ঢাকা , বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডাক্তার হতে চাইলে আগে জানতে হবে

বড় হয়ে ডাক্তার হব! বিজ্ঞান শাখার অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের আজন্ম ইচ্ছা এটা। কারণ আমাদের দেশে এ পেশাটা যে অনেক গৌরবের। আবার মানুষ ছেলেকে ডাক্তার বলবে, প্রায় সব মা-বাবারই এরকম স্বপ্ন থাকে। কারণ সন্তানের ডাক্তার হওয়ার ফলে যে সমাজে মা-বাবার মর্যাদা বেড়ে যায়। সেবার হাত নিয়ে মানুষের কাছে যাওয়ার সবচেয়ে বড় পন্থা হলো ডাক্তারি পেশা। এ মহান পেশার মাধ্যমে মানুষের আবেগকে সহজভাবে বোঝা যায়। মৃত্যু পথযাত্রী একজন মানুষকে সুচিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে সুস্থ ও আলোকিত জীবন ফিরিয়ে দেয়ার চেয়ে বড় জিনিস আর কী হতে পারে? সেবার মানসিকতায় সব শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে খুব সহজে মেশা যায় এ পেশার মাধ্যমে। কারণ প্রত্যেকটা অসুস্থ মানুষই ডাক্তারকে তাদের পরম বন্ধু মনে করে। যার কারণে সমাজে ডাক্তারদের মর্যাদা অন্যান্য পেশার চেয়ে অনেক বেশি। বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজগুলো উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খুব ভালো মানের ডাক্তার গড়ার কারখানা হিসেবে কাজ করছে। আমাদের দেশে ২২টি সরকারি মেডিকেল কলেজ, একটি আর্মি মেডিকেল কলেজ, একটি স্বতন্ত্র ডেন্টাল কলেজ, বেশ কয়েকটি ডেন্টাল ইউনিট এবং ৫০টিরও বেশি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ডাক্তার গড়ার এ মহান কাজটি করছে। সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ মিলে মোট সিট রয়েছে ৩ হাজার ৩৪০টি। রাজধানী ঢাকায় রয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় তিনটি মেডিকেল কলেজ।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, ময়মসিংহ মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ, রংপুর মেডিকেল কলেজÑ এদের প্রত্যেকটিতে ১৯৭টি করে আসন আছে। এছাড়া শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ১৪২টি, বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে ১৩৮টি, খুলনা মেডিকেল কলেজে ১৪২টি, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ১১০টি, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ১১০টি, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে ১৩৮টি, ঢাকা ডেন্টাল কলেজে ১০৫টি, পাবনা-যশোর-কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের প্রত্যেকটিতে ৫৫টি করে এবং সাতক্ষীরা, কিশোরগঞ্জ, কুষ্টিয়া ও গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজের প্রত্যেকটিতে ৫০টি করে সিট বরাদ্দ আছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য মোট ৬৪টি আসন সংরক্ষিত আছে। বিভিন্ন কারণে দেশের অন্য মেডিকেল কলেজগুলোর তুলনায় ঢাকার মেডিকেল কলেজগুলোই শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ থাকে। কারণ এখানে রয়েছে উন্নত সুযোগ-সুবিধা, ভালো প্র্যাকটিসের সুযোগ।
এছাড়া রাজধানীতে থাকার প্রবণতার জন্য দেশের নামকরা ডাক্তাররা ঢাকায় থেকে অধ্যাপনা করতে চান। কিন্তু দেশের অন্য মেডিকেল কলেজগুলোও কম যায় না। