী বছর থেকে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মিউজিক ভিডিওতেও আর উপস্থিত হব না। তবে গহীনের গান আমার অন্যরকম ভালোলাগার বিষয়। বলা যায় আমার জীবনের গান। এক সঙ্গীতযোদ্ধার গান। তাই এতে অভিনয় করেছি। এটাই শেষ কিনা বলতে পারছি না। তবে অভিনয় আর না করার ইচ্ছাই বেশি।’

আগামীকাল মুক্তি পাচ্ছে বাংলাঢোলের ব্যানারে নির্মিত এ সঙ্গীতযোদ্ধার অভিনীত প্রথম ছবি ‘গহীনের গান’। এটি মূলত একটি ‘মিউজিক্যাল ফিল্ম’। পরিচালনা করেছেন সাদাত হোসেন। আসিফেরই ৯টি গান দিয়ে সাজান হয়েছে এ ছবি। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগ্রহে এটি দেখা যাবে। ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন তমা মির্জা, তানজিকা আমিন, তুলনা আল হারুন, আমান পরজা, কাজী আসিফসহ আরও অনেকে।