সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় জন্মের পর থেকে বিনামূল্যে দেড় মাস বয়স থেকে শিশুদের বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক টিকা দেওয়া হয়। এর আওতায় কিশোরগঞ্জের ভৈরবে তিন সপ্তাহ ধরে টিকা সংকট দেখা দিয়েছে। এতে চরম উদ্বিগ্ন রয়েছেন অভিভাবকরা।
তথ্যমতে, বছরে ভৈরবে টিকার চাহিদা ১০ হাজারের উপরে। ভৈরব একটি চলমান এলাকা থাকায় সরবরাহের চেয়ে চাহিদা বেশি থাকে। তাই প্রতিবছরই টিকার সংকট দেখা দেয়। তবে বর্তমানে হুমকির মুখে ১০ হাজার শিশুর স্বাস্থ্যসুরক্ষা। স্বাস্থ্য বিভাগ ও কর্তৃপক্ষের দাবি, সরবরাহ না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে কার্যক্রম। অচিরেই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার আশা তাদের।
স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্রমতে, ভৈরব পৌরসভাসহ সাতটি ইউনিয়নে চলতি বছরে ১০ হাজার শিশুকে টিকার আওতায় আনা হয়। কিন্তু তিন সপ্তাহ ধরে আটটি টিকার মধ্যে পাঁচ ধরনের টিকার সংকট দেখা দিয়েছে। শিশুদের ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুষ্টঙ্কার, হেপাটাইটিস-বি, ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ পাঁচটি রোগের সমম্বয়ে পেন্টাভ্যালেন, পেরালাইসিস ও অবসরজনিত কারণে ওপিভি টিকা, নিওমোনিয়াজনিত কারণে পিভিসি টিকা, পোলিও রোগের আইপিভি, হাম ও রুবেলা রোগে এম আর টিকা দিতে হয়। এই পাঁচটি টিকা শূন্য থেকে ২৩ মাস বয়সের শিশুর জীবনরক্ষায় প্রয়োজন। কিন্তু ভৈরবে তিন সপ্তাহ ধরে মাতৃসদন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে মিলছে না এসব টিকা। এই পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের উদ্বেগের পাশাপাশি বেড়েছে দুর্ভোগ।
ভৈরববাজারের বাগানবাড়ির বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, জন্মের পর থেকে ২৩ মাস বয়সের মধ্যে ১০টি বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক টিকা দিতে হয়, যা প্রতিটি শিশুর জন্মগত অধিকার। নবজাতকসহ প্রত্যেক শিশুর সঠিক সময়ে স্বাস্থ্যসুরক্ষা সব শিশুর অধিকার।
পৌরসভার মাতৃসদনের টিকাদান সুপারভাইজার মো. নূর বলেন, নিয়ম অনুযায়ী টিকা দেওয়া হয়। এখন টিকা নেই। টিকা এলে নিদের্শনা অনুযায়ী বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেওয়া হবে।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ বলেন, ভৈরব তিন জেলার সমম্বয়ে থাকায় চলমান এরিয়া হিসেবে সরবরাহের তুলতায় চাহিদা বেশি থাকে সবসময়। টিকা সংকট থাকায় তিন সপ্তাহ ধরে টিকাদান ব্যাহত হচ্ছে। অচিরেই এর সমাধান হবে।
ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিদুওয়ান আহমেদ রাফি বলেন, টিকা সংকটের কথা আমরা সিভিল সার্জনসহ স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমাদের চাহিদা তালিকা পাঠানো হয়েছে। অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।