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারিত হয় কে কোন মেডিকেলে পড়বে। মেডিকেলে চান্স পাওয়া মানে ডাক্তার হওয়ার দৌড়ে একধাপ এগিয়ে গিয়ে একটা অ্যাপ্রোন গায়ে জড়ানো। অতঃপর রয়েছে চার এবং পাঁচ বছরের কোর্স পড়ে যথাক্রমে এমবিবিএস ও বিডিএস পাস করে ডাক্তারি মর্যাদা লাভ, দেশ-বিদেশে ডাক্তারি বিষয়ে উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা। বাংলাদেশে রয়েছে এফসিপিএস, এমএস, এমডি করার সুযোগ। এতে কেউবা হচ্ছেন নামকরা কার্ডিওলজিস্ট, কেউবা অর্থোপেডিক, কেউ নিউরোলজিস্ট, আবার কেউবা হচ্ছেন নামকরা সার্জন। তারপর দেশ-বিদেশে নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছেন অকাতরে। এমবিবিএসের পাশাপাশি ডেন্টিস্ট্রিও আজ অনেকের পছন্দের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থোডেন্টিকস, ওরাল অ্যান্ড মেক্সিলোফেসিয়াল সার্জারিÑ এ সাবজেক্টগুলো সর্বত্রই অনেক দামি। দেশ-বিদেশে এ পেশায় বিপুল ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে। তাই ডেন্টিস্ট্রিও অবহেলা করার নয়। মেডিকেলে চান্স পাওয়ার শর্ত হলো কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা মেধাবীদের সঙ্গে যুদ্ধ করে উত্তীর্ণ হওয়া। যেহেতু ডাক্তারি একটি অধিক চাহিদাপূর্ণ গৌরবময় পেশা, তাই এ ভর্তি পরীক্ষায় কঠিন প্রতিযোগিতা করে সর্বোচ্চ মেধা দিয়ে উন্নীত হতে হয়। এখানে ৩ হাজার ৩৪০টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষা দেয় প্রায় ৫৫ হাজার শিক্ষার্থী। অর্থাৎ প্রতিটি সিটের বিপরীতে ১৭ জন। তারপরও রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কোটা, পার্বত্য জেলা কোটা, জেলা কোটা, ট্রাইবাল কোটা। এখন নিশ্চয়ই তোমরা বুঝতেই পেরেছ মেডিকেলে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করা কতটা কষ্টসাধ্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। ভর্তি পরীক্ষা হয় মোট ২০০ নম্বরে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্টের ওপর থাকে ১০০ নম্বর। বাকি ১০০ নম্বর থাকে লিখিত পরীক্ষায় এবং এর জন্য সময় বরাদ্দ থাকে এক ঘণ্টা। এ এক ঘণ্টায় ১০০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে এবং প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ করে কাটা যাবে। ভর্তি পরীক্ষার যোগ্যতা হিসেবে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ন্যূনতম জিপিএ-৮ (এসএসসি ও এইচএসসিসহ) এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীর এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএ-৩.৫ এর ওপরে থাকতে হবে। এক্ষেত্রে এসএসসির জিপিএকে ৮ দিয়ে এবং এইচএসসির জিপিএকে ১২ দ্বারা গুণ করে রেজাল্টের ওপর মোট নম্বর হিসাব করা হবে।
বিষয়ভিত্তিক মান বণ্টন : পদার্থ বিজ্ঞান ২০, রসায়ন ২৫, জীববিজ্ঞান ৩০, ইংরেজি ১৫ এবং সাধারণ জ্ঞান ১০।
এখন আসি গৌরবময় ডাক্তারি পেশায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি বিষয়ে। মেডিকেলে চান্স পেতে হলে তোমাকে প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে, হতে হবে চরম অধ্যবসায়ী। স্বল্পসময়ে অনেক বড় সিলেবাস শেষ করতে হলে তোমাকে হতে হবে কৌশলী এবং কাজে লাগাতে হবে প্রতিটা মুহূর্তকে। কম সময়ে এত বিষয়ের পড়াশোনা শেষ করাটা আসলেই কষ্টসাধ্য এবং মাঝে মাঝে বিরক্তিকর মনে হতে পারে। তারপরও নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য সেটা তোমাকে করতেই হবে।
মনে রেখ, এ কয়েকটা মাসের পরিশ্রম তোমার ভাগ্য পরিবর্তন করে দিতে পারে, পূরণ করতে পারে তোমার এবং মা-বাবার স্বপ্ন। মানুষের জীবনে অনেক কষ্টের সময় থাকে। কিন্তু সুখের ছোঁয়ায় মানুষ সেগুলো ভুলে যায়। তাই এ কয়েকটা মাস কষ্ট করে নাও। মেডিকেলে চান্স পেলে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণে তখন কিন্তু তোমার এ কষ্টকর অনুভূতি থাকবে না। তাই এখন থেকে অপ্রয়োজনীয় কাজগুলো থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে একনিষ্ঠভাবে পড়াশোনায় আত্মনিয়োগ কর। প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য মেইন বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

