বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার ৯৮ দিন পর কবর থেকে মিরাজ খানের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য আদালতের নির্দেশে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মরদেহ নেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে লালমনিরহাটের আদিতমারীর মহিষখোচায় নিজ পারিবারিক কবরস্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
মিরাজ খান মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি উত্তীর্ণ হয়ে কলেজে ভর্তি হয়ে ঢাকায় মোবাইলের দোকানে কাজ করতে গিয়েছিল। তিনি উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের খানপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ীতে মিছিলে অংশ নেন তিনি। গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর মিছিলে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হয় মিরাজ। পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা ঢাকায় মেডিকেলে ও পরে একটি স্থানীয় ক্লিনিকে অপারেশন করানোর জোর চেষ্টা করেও চিকিৎসকের দেখা না পাওয়ায় রংপুর মেডিকেলে নিয়ে আসেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে তার বাবা আব্দুস সালাম ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে লালমনিরহাট ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. মোতাহার হোসেন, লালমনিরহাট ২ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও লালমনিরহাট ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. মতিয়ার রহমানসহ মোট ৩৬ জন। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ২০০-৩০০ জনকে।
মরদেহ উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) এ কে এম ফজলুল হক, আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরে আলম সিদ্দিকী, আদিতমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সানাউল হাসানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা।
এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) কাওসার হোসেন বলেন, ‘ভুক্তভোগী মিরাজের বাবা দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাজ শেষে আবারও মরদেহ ফেরত নিয়ে আসা হবে।’