ঢাকা , বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুধু গাজীপুর নয়, সব নির্বাচন সুষ্ঠু হবে: ইসি আলমগীর

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদে যত নির্বাচন হবে, তার সবগুলোই গাজীপুরের মতো ‘একই মানের’ করার চেষ্টা থাকবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান কমিশনের সময়ে কোনো নির্বাচন নিয়ে ভোটার বা কোনো পক্ষ থেকে প্রশ্ন ওঠেনি। আমাদের দায়িত্ব হলো সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা, সেটা আমরা যাচ্ছি।’

রবিবার (২৮ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন নির্বাচন কশিমনার আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘শুধু গাজীপুর কেন, আমাদের সময়ে যত নির্বাচন হবে, সবগুলো একই মানের করার চেষ্টা করব।’

সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ‘চাপ নেই’ এবং স্বাধীনভাবে কাজ করছেন বলেও দাবি করেছেন এই নির্বাচন কমিশনার। যারা সমালোচনা করার, তারা তা করেই যাবেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় বলেছি যে, নির্বাচনটা সুষ্ঠু হবে, সুন্দর হবে। আমাদের কাজ হলো যেসব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে আসবে, তাদের সবাইকে সমান সুযোগ দেওয়া। যেটা আমাদের পক্ষ থেকে দিতে হবে এবং সবার জন্য সমান মাঠ রাখব। সবাই নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন সেই ব্যবস্থা আমরা করব।’

কাজী রকিবউদ্দিন এবং পরে কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন দুটি নির্বাচন কমিশনের আয়োজন করা বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ছিল।

এর পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেয় কাজী হাবিবুল আউয়ালের বর্তমান কমিশন।

গত সোয়া এক বছরে তিনটি সিটি করপোরেশন ছাড়াও স্থানীয় সরকারে বেশ কিছু এলাকায় ভোটের আয়োজন হয়েছে। জাতীয় সংসদের কয়েকটি আসনে উপনির্বাচনও হয়েছে এই সময়ে।

এই ভোট নিয়ে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের বিতর্ক হয়নি। সরকারি দলের প্রার্থী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে একাধিক ঘটনায় কঠোর হয়েছে নির্বাচন কমিশন। সিসিটিভি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ভোট কক্ষে অননুমোদিত ব্যক্তির উপস্থিতি দেখে নির্বাচন বাতিলের মতো সিদ্ধান্তও এসেছে।

তিন সিটি রংপুর, কুমিল্লা ও সবশেষ গাজীপুর সিটি করপোরেশনেও ভোট হয়েছে শান্তিপূর্ণ। ভোটার বা কোনো পক্ষ থেকেই ভোট নিয়ে তেমন কোনো আপত্তি আসেনি।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে আরও চারটি মহানগরে ভোটের আয়োজন চলছে। এর মধ্যে ২৫ মে গাজীপুরে ভোট হয়েছে। খুলনা ও বরিশালে ১২ জুন এবং রাজশাহী ও সিলেটে ২১ জুন ভোটের তারিখ রয়েছে।

সবগুলো শহরেই গাজীপুরের মতো ‘ভালো’ নির্বাচন করার আশ্বাস দিয়ে মো. আলমগীর বলেন, ‘(গাজীপুরে) নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, সবার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। সবার সমান দায়িত্বপালন করার জন্য এবং ন্যায়সঙ্গত দায়িত্বপালন করার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সক্ষমতা আগে যেমন ছিল, এখনো তেমনি আছে। বাড়েওনি, কমেওনি। আমরা আসার পর যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, সহিংসতার ঘটনা কিন্তু ঘটেনি। যারা সমালোচনা করেন তারা তো সমালোচনা করবেনই। তারা ভালো হলেও করেন, খারাপ হলেও করেন। তারা সমালোচনা করবেনই।’

যারা ভোট দিয়েছেন, কেন্দ্রে ছিলেন তারা কেউ বিরুদ্ধে কিছু ‘বলছেন না’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশে সুষ্ঠু ভোটে বাধা দিলে তিনি বা তার পরিবারের সদস্যরা ভিসা পাবে না বলে যুক্তরাষ্ট্র সরকার যে নীতি ঘোষণা করেছে, তার সঙ্গে সুষ্ঠু ভোটের কোনো সম্পর্ক দেখছেন না মো. আলমগীর।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজ হলো নির্বাচন কমিশনের যে আইন কানুন আছে, বিধি আছে, ম্যানুয়াল আছে সে অনুযায়ী আমাদের সঠিকভাবে কাজগুলো করা।’

মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘তাদের (সরকার) কোনো নির্দেশনা আসেনি। যে কোনো পরিস্থিতে যেকোনো পরিবেশে ইসির দায়িত্ব হলো আইন মেনে সুষ্ঠু একটা নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, যা আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে করে আসছি এবং যতদিন আমরা আছি সেভাবে করব।’