ডাক্তার হতে চাইলে আগে জানতে হবে

আপডেট টাইম : ০৭:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ এপ্রিল ২০১৭

বড় হয়ে ডাক্তার হব! বিজ্ঞান শাখার অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের আজন্ম ইচ্ছা এটা। কারণ আমাদের দেশে এ পেশাটা যে অনেক গৌরবের। আবার মানুষ ছেলেকে ডাক্তার বলবে, প্রায় সব মা-বাবারই এরকম স্বপ্ন থাকে। কারণ সন্তানের ডাক্তার হওয়ার ফলে যে সমাজে মা-বাবার মর্যাদা বেড়ে যায়। সেবার হাত নিয়ে মানুষের কাছে যাওয়ার সবচেয়ে বড় পন্থা হলো ডাক্তারি পেশা। এ মহান পেশার মাধ্যমে মানুষের আবেগকে সহজভাবে বোঝা যায়। মৃত্যু পথযাত্রী একজন মানুষকে সুচিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে সুস্থ ও আলোকিত জীবন ফিরিয়ে দেয়ার চেয়ে বড় জিনিস আর কী হতে পারে? সেবার মানসিকতায় সব শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে খুব সহজে মেশা যায় এ পেশার মাধ্যমে। কারণ প্রত্যেকটা অসুস্থ মানুষই ডাক্তারকে তাদের পরম বন্ধু মনে করে। যার কারণে সমাজে ডাক্তারদের মর্যাদা অন্যান্য পেশার চেয়ে অনেক বেশি। বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজগুলো উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খুব ভালো মানের ডাক্তার গড়ার কারখানা হিসেবে কাজ করছে। আমাদের দেশে ২২টি সরকারি মেডিকেল কলেজ, একটি আর্মি মেডিকেল কলেজ, একটি স্বতন্ত্র ডেন্টাল কলেজ, বেশ কয়েকটি ডেন্টাল ইউনিট এবং ৫০টিরও বেশি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ডাক্তার গড়ার এ মহান কাজটি করছে। সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ মিলে মোট সিট রয়েছে ৩ হাজার ৩৪০টি। রাজধানী ঢাকায় রয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় তিনটি মেডিকেল কলেজ।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, ময়মসিংহ মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ, রংপুর মেডিকেল কলেজÑ এদের প্রত্যেকটিতে ১৯৭টি করে আসন আছে। এছাড়া শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ১৪২টি, বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে ১৩৮টি, খুলনা মেডিকেল কলেজে ১৪২টি, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ১১০টি, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ১১০টি, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে ১৩৮টি, ঢাকা ডেন্টাল কলেজে ১০৫টি, পাবনা-যশোর-কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের প্রত্যেকটিতে ৫৫টি করে এবং সাতক্ষীরা, কিশোরগঞ্জ, কুষ্টিয়া ও গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজের প্রত্যেকটিতে ৫০টি করে সিট বরাদ্দ আছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য মোট ৬৪টি আসন সংরক্ষিত আছে। বিভিন্ন কারণে দেশের অন্য মেডিকেল কলেজগুলোর তুলনায় ঢাকার মেডিকেল কলেজগুলোই শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ থাকে। কারণ এখানে রয়েছে উন্নত সুযোগ-সুবিধা, ভালো প্র্যাকটিসের সুযোগ।
এছাড়া রাজধানীতে থাকার প্রবণতার জন্য দেশের নামকরা ডাক্তাররা ঢাকায় থেকে অধ্যাপনা করতে চান। কিন্তু দেশের অন্য মেডিকেল কলেজগুলোও কম যায় না। