ঢাকা , সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফুটপাতের ঈদ বাজার: ‘চানরাইত পর্যন্ত দেহন লাগব

রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট মোড়ের পাশে শিশুদের কাপড়চোপড়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ইমরান হোসেন, রোজার অর্ধেকেও তার বিক্রি ঠিক জমে ওঠেনি।

সারা দিনে অল্প কিছু ক্রেতা পাচ্ছেন ফুটপাতের এই ব্যবসায়ী, অপেক্ষায় আছেন ঈদ উপলক্ষে শেষ মুহূর্তে ঢাকা ছাড়া স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য।

শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ইমরান বলেন, “চানরাইত পর্যন্ত দেহন লাগব। এই দিক দিয়া সদরঘাট হইয়া মানুষ ঢাকা ছাড়ব আর কিনতে আসব, হেই আশায় আছি। বেচা-বিক্রি শেষ কইরা আমরাও বাড়িত যামু।”

ইমরানের দোকান থেকেই এদিন ছেলেমেয়ের জন্য ঈদের জামা-প্যান্ট কেনেন মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার আউয়াল মিয়া; ঢাকায় অন্য একটি কাজে এসে ফেরার পথে ছেলেমেয়ের জন্য ঈদের কেনাকাটা সারেন তিনি।

আউয়াল বললেন, “এখানে কম দামে পাওয়া যায়। আমার মত গরিবেরা তো বড় মার্কেটে যাইতে পারে না। এহানেই ভরসা।”

প্রতি বছর রোজার প্রথম সপ্তাহ থেকেই স্বল্প পরিসরে ঈদের কেনাকাটা শুরু হয় অভিজাত বিপণিবিতান বা শপিং মলগুলোতে। সেইসঙ্গে রাস্তার পাশের ভ্রাম্যমাণ দোকান কিংবা টং দোকানগুলোতেও লাগে ঈদবাজারের আমেজ, যেখানে ভিড় করেন স্বল্প আয়ের মানুষেরা।

এবার রোজার অর্ধেকে এসে শপিংমলগুলোতে মোটামুটি ভিড় জমলেও ক্রেতা না পাওয়ার কথা বলছেন ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা। তারা অপেক্ষায় আছেন একেবারে ঈদের শেষ দুই-তিন দিনের জন্য।

শনিবার রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ হকার্স সমিতি মার্কেট, গুলিস্তান মোড়ের চারপাশের ফুটপাত, গোলাপ শাহ মাজার সংলগ্ন ফুটপাত, জাতীয় গ্রন্থাগারের গলির ফুটপাতের মার্কেটে ক্রেতাদের আনাগোনা অন্য স্বাভাবিক দিনের মতই।

বিক্রেতারা বলছেন, তাদের বেশিরভাগ ক্রেতা স্বল্প আয়ের মানুষ। ঈদের দু-চার দিন আগে বেতন পেয়ে বাড়ি ফেরার পথে তারা কেনাকাটা করবেন, সেই অপেক্ষায় রয়েছেন। আর এবার রোজার মাসের অর্ধেকে এসে ক্রেতা যা পাচ্ছেন, তা অন্যবারের তুলনায় কম।

এসব দোকানে ছোটদের শার্ট-প্যান্ট ও টি-শার্টসহ বিভিন্ন পোশাক পাওয়া যায় ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকার মধ্যে। বড়দের শার্ট ও টিশার্ট এক দামে বিক্রি হয় বিভিন্ন দামে। ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকাতেও বিক্রি হয়। কোথাও আবারও হাঁকডাক চলে- ‘বাইছা লন একশ, দেইখা লন একশ’, ‘বাইছা লন দুইশ, দেইখা লন দুইশ’।

তবে ফুটপাতে যারা টং দোকান নিয়ে বসেন, তাদের পোশাকের দাম আবার একটু বেশি। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ হকার্স সমিতি মার্কেট, গুলিস্তান মোড়ের চারপাশের ফুটপাত, গোলাপ শাহ মাজার সংলগ্ন ফুটপাতের টং দোকানগুলোতে দেখা যায়, ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে দেড় হাজার টাকা দামেও পোশাক বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি বছর রোজার মাঝামাঝিতে এসব দোকানে ঈদের বিক্রি মোটামুটি শুরু হলেও এবার ‘ক্রেতা খরার’ কথা বলছেন দোকানিরা।

গুলিস্তানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৬০০ টাকা বিক্রির কথা বললেন মো. রিফাত। হকার্স সমিতি মার্কেটে রাস্তায় দাঁড়িয়ে শার্ট-প্যান্ট ও টি-শার্ট বিক্রি করেন তিনি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে রিফাত বলেন, “ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ, গুলিস্তানের মত জায়গায় দাঁড়িয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৬০০ টাকা বিক্রি করেছি। এখানে দাঁড়িয়ে ব্যবসা করলেও কর্মচারীসহ দোকান খরচ আছে এক হাজার টাকা।”

তিনি বলেন, “ঈদের আগে এমন ব্যবসা কোনো সময়ই হয়নি। গতকাল (শুক্রবার) বন্ধের দিন ছিল, প্রায় ১০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। অবস্থা এমন যে বন্ধের দিনের লাভ দিয়ে কভার করতে হবে। হয়ত ঈদের আগে কিছু বেচাকেনা বাড়বে। আর মানুষের হাতে তো টাকা নাই, কিনবে কেমনে।”

ঈদের আগে ভিড়ের কথা চিন্তা করে হকার্স মার্কেট থেকে শনিবার কাপড় কিনছিলেন ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে আয়া তাসলিমা আক্তার। তিনি বলেন, “বাচ্চাদের জন্য জামাকাপড় এখান থেকেই নেই সবসময়। এখানে কাপড়ের দাম কম, ঈদের আগে ভিড় একটু বেশি থাকে। তাই এখনই নিয়ে রাখতেছি।”

পীর ইয়ামেনী মার্কেটের উল্টো পাশের ফুটপাতে টং দোকানের মালিক মো. রানা বলেন, “ঈদের কেনাকাটা নাই, মানুষ না আসলে বিক্রি কোথা থেকে হবে। আগের মতই চলছে, গতকাল (শুক্রবার) একটু ব্যবসা হয়েছে। তবে আজকেও তো শনিবার বন্ধের দিন, কিন্তু বিক্রি নাই।

“আমাদের এই মার্কেটগুলোতে শুক্র-শনিবারেই ব্যবসা হয়। কিন্তু ঈদে সামনে রেখে আজকে শনিবারে কোনো কাস্টমার নাই। সারা দিনে মাত্র ৩ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। অন্য বছর এই সময়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বিক্রি হয়। ব্যবসার অবস্থা খারাপ। ঈদ উপলক্ষে যে কাপড় তুলেছি তা বিক্রি করতে পারব কিনা সেটাই বিষয়।”

গোলাপশাহ মাজারের পূর্বপাশের ফুটপাতে দোকানি আল আমিন বলেন, “এই ঈদে বেচাকেনা নাই। গতবছর এই সময়ে প্রতিদিন অন্তত ১০-১২ হাজার টাকা বিক্রি হত। আজকে দুই দোকানে মিলিয়ে আটশ টাকা বিক্রি হয়েছে। লোকজন নাই, বেচাবিক্রিও নাই।”

কাপড়-চোপড়ের এবারের দামের প্রসঙ্গ তুললে আল আমিন বলেন, “মার্কেটের কাপড় আর আমাদের কাপড়ের মধ্যে তেমন পার্থক্য নাই। আমাদের এসি খরচ নাই, লাইট খরচ নাই, তাই আমরা কম দামে বিক্রি করছি।”

রাজধানীর নিউ মার্কেটের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, “কাপড়ের মান একই, আমরা এক জায়গা থেকেই কিনি। ওরা এনে ঘরে তোলে, আর আমরা রাস্তায় বসি। আমাদের দোকানে আপনি ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে ভালো কাপড় পাবেন।”

রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোকে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য ‘আশির্বাদ’ মনে করেন কুমিল্লার খায়রুল ইসলাম। রোগী দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। বাড়ি ফেরার পথে গুলিস্তান থেকে সেরে নিচ্ছিলেন ঈদের কেনাকাটা।

খায়রুল বলেন, “কম দামে কাপড় কেনা যায়, তাই এখান থেকে ছেলেমেয়েদের জন্য আর আমার জন্যও কয়েকটা কাপড় নেব। ঈদের আগে আর আসার মত সুযোগ হবে না, তাই বাড়ি থেকে আসার সময়ই ঈদের জামাকাপড় কেনার টাকা নিয়ে আসছি।

“এখান থেকে কম দামে সবার জন্য কাপড় নিয়ে যাব, বাচ্চাদের জন্য কিনেছি। আমার জন্য দেখতেছি।”

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

ফুটপাতের ঈদ বাজার: ‘চানরাইত পর্যন্ত দেহন লাগব

আপডেট টাইম : ১৩ ঘন্টা আগে

রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট মোড়ের পাশে শিশুদের কাপড়চোপড়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ইমরান হোসেন, রোজার অর্ধেকেও তার বিক্রি ঠিক জমে ওঠেনি।

সারা দিনে অল্প কিছু ক্রেতা পাচ্ছেন ফুটপাতের এই ব্যবসায়ী, অপেক্ষায় আছেন ঈদ উপলক্ষে শেষ মুহূর্তে ঢাকা ছাড়া স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য।

শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ইমরান বলেন, “চানরাইত পর্যন্ত দেহন লাগব। এই দিক দিয়া সদরঘাট হইয়া মানুষ ঢাকা ছাড়ব আর কিনতে আসব, হেই আশায় আছি। বেচা-বিক্রি শেষ কইরা আমরাও বাড়িত যামু।”

ইমরানের দোকান থেকেই এদিন ছেলেমেয়ের জন্য ঈদের জামা-প্যান্ট কেনেন মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার আউয়াল মিয়া; ঢাকায় অন্য একটি কাজে এসে ফেরার পথে ছেলেমেয়ের জন্য ঈদের কেনাকাটা সারেন তিনি।

আউয়াল বললেন, “এখানে কম দামে পাওয়া যায়। আমার মত গরিবেরা তো বড় মার্কেটে যাইতে পারে না। এহানেই ভরসা।”

প্রতি বছর রোজার প্রথম সপ্তাহ থেকেই স্বল্প পরিসরে ঈদের কেনাকাটা শুরু হয় অভিজাত বিপণিবিতান বা শপিং মলগুলোতে। সেইসঙ্গে রাস্তার পাশের ভ্রাম্যমাণ দোকান কিংবা টং দোকানগুলোতেও লাগে ঈদবাজারের আমেজ, যেখানে ভিড় করেন স্বল্প আয়ের মানুষেরা।

এবার রোজার অর্ধেকে এসে শপিংমলগুলোতে মোটামুটি ভিড় জমলেও ক্রেতা না পাওয়ার কথা বলছেন ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা। তারা অপেক্ষায় আছেন একেবারে ঈদের শেষ দুই-তিন দিনের জন্য।

শনিবার রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ হকার্স সমিতি মার্কেট, গুলিস্তান মোড়ের চারপাশের ফুটপাত, গোলাপ শাহ মাজার সংলগ্ন ফুটপাত, জাতীয় গ্রন্থাগারের গলির ফুটপাতের মার্কেটে ক্রেতাদের আনাগোনা অন্য স্বাভাবিক দিনের মতই।

বিক্রেতারা বলছেন, তাদের বেশিরভাগ ক্রেতা স্বল্প আয়ের মানুষ। ঈদের দু-চার দিন আগে বেতন পেয়ে বাড়ি ফেরার পথে তারা কেনাকাটা করবেন, সেই অপেক্ষায় রয়েছেন। আর এবার রোজার মাসের অর্ধেকে এসে ক্রেতা যা পাচ্ছেন, তা অন্যবারের তুলনায় কম।

এসব দোকানে ছোটদের শার্ট-প্যান্ট ও টি-শার্টসহ বিভিন্ন পোশাক পাওয়া যায় ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকার মধ্যে। বড়দের শার্ট ও টিশার্ট এক দামে বিক্রি হয় বিভিন্ন দামে। ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকাতেও বিক্রি হয়। কোথাও আবারও হাঁকডাক চলে- ‘বাইছা লন একশ, দেইখা লন একশ’, ‘বাইছা লন দুইশ, দেইখা লন দুইশ’।

তবে ফুটপাতে যারা টং দোকান নিয়ে বসেন, তাদের পোশাকের দাম আবার একটু বেশি। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ হকার্স সমিতি মার্কেট, গুলিস্তান মোড়ের চারপাশের ফুটপাত, গোলাপ শাহ মাজার সংলগ্ন ফুটপাতের টং দোকানগুলোতে দেখা যায়, ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে দেড় হাজার টাকা দামেও পোশাক বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি বছর রোজার মাঝামাঝিতে এসব দোকানে ঈদের বিক্রি মোটামুটি শুরু হলেও এবার ‘ক্রেতা খরার’ কথা বলছেন দোকানিরা।

গুলিস্তানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৬০০ টাকা বিক্রির কথা বললেন মো. রিফাত। হকার্স সমিতি মার্কেটে রাস্তায় দাঁড়িয়ে শার্ট-প্যান্ট ও টি-শার্ট বিক্রি করেন তিনি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে রিফাত বলেন, “ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ, গুলিস্তানের মত জায়গায় দাঁড়িয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৬০০ টাকা বিক্রি করেছি। এখানে দাঁড়িয়ে ব্যবসা করলেও কর্মচারীসহ দোকান খরচ আছে এক হাজার টাকা।”

তিনি বলেন, “ঈদের আগে এমন ব্যবসা কোনো সময়ই হয়নি। গতকাল (শুক্রবার) বন্ধের দিন ছিল, প্রায় ১০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। অবস্থা এমন যে বন্ধের দিনের লাভ দিয়ে কভার করতে হবে। হয়ত ঈদের আগে কিছু বেচাকেনা বাড়বে। আর মানুষের হাতে তো টাকা নাই, কিনবে কেমনে।”

ঈদের আগে ভিড়ের কথা চিন্তা করে হকার্স মার্কেট থেকে শনিবার কাপড় কিনছিলেন ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে আয়া তাসলিমা আক্তার। তিনি বলেন, “বাচ্চাদের জন্য জামাকাপড় এখান থেকেই নেই সবসময়। এখানে কাপড়ের দাম কম, ঈদের আগে ভিড় একটু বেশি থাকে। তাই এখনই নিয়ে রাখতেছি।”

পীর ইয়ামেনী মার্কেটের উল্টো পাশের ফুটপাতে টং দোকানের মালিক মো. রানা বলেন, “ঈদের কেনাকাটা নাই, মানুষ না আসলে বিক্রি কোথা থেকে হবে। আগের মতই চলছে, গতকাল (শুক্রবার) একটু ব্যবসা হয়েছে। তবে আজকেও তো শনিবার বন্ধের দিন, কিন্তু বিক্রি নাই।

“আমাদের এই মার্কেটগুলোতে শুক্র-শনিবারেই ব্যবসা হয়। কিন্তু ঈদে সামনে রেখে আজকে শনিবারে কোনো কাস্টমার নাই। সারা দিনে মাত্র ৩ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। অন্য বছর এই সময়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বিক্রি হয়। ব্যবসার অবস্থা খারাপ। ঈদ উপলক্ষে যে কাপড় তুলেছি তা বিক্রি করতে পারব কিনা সেটাই বিষয়।”

গোলাপশাহ মাজারের পূর্বপাশের ফুটপাতে দোকানি আল আমিন বলেন, “এই ঈদে বেচাকেনা নাই। গতবছর এই সময়ে প্রতিদিন অন্তত ১০-১২ হাজার টাকা বিক্রি হত। আজকে দুই দোকানে মিলিয়ে আটশ টাকা বিক্রি হয়েছে। লোকজন নাই, বেচাবিক্রিও নাই।”

কাপড়-চোপড়ের এবারের দামের প্রসঙ্গ তুললে আল আমিন বলেন, “মার্কেটের কাপড় আর আমাদের কাপড়ের মধ্যে তেমন পার্থক্য নাই। আমাদের এসি খরচ নাই, লাইট খরচ নাই, তাই আমরা কম দামে বিক্রি করছি।”

রাজধানীর নিউ মার্কেটের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, “কাপড়ের মান একই, আমরা এক জায়গা থেকেই কিনি। ওরা এনে ঘরে তোলে, আর আমরা রাস্তায় বসি। আমাদের দোকানে আপনি ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে ভালো কাপড় পাবেন।”

রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোকে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য ‘আশির্বাদ’ মনে করেন কুমিল্লার খায়রুল ইসলাম। রোগী দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। বাড়ি ফেরার পথে গুলিস্তান থেকে সেরে নিচ্ছিলেন ঈদের কেনাকাটা।

খায়রুল বলেন, “কম দামে কাপড় কেনা যায়, তাই এখান থেকে ছেলেমেয়েদের জন্য আর আমার জন্যও কয়েকটা কাপড় নেব। ঈদের আগে আর আসার মত সুযোগ হবে না, তাই বাড়ি থেকে আসার সময়ই ঈদের জামাকাপড় কেনার টাকা নিয়ে আসছি।

“এখান থেকে কম দামে সবার জন্য কাপড় নিয়ে যাব, বাচ্চাদের জন্য কিনেছি। আমার জন্য দেখতেছি।”