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

শুধু গাজীপুর নয়, সব নির্বাচন সুষ্ঠু হবে: ইসি আলমগীর

আপডেট টাইম : ০৩:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ মে ২০২৩

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদে যত নির্বাচন হবে, তার সবগুলোই গাজীপুরের মতো ‘একই মানের’ করার চেষ্টা থাকবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান কমিশনের সময়ে কোনো নির্বাচন নিয়ে ভোটার বা কোনো পক্ষ থেকে প্রশ্ন ওঠেনি। আমাদের দায়িত্ব হলো সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা, সেটা আমরা যাচ্ছি।’

রবিবার (২৮ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন নির্বাচন কশিমনার আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘শুধু গাজীপুর কেন, আমাদের সময়ে যত নির্বাচন হবে, সবগুলো একই মানের করার চেষ্টা করব।’

সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ‘চাপ নেই’ এবং স্বাধীনভাবে কাজ করছেন বলেও দাবি করেছেন এই নির্বাচন কমিশনার। যারা সমালোচনা করার, তারা তা করেই যাবেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় বলেছি যে, নির্বাচনটা সুষ্ঠু হবে, সুন্দর হবে। আমাদের কাজ হলো যেসব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে আসবে, তাদের সবাইকে সমান সুযোগ দেওয়া। যেটা আমাদের পক্ষ থেকে দিতে হবে এবং সবার জন্য সমান মাঠ রাখব। সবাই নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন সেই ব্যবস্থা আমরা করব।’

কাজী রকিবউদ্দিন এবং পরে কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন দুটি নির্বাচন কমিশনের আয়োজন করা বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ছিল।

এর পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেয় কাজী হাবিবুল আউয়ালের বর্তমান কমিশন।

গত সোয়া এক বছরে তিনটি সিটি করপোরেশন ছাড়াও স্থানীয় সরকারে বেশ কিছু এলাকায় ভোটের আয়োজন হয়েছে। জাতীয় সংসদের কয়েকটি আসনে উপনির্বাচনও হয়েছে এই সময়ে।

এই ভোট নিয়ে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের বিতর্ক হয়নি। সরকারি দলের প্রার্থী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে একাধিক ঘটনায় কঠোর হয়েছে নির্বাচন কমিশন। সিসিটিভি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ভোট কক্ষে অননুমোদিত ব্যক্তির উপস্থিতি দেখে নির্বাচন বাতিলের মতো সিদ্ধান্তও এসেছে।

তিন সিটি রংপুর, কুমিল্লা ও সবশেষ গাজীপুর সিটি করপোরেশনেও ভোট হয়েছে শান্তিপূর্ণ। ভোটার বা কোনো পক্ষ থেকেই ভোট নিয়ে তেমন কোনো আপত্তি আসেনি।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে আরও চারটি মহানগরে ভোটের আয়োজন চলছে। এর মধ্যে ২৫ মে গাজীপুরে ভোট হয়েছে। খুলনা ও বরিশালে ১২ জুন এবং রাজশাহী ও সিলেটে ২১ জুন ভোটের তারিখ রয়েছে।

সবগুলো শহরেই গাজীপুরের মতো ‘ভালো’ নির্বাচন করার আশ্বাস দিয়ে মো. আলমগীর বলেন, ‘(গাজীপুরে) নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, সবার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। সবার সমান দায়িত্বপালন করার জন্য এবং ন্যায়সঙ্গত দায়িত্বপালন করার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সক্ষমতা আগে যেমন ছিল, এখনো তেমনি আছে। বাড়েওনি, কমেওনি। আমরা আসার পর যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, সহিংসতার ঘটনা কিন্তু ঘটেনি। যারা সমালোচনা করেন তারা তো সমালোচনা করবেনই। তারা ভালো হলেও করেন, খারাপ হলেও করেন। তারা সমালোচনা করবেনই।’

যারা ভোট দিয়েছেন, কেন্দ্রে ছিলেন তারা কেউ বিরুদ্ধে কিছু ‘বলছেন না’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশে সুষ্ঠু ভোটে বাধা দিলে তিনি বা তার পরিবারের সদস্যরা ভিসা পাবে না বলে যুক্তরাষ্ট্র সরকার যে নীতি ঘোষণা করেছে, তার সঙ্গে সুষ্ঠু ভোটের কোনো সম্পর্ক দেখছেন না মো. আলমগীর।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজ হলো নির্বাচন কমিশনের যে আইন কানুন আছে, বিধি আছে, ম্যানুয়াল আছে সে অনুযায়ী আমাদের সঠিকভাবে কাজগুলো করা।’

মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘তাদের (সরকার) কোনো নির্দেশনা আসেনি। যে কোনো পরিস্থিতে যেকোনো পরিবেশে ইসির দায়িত্ব হলো আইন মেনে সুষ্ঠু একটা নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, যা আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে করে আসছি এবং যতদিন আমরা আছি সেভাবে করব।’