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারিত হয় কে কোন মেডিকেলে পড়বে। মেডিকেলে চান্স পাওয়া মানে ডাক্তার হওয়ার দৌড়ে একধাপ এগিয়ে গিয়ে একটা অ্যাপ্রোন গায়ে জড়ানো। অতঃপর রয়েছে চার এবং পাঁচ বছরের কোর্স পড়ে যথাক্রমে এমবিবিএস ও বিডিএস পাস করে ডাক্তারি মর্যাদা লাভ, দেশ-বিদেশে ডাক্তারি বিষয়ে উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা। বাংলাদেশে রয়েছে এফসিপিএস, এমএস, এমডি করার সুযোগ। এতে কেউবা হচ্ছেন নামকরা কার্ডিওলজিস্ট, কেউবা অর্থোপেডিক, কেউ নিউরোলজিস্ট, আবার কেউবা হচ্ছেন নামকরা সার্জন। তারপর দেশ-বিদেশে নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছেন অকাতরে। এমবিবিএসের পাশাপাশি ডেন্টিস্ট্রিও আজ অনেকের পছন্দের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থোডেন্টিকস, ওরাল অ্যান্ড মেক্সিলোফেসিয়াল সার্জারিÑ এ সাবজেক্টগুলো সর্বত্রই অনেক দামি। দেশ-বিদেশে এ পেশায় বিপুল ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে। তাই ডেন্টিস্ট্রিও অবহেলা করার নয়। মেডিকেলে চান্স পাওয়ার শর্ত হলো কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা মেধাবীদের সঙ্গে যুদ্ধ করে উত্তীর্ণ হওয়া। যেহেতু ডাক্তারি একটি অধিক চাহিদাপূর্ণ গৌরবময় পেশা, তাই এ ভর্তি পরীক্ষায় কঠিন প্রতিযোগিতা করে সর্বোচ্চ মেধা দিয়ে উন্নীত হতে হয়। এখানে ৩ হাজার ৩৪০টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষা দেয় প্রায় ৫৫ হাজার শিক্ষার্থী। অর্থাৎ প্রতিটি সিটের বিপরীতে ১৭ জন। তারপরও রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কোটা, পার্বত্য জেলা কোটা, জেলা কোটা, ট্রাইবাল কোটা। এখন নিশ্চয়ই তোমরা বুঝতেই পেরেছ মেডিকেলে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করা কতটা কষ্টসাধ্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। ভর্তি পরীক্ষা হয় মোট ২০০ নম্বরে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্টের ওপর থাকে ১০০ নম্বর। বাকি ১০০ নম্বর থাকে লিখিত পরীক্ষায় এবং এর জন্য সময় বরাদ্দ থাকে এক ঘণ্টা। এ এক ঘণ্টায় ১০০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে এবং প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ করে কাটা যাবে। ভর্তি পরীক্ষার যোগ্যতা হিসেবে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ন্যূনতম জিপিএ-৮ (এসএসসি ও এইচএসসিসহ) এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীর এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএ-৩.৫ এর ওপরে থাকতে হবে। এক্ষেত্রে এসএসসির জিপিএকে ৮ দিয়ে এবং এইচএসসির জিপিএকে ১২ দ্বারা গুণ করে রেজাল্টের ওপর মোট নম্বর হিসাব করা হবে।
বিষয়ভিত্তিক মান বণ্টন : পদার্থ বিজ্ঞান ২০, রসায়ন ২৫, জীববিজ্ঞান ৩০, ইংরেজি ১৫ এবং সাধারণ জ্ঞান ১০।
এখন আসি গৌরবময় ডাক্তারি পেশায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি বিষয়ে। মেডিকেলে চান্স পেতে হলে তোমাকে প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে, হতে হবে চরম অধ্যবসায়ী। স্বল্পসময়ে অনেক বড় সিলেবাস শেষ করতে হলে তোমাকে হতে হবে কৌশলী এবং কাজে লাগাতে হবে প্রতিটা মুহূর্তকে। কম সময়ে এত বিষয়ের পড়াশোনা শেষ করাটা আসলেই কষ্টসাধ্য এবং মাঝে মাঝে বিরক্তিকর মনে হতে পারে। তারপরও নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য সেটা তোমাকে করতেই হবে।
মনে রেখ, এ কয়েকটা মাসের পরিশ্রম তোমার ভাগ্য পরিবর্তন করে দিতে পারে, পূরণ করতে পারে তোমার এবং মা-বাবার স্বপ্ন। মানুষের জীবনে অনেক কষ্টের সময় থাকে। কিন্তু সুখের ছোঁয়ায় মানুষ সেগুলো ভুলে যায়। তাই এ কয়েকটা মাস কষ্ট করে নাও। মেডিকেলে চান্স পেলে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণে তখন কিন্তু তোমার এ কষ্টকর অনুভূতি থাকবে না। তাই এখন থেকে অপ্রয়োজনীয় কাজগুলো থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে একনিষ্ঠভাবে পড়াশোনায় আত্মনিয়োগ কর। প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য মেইন বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই।